কাঁচা পেঁপের উপকারিতা ও অপকারিতা - পেঁপে পাতার রস বানানোর নিয়ম

কাঁচা পেঁপের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনে তারপরে পেঁপে খাবেন। পেঁপে আমাদের কাছে অতি পরিচিত একটি পুষ্টিগুণ সম্পূর্ণ সবজি কিন্তু পেঁপে পাতার রস থেকে যে উপকার পাওয়া যায় এটা আমরা অনেকেই জানি না। তাই আজকে আমরা কাঁচা পেঁপের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে এবং পেপে পাতা রস বানানোর নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানব।
আপনি যদি নিয়মিত পেঁপে খেয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনাকে কাঁচা পেঁপের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে হবে। তাছাড়া কাঁচা পেঁপে দিয়ে রূপচর্চা কিভাবে করা যায়, পাকা পেঁপের বীজ খাওয়ার নিয়ম এবং গর্ভাবস্থায় কাঁচা পেঁপে খেলে কি হয় সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হবে। আর আজকের এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে আমরা পেঁপে সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানবো।
পেজ সূচিপএ

কাঁচা পেঁপের উপকারিতা ও অপকারিতা

কাঁচা পেঁপের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানার আগে পেঁপের মধ্যেই কি কি পুষ্টিগুণ রয়েছে সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া উচিত। কাঁচা পেঁপের মধ্যে এমন কিছু পুষ্টিগুণ রয়েছে যা আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে এবং শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে দারুন ভাবে কাজ করে। এছাড়া বিশেষজ্ঞরা পেঁপেকে সুপার ফুট হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। আসুন তাহলে জেনে নেই কাঁচা পেঁপের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
পেঁপের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আর আপনি যদি প্রতিদিন নিয়ম করে পেঁপে খেতে পারেন তাহলে আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া পেপের ফুল ও মূল কিডনি রোগ ও জন্ডিস মত ভয়াবহ রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করে।

আর্থাইটিস রোগ
পেঁপের মধ্যে প্যাপাইন নামের একধরনের এনজাইম থাকায় অস্টিও আর্থাইটিস ও রিউম্যাট রোগ দ্রুত সারিয়ে তোলে।

নারীদের মাসিক সমস্যা
যেসব নারীদের অনিয়মিত মাসিক হয় তাদের জন্য পেঁপের জুস খুব উপকারী। সে ক্ষেত্রে পেঁপে কাঁচা কিংবা পাকাও খেতে পারে।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
পেঁপেতে থাকা ফাইবার মলত্যাগের সময় কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর করে, দ্রুত খাবার হজম করে এবং স্বাভাবিকভাবে মলত্যাগ করতে সাহায্য করে।

দৃষ্টিশক্তিহীনতা দূর করে
পেঁপেতে রয়েছে বিটা ক্যারোটিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট নামক ভিটামিন যা আমাদের দৃষ্টি শক্তি ভালো রাখতে এবং দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।

শরীরের ব্যথা কমায়
পেপার মধ্যে রয়েছে কাইমো পেপিন ও প্যাপিন এনজাইম যা আমাদের শরীরের বিভিন্ন জায়গার ব্যাথা সারাতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।

ত্বকের যত্নে পেঁপে
বয়সন্ধিকালে আমাদের মুখ মন্ডলে ব্রনের সমস্যা দেখা দেয় আপনি যদি নিয়ম করে প্রতিদিন পেঁপে খেয়ে থাকেন তাহলে আপনার ত্বক হবে ব্রনমুক্ত ও ত্বক পরিষ্কার হবে। এছাড়া পেঁপে দিয়ে বিভিন্ন ফেসপ্যাক ঘরোয়া উপায়ে তৈরি করে আপনি আপনার ত্বকে ব্যবহার করতে পারেন। এতে আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়বে ও ত্বকের ভেতরে মরে যাওয়া কোষ গুলো সহজেই সতেজ হয়ে উঠবে।

পেঁপের অপকারিতা

পেঁপে খাওয়ার যেমন উপকার রয়েছে তেমন পেঁপে খাওয়ার বিষয়ে কিছুটা সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত আসুন তাহলে জেনে নেই পেঁপে খাওয়ার ব্যাপারে এবং কোন সময় পেঁপে খাওয়া যাবেনা সে ব্যাপারে কিছু সর্তকতা।

  • আপনি যদি প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত পেঁপে খান তবে আপনার শরীরে ক্ষতি হতে পারে। বিশেষ করে যারা গর্ভবতী মা আছেন তারা গর্ভাবস্থায় পেঁপে খাবেন না। গর্ভবতী মায়েরা পেঁপে খেলে বাচ্চা গর্ভপাতের আশঙ্কা দেখা দিতে পারে।
  • অনেকের ক্ষেত্রে কাঁচা পেঁপের রস বিষাক্ত ক্ষতিকর হতে পারে কিংবা কাঁচা পেঁপের নির্যাস শরীরে দিলে চুলকানি সৃষ্টি হতে পারে। অনেক সময় অতিরিক্ত পরিমাণে কাঁচা পেঁপে খেলে বদহজম কিংবা পেটে ব্যথা হতে পারে।
  • যাদের শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। পেঁপেতে রয়েছে এনজাইম নামক একটি উপাদান। তাই পেঁপে অতিরিক্ত খেলে শ্বাসকষ্ট জনিত অসুস্থতা যেমন হাঁপানির মত সমস্যা বাড়তে পারে।

পেঁপে পাতার রস বানানোর নিয়ম

পেঁপে পাতার রস বানানোর নিয়ম জানা থাকলে পেঁপের উপকারিতার সাথে আপনি পেঁপে পাতার রস থেকেও উপকার পেতে পারেন। পেঁপে একটি পুষ্টিকর সম্পন্ন খাবার। পেঁপে পাতা ডেঙ্গু প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। পেঁপে পাতার রসে রয়েছে কার্পাইন। 
পেঁপে পাতার রস ডেঙ্গু রোগীদের শরীরে প্লেটলেটের মাএা বৃদ্ধি করো তাই চিকিৎসকরা ডেঙ্গু হলে পেপে পাতা রস খাবার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। রক্তে প্লেটলেট মাত্রা বৃদ্ধি করে। পেঁপে পাতার রস নিয়মিত খেলে আপনার হজমের শক্তি বৃদ্ধি হবে, আপনার শরীর দ্রুত প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করতে পারে এবং শরীরের ভেতরের সব ধরনের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দ্রুত বৃদ্ধি পায়। আসুন তাহলে জেনে নেই পেঁপে পাতার রস বানানোর নিয়ম সম্পর্কে।

  • পেঁপে পাতার রস বানানোর জন্য প্রথমে পেঁপে পাতা গুলো ভালো করে ধুয়ে কুচি কুচি করে কেটে নিতে হবে।
  • তারপর বিলিন্ডারে ভালো করে মিশ্রিন করে নিন। কিংবা পাটায় ভালো করে থেঁতো করে নিন।
  • থেতো হয়ে গেলে এক চামচ মধুর সাথে পেঁপে পাতার রস মিশিয়ে পান করুন। এছাড়া স্বাদ বদলের জন্য লবণ কিংবা চিনি ব্যবহার করতে পারেন।

কাঁচা পেঁপে দিয়ে রূপচর্চা

কাঁচা পেঁপে দিয়ে রূপচর্চা এই কথাটা শুনে হয়তো আপনি অনেক অবাক হচ্ছেন। কিন্তু হ্যাঁ কাঁচা পেঁপে দিয়েও রূপচর্চা করা যায়। কাঁচা পেপের মধ্যে রয়েছে রং ফর্সাকারী উপাদান এবং প্রাকৃতিক এনজাইম যা আপনার ত্বকের রোদে পোড়া ভাব দূর করে এবং ত্বকে আরো উজ্জ্বল করে তোলে আসুন তাহলে জেনে নেই কাঁচা পেঁপে দিয়ে কিভাবে রূপচর্চা করবেন।

  • প্রথমে কাঁচা পেঁপে ঠান্ডা পানিতে কিছুক্ষণ ডুবিয়ে রাখুন তারপর পেঁপে খোসা ছাড়িয়ে পাতলা করে কেটে নিন এবং ওই পাতলা অংশ আপনার ত্বকে মালিশ করুন ৫ মিনিট এবং পাঁচ মিনিট পরে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন এতে আপনার মুখের কালো দাগ দূর হবে।
  • কাঁচা পেঁপের খোসা ছাড়িয়ে বিলিন্ডারে একটি পেস্ট বানিয়ে নিন এবং সেই পেস্ট ও লেবুর রস একসাথে মিশ্রন করে মুখে ১৫ মিনিট লাগিয়ে রাখুন তারপর ভালো করে ধুয়ে ফেলুন অথবা শুকানোর আগ পর্যন্ত অপেক্ষা করুন তারপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। পাঁচ মিনিট পর অ্যালোভেরা জেল মুখে লাগিয়ে আবার কিছুক্ষণ মালিশ করুন এবং তারপরে ধুয়ে ফেলুন এই ফেসপ্যাকটি আপনি সপ্তাহে চার দিন ব্যবহার করতে পারেন এতে আপনার মুখ হবে উজ্জ্বল, ব্রনের দাগ দূর হবে এবং চোখে নিজের কালো দাগ দূর হবে।
  • কাঁচা পেঁপে ভালো করে ধুয়ে খোসা ছাড়িয়ে কুচি কুচি করে কেটে বিলিন্ডারে পেস্ট বানিয়ে নিন। সে পেস্টের সঙ্গে লেবুর রস, মধু ও অ্যালোভেরা জেল ভালো করে মিশিয়ে নিন এবং এই ফেস প্যাকটি সপ্তাহে দুইদিন ব্যবহার করুন এতে আপনার ত্বকের রুক্ষতাভাব চলে যাবে এবং ত্বক নরম হবে।

সচার আচার জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর

১. পেপে পাতার রস কখন খেতে হয় ?
পেঁপে পাতার রস শরীরের ফোলা কমাতে এবং শরীরকে বেশি শক্তিশালী করতে সাহায্য করে তাই প্রতিদিন সকালে খালি পেটে আপনি পেঁপে পাতার রস খেতে পারেন তবে অল্প পরিমাণে খেতে হবে।

২. পেঁপে পাতার রস মাথায় দিলে কি হয় ?
পেপে পাতার রস, নারিকেল তেল ও লেবু মিশিয়ে একসাথে চুলে দিলে চুল অনেক লম্বা হয় এবং চুলার খুশকি ও চুলের ত্বকে ইনফেকশন থাকলে তা দূর হয়।

কাঁচা পেঁপে পাকানোর উপায়

কাঁচা পেঁপে পাকানোর উপায় সম্পর্কে আপনি যদি জেনে থাকেন তাহলে খুব সহজেই ঘরোয়া পদ্ধতিতে কাঁচা পেঁপে পাকিয়ে খেতে পারবেন। তাছাড়া বাজারে এখন যে পেঁপে গুলো বিক্রি হয় সেগুলো বেশিরভাগই ফরমালিন দেওয়া। আর ফরমালিন দেওয়া খাবার আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য মোটেও ভালো না। তাই কাঁচা পেঁপে যদি ফরমালিন বাদেই পাকানো যায় তাহলে আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য বেশি উপকার হয়। তাহলে চলুন কাঁচা পেঁপে বানানোর উপায় সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

  • প্রথমে একটি বড় গামলা নিতে হবে।
  • তারপর গামলার ভিতর একটি বস্তা দিতে হবে যেন উপরে একটা তাপ সৃষ্টি করে।
  • বস্তার উপর একটি মোটা কাপড় দিয়ে দিতে হবে যেন পেঁপে গুলোর উপরে কোন দাগ না পড়ে।
  • তারপর কাপড়ের উপরে পেঁপে গুলো রেখে দিতে হবে এবং খেয়াল রাখতে হবে পেঁপের বৈঠা গুলো যেন উপর দিকে থাকে।
  • তারপর নিজের কাপড় দিয়ে ভালো করে বেঁধে দিতে হবে।
  • এবং পেঁপের গামলাটি একটি গরম স্থানে রাখতে হবে।

পাকা পেঁপের বীজ খাওয়ার নিয়ম

পাকা পেঁপের বীজ খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানা অত্যন্ত জরুরী কারণ কাঁচা কিংবা পাকা আপনি যেভাবে পেঁপে খান না কেন যেমন উপকারী তেমন পেঁপের বীজ সমান পরিমাণে উপকারী। পেঁপের মধ্যে থাকা বিভিন্ন উপাদান যেমন আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধ করে থাকে তেমন পেঁপের বীজ আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের রোগের সমাধান দিয়ে থাকে। 

আমরা পেঁপে খাওয়ার সময় সাধারণভাবে পেপের বীজ ফেলে দেয়। কিন্তু পেঁপের বীজের উপকারিতা জানলে আর ফেলবেন না। পেঁপের বীজের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন ও ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম এর মত গুরুত্বপূর্ণ সব মিনারেল। পেঁপে ফাইবারের অন্যতম একটি উৎস। পেঁপে আমাদের হজম শক্তি বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পেঁপের বীজ আপনি খুব সহজেই ঘরোয়া পদ্ধতিতে তৈরি করে নিতে পারেন। আসুন তাহলে জেনে নেই পাকা পেঁপের বিষ খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে।

  • পেঁপের বীজের সাথে মধু মিশিয়ে খেলে আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়।
  • এছাড়া আপনি পেঁপের বীজের গুঁড়ো তৈরি করেও খেতে পারেন। পেঁপের বীজের গুঁড়ো তৈরি করার জন্য প্রথমে পেঁপের বীজগুলোকে ভালোভাবে শুকিয়ে নিতে হবে এবং বিলিন্ডারে মিশ্রিন করে নিতে হবে। আপনার যদি পেঁপের বীজের গুড়ো খেতে তেতো স্বাদ লাগে তবে আপনি এর সাথে চিনে মিশিয়ে খেতে পারেন।

সকালে খালি পেটে কাঁচা পেঁপে খাওয়ার উপকারিতা

সকালে খালি পেটে কাঁচা পেঁপে খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আমাদের অবশ্যই ভালো করে জানা উচিত। পেপে এমনিতেই একটি স্বাস্থ্যকর ফল আর খালি পেটে যদি আপনি পেঁপে খেতে পারেন তাহলে এর পুষ্টিগুণ আরো অনেক বেশি বেড়ে যায়। এছাড়া পুষ্টিবিদরা মনে করেন সকালে খালি পেটে পেঁপে খেলে পুষ্টিগুণ আরো অনেক বেড়ে যায়। 

সকালের খাদ্য তালিকায় কি কি খাবার খাচ্ছেন তার ওপর নির্ভর করে সারাদিন আপনার শরীরের অবস্থা কেমন যাবে। শরীরকে সুস্থ রাখতে আমরা বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিকর খাবার খেয়ে থাকি। পুষ্টিবিদরা বলেন খালি পেটে পেঁপে খেলে দ্বিগুণ উপকার মিলতে পারে। আসুন তাহলে জেনে নেই খালি পেটে পেঁপে খেলে কি কি সুফল পেতে পারেন।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
আধুনিক জীবনযাত্রার কারণে আমরা অনেকেই পেটের সমস্যায় ভুগি। হজমের সমস্যা থেকে শুরু করে কোষ্ঠকাঠিন্যর মত কঠিন সমস্যা এমনকি শারীরিক না অন্য কোনো সমস্যাতেও জর্জরিত আমরা। আর এ কোষ্ঠকাঠিন্যর থেকেই আরো অনেক ভয়াবহ অসুখের জন্ম নিতে পারে তাই আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্য মত কঠিন রোগ থেকে আরোগ্য লাভ করা উচিত। পেঁপের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। আর পেঁপের মধ্যে ফাইবার থাকার কারণে আপনার খাদ্য খুব দ্রুত হজম হয় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

ওজন কমাতে
ওজন কমাতে পেঁপে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। আপনি যদি রোজ সকালে খালি পেটে পেঁপে খেতে পারেন তবে আপনার ওজন খুব দ্রুত কমে আসবে। পেঁপেতে ক্যালরির পরিমাণ কম রয়েছে। পেঁপেতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার আর ফাইবারে থাকার কারণে আপনার পেট অনেকক্ষণ পর্যন্ত ভরা থাকে বারবার খাবার খাওয়ার প্রয়োজন হয় না। আর তাতে আপনার ওজন অনেকটা কমে আসবে। তাছাড়া পেঁপে আমাদের শরীর থেকে যাবতীয় বর্জ্য পদার্থ বাইরে বের করে দিতে সাহায্য করে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি
পেঁপের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন সি এবং আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ উপকারী উপাদান। আর এই উপাদান গুলি প্রতিনিয়ত আমাদের শরীরের বিভিন্ন রোগের সাথে লড়াই করে। আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া পেঁপের মধ্যে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণের ঝুঁকি কমায়। লিভারের সমস্যা, কিডনির সমস্যা এমনকি ক্যান্সারের মতো ভয়াবহ রোগ থেকেও আপনি উপকার পেতে পারেন পেঁপে খাওয়ার মাধ্যমে।

পেঁপে সিদ্ধ উপকারিতা

পেঁপে সিদ্ধ উপকারিতা সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই জানা নেই। পেঁপে আমরা বিভিন্নভাবে রান্না করে খেতে পারি কিংবা কাঁচা অবস্থাতেও খেতে পারি। তাছাড়া পেপের জুস বানিয়েও খেতে পারি। কিন্তু পেঁপে শুধু সিদ্ধ করে খাওয়ার উপকারিতাও রয়েছে অনেক। পেঁপেতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার আর আপনি যদি পেঁপে সিদ্ধ করেন তাহলে পেঁপের মধ্যে লাইকোপিন উপাদান পাওয়া যায় আর এই লাইকোপিন উপাদান ক্যান্সারের মতো ভয়াবহ রোগ ছাড়াও শরীরের জন্য খুব উপকারী। 

নিয়মিত খেলে আপনার পেটের বিভিন্ন সমস্যা দূর হবে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হবে, গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর হবে এছাড়া আপনি যদি নিয়মিত পেঁপে সিদ্ধ পানি খেতে পারেন তাহলে স্তন, কোলন ও প্রস্টেট ক্যান্সার থেকে ঝুঁকি কমাতে পারবেন। তাই পেঁপে থেকে প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণ পেতে প্রতিদিন সিদ্ধ করা পেঁপে এবং পেঁপে সিদ্ধ পানি খায়।

গর্ভাবস্থায় কাঁচা পেঁপে খেলে কি হয়

গর্ভাবস্থায় কাঁচা পেঁপে খেলে কি হয় সে সম্পর্কে আপনার গর্ভধারণের প্রথম মাসেই জেনে নেওয়া উচিত। তাহলে গর্ভপাতের সম্ভাবনা অনেকটাই এড়াতে পারবেন। একজন গর্ভবতী মায়ের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অবশ্যই বিশেষ খেয়াল রাখা দরকার। কারণ গর্ভাবস্থায় এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সময় যখন আপনার একটি ছোট ভুলের জন্য গর্ভপাতের সম্ভাবনা হতে পারে। 
গর্ভাবস্থায় পেঁপে খাওয়া নিয়ে অনেকেরই অনেক প্রশ্ন থাকে তবে পাকা পেঁপে গর্ভবতী মায়ের জন্য অত্যন্ত উপকারী। কিন্তু কাঁচা পেঁপে খাওয়ার ব্যাপারে কিছুটা সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে। পাকা পেঁপেতে রয়েছে বিটা ক্যারোটিন। ক্যালরি, ফাইবার ফোলেট, ভিটামিন এ, বি এবং সি। এ ছাড়া কাঁচা পেপের মধ্যে রয়েছে কাঁচা অমৃত, লেটেস্ট পেপে। 

আর লেটেস্ট একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। পাকা পেঁপের মধ্যে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা আপনার জরায়ুকে প্রসবের সময় সংকুচিত করতে দেয় না এবং ভ্রনকে দুর্বল করে দেয়। সেজন্য গর্ভাবস্থার মতো বিশেষ সময়ে কাঁচা পেঁপে না খাওয়াই ভালো।

লেখক এর মন্তব্য

পেঁপে খাওয়ার উপকারিতা অপকারিতা সহ পেঁপে দিয়ে কিভাবে রূপচর্চা করবেন এবং সিদ্ধ পেঁপে খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। যদি আপনি নিয়মিত পেঁপে খেয়ে থাকেন এবং পেঁপে খেতে পছন্দ করেন তাহলে অবশ্যই আপনাকে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ে নেওয়া উচিত। বিশেষ করে যারা গর্ভবতী নারী রয়েছেন তাদের উদ্দেশ্যে এই আর্টিকেলটি প্রকাশ করা।

আশা করি , আশা করি উপরের আলোচনা থেকে আপনি বুঝতে পেরেছেন পেঁপে একজন সুস্থ মানুষকে জন্য কতটা নিরাপদ এবং পুষ্টিকর। তাই প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় অল্প পরিমাণে পেপে রাখার চেষ্টা করুন। এতে আপনার শরীর সুস্থ থাকবে এবং শরীরের ভিতরে জমে থাকা বিভিন্ন ধরনের খারাপ টক্সিন বের করে দিতে সাহায্য করবে। 

আপনার যদি কাঁচা পেঁপের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কিত আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। আর কাঁচা পেঁপের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কিত আর্টিকেলটি পড়ার পরে আপনার যদি কোন প্রশ্ন থেকে থাকে তবে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে জানিয়ে দিবেন। আমরা সব সময় আপনাদের সেবায় নিয়োজিত। আজকে তাহলে এ পর্যন্তই আবার দেখা হবে অন্য কোন আর্টিকেলের মাধ্যমে। এতক্ষন আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বিডি অনলাইন আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url