কাচাঁ করলার উপকারিতা - করলা খেলে কি গ্যাস হয়

কাঁচা করলার উপকারিতা সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানিনা। কাঁচা করলা আমাদের নিত্যদিনের খাদ্য তালিকায় থাকা একটি অসাধারণ সবজি। করলাতে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণ রয়েছে। তবে আমরা অনেকেই করলা তেতো কিংবা আমাদের শরীরে জন্য ক্ষতি বলে খাই না। তাই আমরা আজকে আলোচনা করব কাঁচা করলার উপকারিতা ও করলা খেলে কি গ্যাস হয় সে সম্পর্কে।
করলা খেতে অপছন্দ করে এমন মানুষের সংখ্যায় বেশি। তবে আজকে জানাবো কোন কোন রোগের জন্য করলা সিদ্ধ খাওয়া উপকারী, গর্ভাবস্থায় করলা খাওয়ার উপকারিতা , করলা খেলে কি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং করলার রস বেশি খাওয়ার সতর্কতার ব্যাপারে। আর এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানার জন্য সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।
পেজ সূচিপএ

কাঁচা করলার উপকারিতা

কাঁচা করলার উপকারিতা সম্পর্কে আজকে আমরা জানবো। করলা একটি তেতো সবজি। আমরা অনেকেই তেতো বলে করলা খেতে পছন্দ করি না। কিন্তু করলাকে পছন্দ করে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় স্থান দিয়েছেন এমন অনেক মানুষ আছে। তবে করলা পুষ্টিগুনে ভরপুর একটি সবজি। আপনার যদি নিয়মিত করলা খাওয়ার অভ্যাস না থাকে তবে শরীরে বিভিন্ন ধরনের রোগ বালাই বাসা বাধঁতে পারে। সেই সাথে শরীর থেকে হারিয়ে যেতে পারে প্রচুর পরিমাণে প্রয়োজনীয় সব পুষ্টি উপাদান। এই গাঢ়  সবুজ রঙের সবজিটি আপনার পছন্দ হোক আর অপছন্দ হোক এর উপকারিতা কিন্তু অনেক।

করলা আমরা বিভিন্নভাবে খেতে পারি যেমন রান্না করে, কাঁচা অবস্থায়, জুস হিসেবে অথবা রস করে। করলার মধ্যে রয়েছে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, জিংক, আয়রন ইত্যাদি প্রয়োজনীয় সব পুষ্টি উপাদান। করলা রান্না করার সময় কিংবা ভাজি করার সময় আমরা যদি করলার ভেতরে বেশি পরিমাণে তেল ব্যবহার করি তবে করলার পুষ্টিগুণ কমে যায়। তাই কাঁচা অবস্থায় করলা খাওয়ার উপকারিতা অনেকটাই বেশি এতে সঠিক পুষ্টি পাওয়া যায়। 

কাঁচা অবস্থায় করলা খাওয়ার জন্য করলাকে ছোট ছোট টুকরা করে কেটে ভেতরের প্রয়োজনীয় সব বীজ ফেলে দিয়ে বিলিন্ডারে মিশ্রিন করে জুস বানিয়ে নিতে হবে এবং একটি ছাঁকনির সাহায্যে মিশ্রিন করা জুস থেকে রসগুলো আলাদা করে নিতে হবে। এই করলার জুস আপনি সরাসরি সেবন করতে পারেন কিংবা পানির সঙ্গে মিশিয়েও খেতে পারেন। আর যদি এভাবে খেতে অসুবিধা হয় তবে লেবুর রস বা মধু যোগ করতে পারেন। এই উপাদান গুলো মিশিয়ে খেলে করলার জুসের স্বাদ অনেকটাই বেড়ে যাবে। করলার রস সবচাইতে কার্যকরী হলো সুগার নিয়ন্ত্রণে। 

করলার মধ্যে আছে পলিপেপটাইড, চ্যানেল এবং বিভিন্ন রাসায়নিক যৌগ রয়েছে। যা আমাদের শরীরের গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং সুগার অতি সহজেই শরীর থেকে কমিয়ে দেয়। আপনি যদি প্রতিদিন নিয়ম করে করলার জুস খেতে পারেন তাহলে আপনার শরীলে ইন্সুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করবে এবং সুগার হঠাৎ করে বেড়ে যেতে দেবে না। তাই যারা ডায়াবেটিসের আক্রান্ত তারা অবশ্যই সকালে কিংবা সারাদিনে একবার হলেও করলার রস কিংবা জুস খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। তবে আপনি যদি শুধু করলার রসের উপরে নির্ভর করে ডায়াবেটিস কমাতে চান তবে অবশ্যই ভুল করছেন। 

কারণ এ ধারণাটি একেবারেই সঠিক নয় যে শুধু করলার রস খেলে ডায়াবেটিস কমে যাবে। করলার রসের পাশাপাশি নিয়মকানুন মেনে পরিমান মত খাবার গ্রহণ করতে হবে এবং নিয়মিত হাঁটা চলাফেরা করতে হবে তবে করলার জুস খেয়ে উপকার পাবেন। তবে অনেক সময় অতিরিক্ত পরিমাণে করলার জুস খাওয়ার ফলে ডায়াবেটিস লেভেল একেবারেই কমে যেতে পারে। নিজে নিজে করলার জুস কিংবা রস খাওয়া শুরু করলে অনেক সময় সমস্যা হতে পারে। তাই অবশ্যই একজন ভালো চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে করলার রস সেবন করা উচিত।

করলা খেলে কি গ্যাস হয়

কাঁচা করলার উপকারিতা সম্পর্কে জানলাম। এখন আমরা জানবো করলা খেলে কি গ্যাস হয় সে সম্পর্কে। করলার মধ্যে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা আমাদের শরীরে গ্যাস বাড়ায় না বরং গ্যাস কমাতে সাহায্য করে। গ্যাসের কারণে কারণে বডির ভেতরের যে ক্ষতগুলো হয়েছে সেগুলো আস্তে আস্তে নিরাময় করে। করলার মধ্যে রয়েছে এন্টি ইনফ্লেমেটরি। যারা আলসারের সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য করলা অনেক উপকারী হতে পারে। 

এছাড়া করলার মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। করলার রস অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ যা গ্যাস্ট্রিকের বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং গ্যাস্টিকের সমস্যা দূর করে। করলা আমাদের শরীরে হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে। তাই করলা খেলে গ্যাস হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই বরং করলা একটি তেতো খাবার এতে আমাদের গ্যাস অনেকটাই কমে আসে। 

করলা খেলে কি গ্যাস হয় এমন কোন যথাযথ প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি। তবে একেক জনের শরীর এক এক রকম। তাই অনেকের ক্ষেত্রে করলা খেলে গ্যাস হতে পারে। যাদের করলা খেলে গ্যাস হয় তারা করলা খাওয়া থেকে বিরত থাকতে পারেন।

গর্ভাবস্থায় করলা খাওয়ার উপকারিতা

গর্ভাবস্থায় করলা খাওয়ার উপকারিতা ও করলার পুষ্টিগুণ সম্পর্কে অনেক গবেষণা হয়েছে। একজন নারীর জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ সময় হলো গর্ভাবস্থায় এ সময় তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার ব্যাপারে বিশেষ নজর কিংবা সতর্কতার দেওয়া হয়। গর্ভাবস্থায় মায়ের কোণ খাবারে পুষ্টি বেশি এবং শিশুর সুস্থ বৃদ্ধি বিকাশিত হবে সেই দিকে খেয়াল রাখতে হয়। করলা একটি তেতো খাবার হলেও করলা পুষ্টিগুণে ভরপুর। তাই নিয়মিত করলা খেলে গর্ভাবস্থায় উপকার পাওয়া যায়।

রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণের কাজ করে
গর্ভকালীন সময় যাদের ডায়াবেটিসের সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিত খাদ্য তালিকায় করলা খেতে পারেন এতে রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

হজমে সাহায্য করে
গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়ের সবচেয়ে বড় সমস্যা হল খাবার ঠিকমতো হজম হয় না। আর এই করলার মধ্যে ফাইবার থাকার কারণে অতি দ্রুত আপনার অন্যান্য খাবার হজম করতে সাহায্য করে। এছাড়া পেট ফাঁপা, বদ হজম কিংবা কোষ্ঠকাঠিন্যের মত সমস্যাও কমায়।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
করলার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন সি এই দুটি উপাদান থাকার কারণে নিয়মিত করলা খেলে গর্ভাবস্থায় নানান রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং আপনার স্বাস্থ্য সুরক্ষিত রাখে।

গর্ভাবস্থায় ত্বকের যত্ন
গর্ভাবস্থায় আপনার ত্বকের প্রতি ও বিশেষ নজর দেওয়া উচিত। করলার মধ্যে রয়েছে ভিটামিন সি আর এ ভিটামিন সি আপনার গর্ভাবস্থায় ত্বকের জন্য অপরিহার্য।

জন্মগত ত্রুটির ঝুঁকি কমায়
করলা একটি ফলিক এসিড সমৃদ্ধ সবজি যা গর্ভাবস্থায় গর্ভের শিশুর ঠিকঠাক বেড়ে ওঠা, সুস্থ বৃদ্ধি ও মস্তিষ্কের বিকাশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়া নিয়মিত করলা খেলে শিশুর জন্মগত ত্রুটির অনেক ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

তবে গর্ভাবস্থায় অবশ্যই কাঁচা করলার রস কিংবা জুস খাবেন না। এতে আপনার সমস্যা হতে পারে। পেট ব্যথা হতে পারে, বমি বমি ভাব হতে পারে, পেট ফুলে যেতে পারে কিংবা ডায়রিয়া হতে পারে। তাই রান্না করে কিংবা ভাজি করে করলা খেতে পারেন এতে কোন সমস্যা হবে না।

করলা সিদ্ধ খাওয়ার উপকারিতা

করলা সিদ্ধ করে খেলে আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে। করলার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি আর এ। ভিটামিন সি আমাদের শরীরের বিভিন্ন রোগ সংক্রমণ এবং রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করে থাকে। আপনি যদি প্রতিদিন করলা সিদ্ধ পানি খেতে পারেন তবে এসব রোগ থেকে মুক্তি পাবেন। এছাড়া করলার মধ্যে রয়েছে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বিশেষ করে আমাদের কিডনির সমস্যায় করলা সিদ্ধ খাওয়া খুব উপকারী। 

প্রতিদিন নিয়ম করে আপনি যদি করলা সিদ্ধ পানি খান তবে আপনার কিডনির মধ্যে জমে থাকা পাথরগুলি প্রাকৃতিকভাবে আস্তে আস্তে নষ্ট হতে শুরু করে। যারা কৃমির সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য করলা সিদ্ধ পানি খাওয়া অত্যন্ত জরুরি। করলা সিদ্ধ করে প্রতিদিন যদি আপনি সেই পানি পান করেন তবে কৃমি মত সমস্যাও দূর হবে।

সচার আচার জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর

১. প্রতিদিন করলা খেলে কি হয় ?
এন্টি ইনফিল্মেটরি ও এন্টি অক্সিডেন্ট উপাদান রয়েছে কলার মধ্যে। আপনি যদি প্রতিদিন নিয়ম করে করলা খান তবে রক্তে শর্করার মাত্রা কমে, চুলের উজ্জ্বলতা বাড়ায় এবং অনেকদিনের চর্মরোগ সারিয়ে তুলে খুব সহজে। তাছাড়া করলার রস প্রতিদিন খেলে আপনার ওজন কমবে খুব তাড়াতাড়ি এবং শরীরে অতিরিক্ত চর্বি জমবে না।

২. করলার রস কি কিডনির জন্য ভালো ?
করলার রস খাওয়া কিডনির জন্য ভালো। তাছাড়া আপনার কিডনিতে যদি পাথর থাকে তবে নিয়মিত করলা খেলে কিডনির পাথর ভেঙে যায়। তবে অনেকেই মনে করেন করলা খেলে কিডনি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। করলার রস কিডনির জন্য ক্ষতিকার নয় কিন্তু আপনার যদি মনে হয় করলার রস খেলে আপনার কিডনির সমস্যা হতে পারে তবে আপনি করলা অন্যভাবে খেতে পারেন যেমন রান্না করে কিংবা ভাজি করে এতে ও ভালো উপকার পাবেন।

৩. রাতে করলা খেলে কি হয় ?
যাদের হজম প্রক্রিয়া দুর্বল তাদের রাতে করলা না খাওয়াই ভালো এতে বদহজম বা গ্যাসের সমস্যা হতে পারে। কারণ করলা একটি শক্ত খাবার। তাই এটি হজম করা বেশ কঠিন।

৪. করলার সাথে কি খাওয়া উচিত নয় ?
আপনি যদি করলার রস করলার জুস কিংবা করলার তৈরি অন্য কোন সবজি খান তবে অবশ্যই তার সাথে দই, বাটার কিংবা মিল্ক খাবেন না। কারণ দই, বাটার এবং মিল্কের মধ্যে রয়েছে ল্যাকটিক এ্যা।সিড আর এই ল্যাকটিক অ্যাসিড খাওয়ার ফলে করলার সাথে মিথস্ক্রিয়া তৈরি করে ত্বকে ফুসকুড়ি, চুলকানি কিংবা এলার্জির মত সমস্যা হতে পারে। তাই করলা খাওয়ার পরে দই, বাটার, মিল্ক কখনোই খাবেন না।

৫. করলার জুস খাওয়ার সময় ?
করলার জুস খাওয়ার নির্দিষ্ট সময় হল সকাল বেলা খালি পেটে। এতে ভালো উপকার পাওয়া যায়। বিশেষ করে যারা ডায়াবেটিসের রোগী রয়েছেন তারা অবশ্যই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য সকালে খালি পেটে পানির সাথে মিশিয়ে করলার জুস খেতে পারেন।

করলা খাওয়ার উপকারিতা ও নিয়ম

করলা খাওয়ার উপকারিতা ও নিয়ম সম্পর্কে আপনার যদি জানা না থাকে তাহলে আসুন করলার উপকারিতা ও কিভাবে খেলে আপনার স্বাস্থ্য ভালো হবে সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। করলা একটি তেতো সবজি তবে তেতো হলেও আমাদের অনেকেরই প্রিয় সবজি এটা। বিভিন্নভাবে আমরা করলা খেতে পারি যেমন গরম ভাতের সাথে, ভাজি হিসেবে, বিভিন্ন সবজির ভেতরে, করলার ভর্তা করে, কাঁচা, করলার রস ও জুস হিসেবে। 
করলার মধ্যে রয়েছে ভিটামিন সি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইবার। ভিটামিন সি আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের ত্বক ভালো রাখতে সাহায্য করে এবং ফাইবার থাকার কারণে পেট পরিষ্কার রাখে ও হজমে বাড়ানোর ক্ষেত্রে অনেক কার্যকরী। তাহলে চলুন জেনে নেই করলা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে

  • করলার ভেতরে এমন এক ধরনের উপাদান রয়েছে যা আমাদের উচ্চ রক্তচাপ ও চর্বি কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া করলার ভেতরে থাকা ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের চুল ভালো রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আপনার তারুণ্য ধরে রাখে করলার জুস।
  • করলা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং বিভিন্ন কঠিন রোগ সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে থাকে।
  • করলা শরীরের ব্যাকটেরিয়া ও কৃমির নাশক হিসেবে কাজ করে।
  • যাদের শরীরে আয়রন কম রক্তশূন্যতায় ভুগছেন তারা নিয়মিত করলা খেতে পারেন। করলা আমাদের শরীরে হিমোগ্লোবিন তৈরি করে এবং রক্ত উপাদানে সাহায্য করে।
  • যারা ডায়াবেটিসের রোগী আছেন তাদের জন্য করলার রস খুব উপকারী একটি খাদ্য। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে করলার রস খেলে রক্তে ইনসুলিনের মাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।
  • করলার ভেতরে ফাইবার থাকার কারণে আপনার হজম শক্তির গতি বৃদ্ধি পায় এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের ও পরিপাকতন্ত্রের দুর্বলতার মতো কঠিন সমস্যা থেকে ও মুক্তি দেয়।
  • এছাড়া আপনি যদি পানির সঙ্গে করলার রস ও মধু মিশিয়ে সকালে খেতে পারেন তাহলে বিভিন্ন ভয়াবহ রোগ যেমন এজমা, শ্বাসকষ্ট ও ব্রঙ্কাইটিস গলার বিভিন্ন সমস্যা উপকার পাওয়া যায়।

খালি পেটে করলার জুস খাওয়ার উপকারিতা

খালি পেটে করলার জুস খেলে আপনার পেটের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সমাধান পেতে পারেন যেমন খালি পেটে করলা জুস খেলে পেট পরিষ্কার হয় হজম শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং কল্যাণ মধ্যে থাকা ফাইবার আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে করলা। তাছাড়া করলার জুসের মধ্যে রয়েছে বিটা ক্যারোটিন ও ভিটামিন এ। যা আমাদের চোখের দৃষ্টি শক্তি ভালো রাখতে সহায়তা করে। খালি পেটে করলার জুস আপনি যদি খেতে না পারেন তবে পানির সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন এটাও ভালো উপকার পাবেন।

করলার রস খেলে কি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে

করলার স্বাদ তেতো হলেও করলাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণ। করলার মধ্যে রয়েছে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, জিংঙ্ক সহ বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ও খনিজ উপাদান। যাদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে না কিংবা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার কথা ভাবছেন তারা সপ্তাহে তিন দিন অবশ্যই করলা খাওয়ার অভ্যাস করুন। ডায়াবেটিসের ঔষধ হিসেবে উপমহাদেশ গুলোতে করলার রস দীর্ঘদিন ধরে পান করে আসছে। এক কথায় বলতে গেলে করলার রস কিংবা জুস ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে জাদুর মত কাজ করে। 
করলার মধ্যে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা আপনার শরীরে ইনসুলিনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। করলার মধ্যে রয়েছে পলি পেপটাইড এবং চ্যানেল নামের যৌগ উপাদান। আর এই উপাদান গুলোর জন্য আপনার রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। যারা অনেকদিন থেকে টাইপ ২ ডায়াবেটিসে ভুগছেন তাদের জন্য করলার রসের উপকারিতা অনেক। তবে যারা টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিসে ভুগছেন তাদের জন্য করলার রসের উপকারিতাও কোন অংশে কম নয়।

করলা খাওয়ার সতর্কতা

আপনি কি ভাবছেন করলার রস উপকারী বলে যত ইচ্ছা তত খাবেন এতে কিন্তু আপনার শরীরে বিপরীত কিছু হতে পারে। করলার রস উপকারী হলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে করলে খাওয়ার ব্যাপারে কিছুটা সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।

  • মাঝারি সাইজের একটি করলা রস যতটুক হয় ততটুক খাওয়া উচিত দৈনিক প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত পরিমাণে করলা রস খাওয়া উচিত না।
  • অনেক সময় গর্ভাবস্থায় করলার জুস কিংবা রস খাবার ব্যাপারে ক্ষতি হতে পারে তাই এক্ষেত্রে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খেতে হবে। তবে হ্যাঁ গর্ভাবস্থায় করলা ভাজি কিংবা রান্না করা করলা খেলে তেমন কোন ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
  • শিশুরা করলা অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে অনেক সময় পেটে ব্যথা, বমি কিংবা ডায়রিয়া লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
  • অতিরিক্ত করলার রস খেলে আপনার লিভারের সমস্যা এমনকি ডায়রিয়ার মত সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
  • যারা প্রতিদিন ডায়াবেটিসের ওষুধ সেবন করেন তারা করলা কিংবা জুস খাওয়ার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে নেবেন। কারণ এতে আপনার ডায়াবেটিস লেভেল একেবারেই কমে যেতে পারে।
  • করলা প্রতিদিন না খেয়ে সপ্তাহে ৩দিন খাওয়া ভালো। সপ্তাহে তিন দিন খেলেই আপনি ভালো উপকার পাবেন। প্রতিদিন করলার রস খেলে আপনার শরীর এত তেতো খাবার হজম করার ক্ষমতা নাও রাখতে পারে।

লেখকের মন্তব্য - কাঁচা করলার উপকারিতা

আশা করি কাঁচা করলার উপকারিতা সম্পর্কে আপনার মনে যত প্রশ্ন ছিল সেগুলোর বিস্তারিত জানতে পেরেছেন এবং কাঁচা করলা খাওয়ার উপকারিতা, করলা সিদ্ধ খাওয়ার উপকারিতা, করলা খাওয়ার উপকারিতা এবং করলা বেশি খাওয়ার ব্যাপারে যে সব সতর্কতা গুলো অবলম্বন করতে হবে তা অবশ্যই জানতে পেরেছেন। 

যেহেতু করলা একটি তেতো খাদ্য এবং প্রচুর পরিমাণে আমাদের শরীরের জন্য উপকার করে তাই অবশ্যই কষ্ট করে হলেও প্রতিদিন করলে খাওয়ার অভ্যাস করুন। আমি আবার বলছি বিশেষ করে যারা ডায়াবেটিসের রোগী রয়েছেন তারা অবশ্যই করলার জুস কিংবা সকালে করলার রস খাওয়ার শুরু করুন ৭ দিনেই অবাক করা ফল পাবেন। করলা বেশি খাওয়ার বিষয়ে যে কথাগুলো বলা হয়েছে সেগুলো মেনে চলার চেষ্টা করুন।

প্রিয় পাঠক আপনার যদি আমার এই কাঁচা করলার উপকারিতা সম্পর্কিত আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকে তবে অবশ্যই আপনার আত্মীয়-স্বজনদের সাথে শেয়ার করুন যাতে তারাও এই স্বাস্থ্য বিষয়ক টিপস গুলো মেনে চলতে পারে। এখন আমার যাওয়ার সময় হয়ে গেছে তবে হ্যাঁ যাওয়ার আগে একটি কথা এতক্ষণ ধৈর্য সহকারে আমাদের আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন এবং আমাদের ওয়েবসাইটটি প্রতিদিন ভিজিট করতে ভুলবেন না কারণ স্বাস্থ্য বিষয়ক টিপসগুলো আমরা প্রতিদিন আমাদের ওয়েবসাইটেই প্রকাশ করে থাকি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বিডি অনলাইন আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url