গর্ভাবস্থায় কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা - কোয়েল পাখির ডিমে এলার্জি
গর্ভাবস্থায় কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে আপনি কি অনেক বেশি আগ্রহী। গর্ভাবস্থায় কোয়েল পাখির ডিম খেলে কি কি উপকার হবে এবং কোয়েল পাখির ডিমে কি এলার্জি আছে সে সম্পর্কে জানতে আপনি যদি আগ্রহী হয়ে থাকেন তবে অবশ্যই এই আর্টিকেলটি খুব গুরুত্ব সহকারে পড়ুন। কারণ এই আর্টিকেলের মাধ্যমে গর্ভাবস্থায় কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে।
এছাড়া আরো গুরুত্বপূর্ণ অনেক বিষয় যেমন কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা ও অপকারিতা, শিশুদের জন্য কোয়েল পাখি ডিমের উপকারিতা, কোয়েল পাখির ডিমের সঙ্গে মুরগির ডিমের তুলনা, কোয়েল পাখির বৈশিষ্ট্য ইত্যাদি আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। তাহলে চলুন আর দেরি না করে গর্ভাবস্থায় কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেই।
পেজ সূচিপএ
গর্ভাবস্থায় কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা সম্পর্কে আর্টিকেলের প্রথমে আমরা জানবো। কারণ একজন গর্ভবতী মায়ের শরীর সুস্থ রাখা সবচেয়ে আগে জরুরী। গর্ভাবস্থায় কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা রয়েছে অনেক। আপনি যদি গর্ভবতী হয়ে থাকেন তাহলে আপনার শরীরের জন্য ভিটামিন ও প্রোটিন প্রচুর পরিমাণে দরকার। আর ডিমের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন ও প্রোটিন। তাই প্রতিদিন অন্তত একটি করে গর্ভাবস্থায় আপনার ডিম খাওয়া উচিত।
আমাদের দেশে বিভিন্ন রকমের ডিম পাওয়া যায়। যেমন মুরগির ডিম, হাঁসের ডিম এবং অন্যান্য আরো অনেক পশু পাখির ডিম। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হলো কোয়েল পাখির ডিম। কোয়েল পাখির ডিম রয়েছে ভিটামিন বি১। এর পরিমাণ মুরগির ডিম থেকে প্রায় ছয় গুণ বেশি। মুরগির ডিম থেকে কোয়েল পাখির ডিমে আয়রন ও ফসফরাস থাকে প্রায় পাঁচ গুণ বেশি।
এসব আরো গুরুত্বপূর্ণ উপাদান ছাড়াও কোয়েল পাখির ডিমের মধ্যে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা গর্ভাবস্থায় গর্ভের বাচ্চার এন্টিবডি তৈরি করতে এবং গর্ভবতী মায়ের এলার্জির প্রতিক্রিয়াকে নষ্ট করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। একজন গর্ভবতী মায়ের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের ভিটামিন, মিনারেল এবং অ্যামাইনো এসিড, প্রোটিন কোয়েল পাখির ডিমের মধ্যে বিদ্যমান।
কোয়েল পাখির ডিমের মধ্যে এত সব উপাদান থাকার জন্যই কোন কোন দেশে কোয়েল পাখির ডিমকে মেডিসিন হিসেবেও ব্যবহার করা হয়ে থাকে। কোয়েল পাখির ডিম শুধু গর্ভবতী মায়ের জন্য উপকার নিয়ে আসে এমনটা নয় কোয়েল পাখির মাংস একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য খুব উপকারী। কোয়েল পাখির মাংস মানব দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকাংশে বাড়িয়ে দেয়।
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে কোয়েল পাখির মাংসে মধ্যে বিটা ক্যারোটিন ও ভিটামিন সি কমপ্লেস ছাড়াও এতে আয়রন ও ক্যালসিয়াম রয়েছে প্রচুর পরিমাণে। এছাড়া পুষ্টি বিজ্ঞানীরা বলেছেন কোয়েল পাখির মাংসের মধ্যে রয়েছে ফলিক এসিড যা একজন গর্ভবতী মায়ের শরীরে পুষ্টি সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিত করে।
একজন গর্ভবতী মায়ের শরীর ভালো রাখতে এবং গর্ভের বাচ্চার সঠিকভাবে বেড়ে উঠতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে সুতরাং গর্ভাবস্থায় কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা সম্পর্কে কোন চিন্তা না রেখে আপনি নিশ্চিন্তে কোয়েল পাখির ডিম এবং কোয়েল পাখির মাংস খেতে পারেন।
কোয়েল পাখির ডিমে কি এলার্জি আছে
কোয়েল পাখির ডিমে কি এলার্জি আছে কোয়েল পাখির ডিম খাওয়ার আগে সে সম্পর্কে জানা আমাদের অবশ্যই প্রয়োজন। সাধারণভাবে এমন অনেক খাবার রয়েছে যেগুলো খাবার পরে আপনার শরীরে এলার্জির লক্ষণ দেখা দিতে পারে যেমন চুলকানি, শরীরের বিভিন্ন জায়গা ফুলে যাওয়া, চোখ লাল হয়ে যাওয়া ইত্যাদি। তবে পুষ্টিবিদগণ মতামত দিয়েছে যে কোয়েল পাখির ডিমের কোন এলার্জি নেই বরং কোয়েল পাখির ডিম খেলে আপনার শরীরে যদি এলার্জি সমস্যা থাকে তা নিরাময় হয়।
কোয়েল পাখির ডিমে এলার্জি এটি একটি বিরল ঘটনা তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সবার শরীর এক নয়। যদি কোয়েল পাখির ডিম খাওয়ার পরে আপনার শরীরে উপরে অ্যালার্জির লক্ষণ গুলো দেখা দিয়ে থাকে তবে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে কোয়েল পাখির ডিম খাবেন। তবে গবেষণায় দেখা গেছে কোয়েল পাখির ডিমে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা আপনার শরীরে এলার্জির সমস্যা সৃষ্টি না করে আগে যদি কোন এলার্জির সমস্যা থেকে থাকে সেগুলো নিরাময় করে থাকে। তাছাড়া কোয়েল পাখির ডিমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন রয়েছে যা আমাদের ত্বক ও স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।
কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা ও অপকারিতা
কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা ও অপকারিতা সকল বয়সের লোকের স্বাস্থ্যের উপরে পরতে পারে। কোয়েল পাখির ডিম যেমন বয়স্কদের জন্য উপকার নিয়ে আসে তেমন বাচ্চাদের জন্য খুব উপকারী। কোয়েল পাখির ডিম স্মরণশক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। কোয়েল পাখির ডিম শিশুদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশ ঘটায় ও শরীর সুস্থ রাখে। চাইনিজরা কোয়েল পাখির ডিমকে অন্যান্য রোগের নিরাময় হিসেবে ব্যবহার করে থাকে। যেমন ডায়াবেটিস, টিভি, এজমা ইত্যাদি।
এছাড়া কোয়েলের ডিম খেলে আমাদের কিডনি লিভার সুস্থ থাকে। অনেক সময় পিত্তথলিতে পাথর হয়। আর এই কোয়েল পাখির ডিম পিত্তথলির পাথর গলাতে সাহায্য করে। কোয়েল পাখির ডিমের মধ্যে রয়েছে এলার্জি প্রতিরোধক উপাদান। আপনার শরীরে যদি কোন এলার্জির সমস্যা থাকে তাহলে কোয়েল পাখির ডিম খেলে উপকার পাবেন। কোয়েল পাখির ডিমের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন এ।
আর ভিটামিন এ আমাদের চোখের সমস্যা দূর করে। তাছাড়া ডিমের মধ্যে সাদা অংশে রয়েছে লাইসিন নামক অ্যামিনো অ্যাসিড। কোয়েল পাখির ডিম নবজাতকের মধ্যে পুষ্টি যোগায়। বয়সের ছাপ বৃদ্ধি পেতে দেয় না। ডিমের মধ্যে রয়েছে আয়রন যা শরীরের রক্তস্বল্পতা দূর করে এবং শক্তি যোগায়। কোয়েল পাখির ডিমে মধ্যে থাকা অ্যামিনো এসিড নতুন নতুন টিস্যু তৈরি করে এবং টিস্যুর ক্ষয় রোধ করে।
এছাড়া যাদের ভিটামিন কম রয়েছে তারা অবশ্যই তাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় কোয়েল পাখি ডিম রাখার চেষ্টা করুন। যাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে তারা অন্য ডিম না খেয়ে কোয়েল পাখির ডিম খেতে পারেন। এতে উচ্চ রক্তচাপ বাড়ার কোনো সম্ভাবনা থাকবে না এবং রক্তের প্রয়োজনীয় শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পাবে।
শিশুদের জন্য কোয়েল পাখি ডিমের উপকারিতা
শিশুদের জন্য কোয়েল পাখি ডিমের উপকারিতা ও অপুষ্টিগুণ রয়েছে অনেক। বাচ্চাদের মানসিক, শারীরিক এবং বুদ্ধিমত্তার বিকাশ ঘটাতে সাহায্য করে থাকে কোয়েল পাখির ডিম। কোয়েল পাখির ডিমের মধ্যে এমন কিছু উপাদান আছে যা শিশুদের শরীরের মধ্যে অ্যান্টিবডি তৈরি করতে সাহায্য করে। কোয়েল পাখির ডিমের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন বি১।
এর পরিমাণ একটি মুরগির ডিম থেকে ছয়গুনেরও বেশি। তাছাড়া আয়রন ও ফসফরাস পাঁচ গুণেরও বেশি এবং ভিটামিন বি ২ রয়েছে পনেরো গুণেরও বেশি। চীন দেশের লোকেরা কোয়েল পাখির ডিমকে বিভিন্ন রোগের ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করে থাকে যেমন টিবি, এজমা এবং ডায়াবেটিস।
কোয়েল পাখির ডিমের ক্ষতিকর দিক
কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আমরা উপরে আলোচনা করেছি, এখন আমরা জানবো কোয়েল পাখির ডিমের ক্ষতিকারক দিক সম্পর্কে। কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা রয়েছে অনেক যা আপনারা আগেই জেনেছেন কিন্তু কোয়েল পাখির ডিমের কিছু কিছু ক্ষতিকারক দিক ও রয়েছে যা আমাদের জেনে নেওয়া অত্যন্ত জরুরী। নিচে কোয়েল পাখির ডিমের কিছু ক্ষতিকারক দিক আলোচনা করা হলোঃ
কোলেস্টেরল বৃদ্ধি
অতিরিক্ত পরিমাণে কোয়েল পাখির ডিম খেলে শরীরে কোলেস্টেরল বৃদ্ধি পেতে পারে। সাধারণভাবে ১৮৪ গ্রাম কোলেস্টেরল আছে ১০০ গ্রাম কোয়েল পাখির ডিমে। এজন্য যাদের কোলেস্টেরল বেশি তারা অবশ্যই প্রয়োজনমতো কোয়েল পাখির ডিম খাবেন। অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়ার কোন দরকার নেই। যাদের শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি তারা সারাদিনে কোয়েল পাখির ডিম ২/৩ টি খেতে পারেন। এতে কোলেস্টেরল বাড়ার কোন সম্ভাবনা নেই। তবে এই কথা মাথায় রাখতে হবে যে ডিমে উপকারী কোলেস্টরল থাকে।
ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের সমস্যা
যারা ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের সমস্যায় ভুগছেন কিংবা এগুলো রোগের মাত্রা অনেক বেশি তারা অবশ্যই কোয়েল পাখির ডিম খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
হজমের সমস্যা
অতিরিক্ত পরিমাণে কোয়েল পাখির ডিম খাওয়ার ফলে আপনার হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। কোয়েল পাখির ডিমের যেহেতু কোলেস্টেরল বেশি থাকে এর কারণে পেট ফাঁপা, বমি বমি ভাব কিংবা ডিম খেলে হজম হতে অনেক সমস্যা হতে পারে। এছাড়া ডিমে প্রোটিন থাকার কারণে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য বেড়ে যেতে পারে তাই প্রতিদিন নিয়ম করে ডিম খান।
উচ্চ রক্তচাপ
যাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে তারা অবশ্যই কোয়েল পাখির ডিম অতিরিক্ত পরিমাণে খাবেন না। এছাড়া কোয়েল পাখির ডিম অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে আপনার ত্বকের সমস্যা, চুলের সমস্যা এমনকি শরীলে বিভিন্ন ধরনের অস্বস্তিও হতে পারে।
আসলেই প্রয়োজনের তুলনায় কোন খাবারই বেশি খাওয়া উচিত না সেটা ডিম হোক কিংবা অন্য কোন খাবার আপনি যদি নিয়ম করে প্রতিদিন কোয়েল পাখির ডিম খান এবং পরিমাণ মতো খেতে পারেন তবে অবশ্যই কোয়েল পাখির ডিম ও মাংস থেকে ক্ষতি হবার কোন সম্ভাবনা নেই।
কোয়েল পাখির ডিমের সঙ্গে মুরগির ডিমের তুলনা
কোয়েল পাখির ডিমের সঙ্গে মুরগির ডিমের তুলনা করা একেবারেই বোকামির কাজ কারণ। কোয়েল পাখির ডিমের কোলেস্টেরল রয়েছে ১.৪% আর মুরগির ডিমের রয়েছে শুধু ৪% । কোয়েল পাখির ডিমে প্রোটিনের পরিমাণ মুরগির ডিম থেকে প্রায় শতকরা সাত ভাগ বেশি। তাই কোয়েল পাখির ডিমের সঙ্গে মুরগির ডিমের কোন তুলনাই হয় না।
তাছাড়া কোয়েল পাখির ডিমের মধ্যে রয়েছে প্রোটিন, ভিটামিন, মিনারেল, এনজাইম এবং এমাইনো এসিড। আর উপাদানগুলো ডিমের মধ্যে এমনভাবে বিদ্যমান আছে যে আমাদের শরীরের সব ধরনের পুষ্টির অভাব পূরণ করতে সাহায্য করে এবং কাজে কর্মদক্ষতা বাড়িয়ে দেয়। তাই আমাদের প্রতিদিন অন্তত খুব কম করে হলেও দুইটা করে কোয়েল পাখির ডিম খাওয়া উচিত।
কোয়েল পাখির বৈশিষ্ট্য
কোয়েল পাখির বৈশিষ্ট্য বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। কোয়েলের বিভিন্ন জাত হিসেবে কোয়েল পাখি আকার বিভিন্ন রকম হয়। অন্যান্য অনেক পাখির চাইতে কোয়েল পাখি ছোট হয় এবং এই পাখিগুলো দেখতে অনেক সুন্দর লাগে। কোয়েল পাখি তাড়াতাড়ি বড় হয় এবং গায়ের রং সাধারণভাবে বাদামি রঙের হয়ে থাকে। কোয়েল পাখি খুব কম বয়সে ডিম পেড়ে থাকে। সাধারণভাবে ৬ থেকে ৭ সপ্তাহের মধ্যেই কোয়েল পাখি ডিম দেওয়া শুরু করে এবং অনেকদিন পর্যন্ত অনেকগুলো ডিম পাড়ে।
কোয়েল পাখি আমরা বাড়িতে কিংবা খামারেও পালন করতে পারি। কোয়েল পাখি খুব শান্ত স্বভাবের পাখি এবং শুধু ডিমের জন্যই কোয়েল পাখি বিখ্যাত না কোয়েল পাখির মাংস অনেক সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। কোয়েল পাখি মাংসে তুলনামূলকভাবে, প্রোটিন আয়রন, ও ভিটামিন বি থাকে। তাই যাদের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে তাদের জন্য কোয়েল পাখির মাংস খুব উপকারী। একটি প্রাপ্তবয়স্ক কোয়েল পাখির ওজন ১৫০ গ্রাম থেকে ২০০ গ্রাম পর্যন্ত হতে পারে।
কোয়েল পাখির বাচ্চা ফোটানোর জন্য ১৬ থেকে ১৮ দিন সময় লাগে মাত্র। আর যেহেতু ১৬ থেকে ১৮ দিন সময়ের ভেতরে বাচ্চা ফুটানো যায় তাই বাণিজ্যিকভাবে পাখি পালন করে প্রচুর আয় করা যায়।
সচার আচার জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর
১. কোয়েল পাখির ডিম কাদের খাওয়া উচিত নয় ?
কোয়েল পাখির ডিমের মধ্যে কোলেস্টেরল বেশি থাকে তাই যাদের কোলেস্টেরলের সমস্যা রয়েছে তাদের কোয়েল পাখির ডিম খাওয়া উচিত না। তাছাড়া কিছু কিছু ক্ষেত্রে কোয়েল পাখির ডিম আপনার শরীরে এলার্জির কারণ হতে পারে। যদি অ্যালার্জির মত কোন লক্ষণ দেখা দেয় তবে অবশ্যই এই ডিম খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
২. কোয়েল পাখির ডিম পাড়ার লক্ষন ?
কোয়েল পাখির ডিম পাড়ার লক্ষণ বুঝবেন কোয়েল পাখির ওজন দেখে। কোয়েল পাখির যখন ডিম পাড়ার সময় হয় তখন তার ওজন হয় ১৩০ থেকে ১৪০ গ্রাম। আর যদি দেখেন যে ওজন ১২০ গ্রামের নিচে তাহলে ভেবে নেবেন এ পাখিগুলোর এখনো ডিম দিতে দেরি আছে।
৩. কোয়েল পাখির ডিম কত দিনে ফুটে ?
সাধারণভাবে কোয়েল পাখির ডিম ১৭ থেকে ১৮ দিন পরে ফুটে বাচ্চা বের হয়।
৪. কোয়েল পাখির ডিম সিদ্ধ হতে কত সময় লাগে ?
কোয়েল পাখির ডিম সিদ্ধ হতে সাধারণভাবে ৮ থেকে ১০ মিনিট সময় লাগে। ৮ থেকে ১০ মিনিট আপনি যদি মাঝারি আচেঁ ডিমগুলো সিদ্ধ করে নেন তাহলেই খুব ভালোভাবে খোসা ছাড়াতে পারবেন।
৫. কোয়েল পাখি কত বছর বাঁচে ?
কোয়েল পাখি সাধারণভাবে দুই তিন বছর বাঁচে। কারণ কোয়েল পাখি অনেকক্ষণ ধরে আকাশে উড়ে থাকতে পারে না এবং তারা সাধারণত ৪০ একর ব্যাসার্ধের মধ্যেই তাদের পুরো জীবন যাপন করে থাকে।
৬. কোয়েল পাখির ডিম না দেওয়ার কারণ ?
কোয়েল পাখি ডিম না পাড়ার বিভিন্ন কারণ রয়েছে তবে গুরুত্বপূর্ণ তিনটি কারণ সম্পর্কে বলা হলোঃ
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো পাখির খাবার। পাখির সঠিক বয়সে সঠিক খাবার দিতে হবে না হলে সঠিক সময়ে ডিম পারবে না। কারণ ডিম করার জন্য পাখির ওজন গুরুত্বপূর্ণ। এবং পাখির বাসস্থানের পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা থাকতে হবে। কারণ ডিম পাড়ার জন্য যথেষ্ট আলোর দরকার। পাখির বাসস্থানে দৈনিক সর্বনিম্ন ১৪ ঘণ্টা আলোর ব্যবস্থা থাকতে হবে এবং সর্বোচ্চ ১৫ থেকে ১৬ ঘন্টা বাধ্যতামূলক। আর সর্বশেষে যে বিষয়টি আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে তা হলো পাখি কেনার সময় অবশ্যই সুস্থ কোয়েল পাখির বাচ্চা কিনতে হবে। সুস্থ ও অসুস্থ কোয়েল পাখি একসাথে রাখা যাবে না। তাছাড়া খেয়াল রাখতে হবে পাখির বয়স সর্বোচ্চ ৫০ দিনের উপরে হতে হবে। তাহলে অবশ্যই ডিম পারবে। আপনি যদি ২৫ থেকে ৩০ দিনে ডিমের আশা করেন কোয়েল পাখি থেকে তাহলে এটা বোকামি ছাড়া কিছু না।
৭. কোয়েল পাখির মাংস খেতে কেমন হয় ?
কোয়েল পাখির মাংস মানব দেহের জন্য উপকারী এবং স্বাস্থ্যকর একটি খাবার। কোয়েল পাখির মাংসের মধ্যে রয়েছে প্রোটিন খুব কম পরিমাণে ফ্যাট, পানি। তাছাড়া বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্যকর ও উপকারী পুষ্টি রয়েছে যেমন ক্যালসিয়াম. আয়রন, ফসফরাস, দস্তা এবং ভিটামিন এ, ভিটামিন বি এবং অন্যান্য আরো অনেক ভিটামিন। কোয়েল পাখির মাংস নরম মজাদার এবং অনেক সুস্বাদু। কোয়েল পাখির মাংস খুব দ্রুত রান্না করা যায় এবং পুষ্টিগুণে ভরপুর। কোয়েল পাখির মাংস ছোট বড় সকলের পছন্দের একটি খাবার।
৮. কোয়েল পাখির ডিম প্রতিদিন কয়টা খাওয়া যাবে ?
কোয়েল পাখির ডিম প্রতিদিন কয়টা খাওয়া যাবে এবং কোয়েল পাখির ডিম প্রতিদিন কতগুলো খাওয়া যায় তা আপনার স্বাস্থ্যের অবস্থা, আপনার বয়স এবং ডিম খাওয়ার উদ্দেশ্যের উপর সাধারণভাবে নির্ভর করে। চিকিৎসকরা প্রতিদিন ২/৩ টি কোয়েল পাখির ডিম খাওয়া নিরাপদ বলে মনে করেন।
কোয়েল পাখি দেখতে কেমন হয়
কোয়েল একটি ছোট আকারের পাখি। এটি দেখতে সাধারণত বাদামী রঙের হয়ে থাকে। কোয়েল পাখির ঠোঁট গুলো মাঝারি লম্বা হয়ে থাকে। কোয়েল পাখির পা গুলো ছোট ছোট হয়ে থাকে। পুরুষ এবং মহিলা কোয়েল পাখি প্রায় একই রকম হয়ে থাকে। তবে বিশেষ কিছু চিহ্ন রয়েছে যা দেখে আপনি বুঝতে পারবেন কোনটা পুরুষ এবং কোনটা মহিলা কোয়েল পাখি। পুরুষ কোয়েল পাখি চেনার জন্য আপনাকে পাখির বয়স যখন ৩০ দিন হবে তখন দেখতে হবে কোয়েল পাখির চোখের ও পেটের নিচে এবং মাথায় বাদামি কিংবা লালচে ভাব আছে কিনা এবং পুরুষ পাখির যখন ৪৫ দিন হবে বয়স তখন তার পায়ুপথে একটি লাল ফোলা থাকবে। আপনি যখনই পুরুষ পাখিটি ধরবেন তখনই সে একটি জোরে ডাক শুরু করবে। আর মহিলা পাখি চেনার ক্ষেত্রে চোখের সাইডে কোন লাল রেখা থাকবে না এবং বুকে কালো কালো ভাব থাকবে না।
লেখক এর মন্তব্য
গর্ভাবস্থায় কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা, কোয়েল পাখির ডিমে কি এলার্জি আছে, কোয়েল পাখির ডিম প্রতিদিন কয়টা খাওয়া যাবে, কোয়েল পাখির ডিমের ক্ষতিকারক দিক, শিশুদের জন্য কোয়েল পাখি ডিমের উপকারিতা ইত্যাদি আরো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে আপনাদের জানানোর চেষ্টা করেছি। আশা করি আমাদের আর্টিকেলটি পড়ে আপনি কোয়েল পাখির সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে বুঝতে পেরেছেন। আমার এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনার যদি ভালো লেগে থাকে তবে অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইটি ফলো দিয়ে রাখুন। কারণ আমরা প্রতিনিয়ত এরকম স্বাস্থ্য বিষয়ক আরো গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল প্রকাশ করে থাকি আমাদের ওয়েবসাইটে। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ
বিডি অনলাইন আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url