গর্ভাবস্থায় মাদার হরলিক্স খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানুন

গর্ভাবস্থায় মাদার হরলিক্স খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে গর্ভকালীন সময় আমরা অনেকেই জানার অনেক চেষ্টা করি। আজকের এই পোস্টে গর্ভাবস্থায় মাদার হরলিক্স খাওয়ার উপকারিতা ও গর্ভাবস্থায় চালতা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
একজন গর্ভবতী মায়ের শরীরে যথেষ্ট ভিটামিন ও শক্তির জন্য কিছু পুষ্টিকর খাবার খাওয়া প্রয়োজন। আর গর্ভকালীন সময় কি কি খাবার খেলে গর্ভবতী মা ও গর্ভের সন্তানের পুষ্টি ও ভিটামিনের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব। আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে সে বিষয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করব।
পেজ সূচিপএ

গর্ভাবস্থায় মাদার হরলিক্স খাওয়ার উপকারিতা

যখন একজন নারী গর্ভধারণ করেন তখন তাকে নিয়ে পরিবারের সবার একটি চিন্তা কাজ করে। পরিবারের সবাই ভাবে কোন খাবারটা খাওয়ালে একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য ভালো হবে। কোন খাবারটা গর্ভের সন্তানের জন্য ভালো হবে। এত কিছু ভাবনা চিন্তা করতে গিয়ে অনেক সময় আমরা নানান ধরনের ভুল পদক্ষেপ গ্রহণ করে থাকি। একজন গর্ভবতী মায়ের যেমন প্রাকৃতিক পুষ্টিকর খাবার দরকার তেমন কিছু কৃত্রিম খাবার দরকার। 

আর এই কৃত্রিম খাবারটি হতে পারে মাদার হরলিক্স। একজন গর্ভবতী মায়ের বিশেষ যত্ন নেওয়ার জন্য আমরা মাদার হরলিক্স খাওয়াতে পারি। আসুন তাহলে জেনে নেই মাদার হরলিক্স এর মধ্যে কি কি পুষ্টিগুণ রয়েছে এবং গর্ভাবস্থায় মাদার হরলিক্স খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে। হরলিক্স এর মধ্যে রয়েছে ভিটামিন, ভিটামিন বি১, ভিটামিন বি ট২, ভিটামিন বি ৬, ভিটামিন বি ১২, ক্যালসিয়াম প্রোটিন, খনিজ, ডিএনএ মত গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন, আয়োডিন ইত্যাদি। 
এ ছাড়া মাদার হরলিক্স এর মধ্যে রয়েছে মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট। মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন, মিনারেল ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা একজন গর্ভবতী মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। মাদার হরলিক্স একটি জনপ্রিয় কৃত্রিম খাবার যা একজন গর্ভবতী নারীর দৈনিক পুষ্টির চাহিদা মেটাতে সক্ষম। গর্ভকালীন সময় যদি আপনি মাদার হরলিক্স খেয়ে থাকেন তাহলে পর্যাপ্ত ক্যালরি এবং আয়রন শরীরে তৈরি হয়। এতে সন্তান প্রসবকালীন সময় রক্তের স্বল্পতা দেখা দেয় না। 

তাছাড়া গর্ভের বাচ্চার সঠিকভাবে বেড়ে ওঠা এবং হাড় মজবুত করতে মাদার হরলিক্সের কোন জুরি নেই। মাদার হরলিক্স খাওয়ার কোন সঠিক নিয়ম বা সময় নেই তবে আপনি হালকা গরম পানি দিয়ে সকাল কিংবা বিকেল বেলা দিনে দুইবার খেতে পারেন এতে ভালো উপকার পাবেন। এখন যদি আপনি প্রশ্ন করেন মাদার হরলিক্সের উপকারিতা সম্পর্কে জানলাম কিন্তু গর্ভকালীন কোন মাস থেকে হরলিক্স খেলে ভালো উপকার পাওয়া যাবে। 

তাহলে আমি বলব আপনি গর্ভকালীন শুরু থেকেই মাদার হরলিক্স খেতে পারেন। যদি কোন সমস্যা না থাকে তবে চিকিৎসকরা গর্ভধারণের তিন মাস পর থেকে মাদার হরলিক্স খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। সবচাইতে বেশি ভালো হয় যদি আপনি মাদার হরলিক্স খাওয়ার আগে একজন ভালো চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নেন।

গর্ভাবস্থায় চালটা খাওয়ার উপকারিতা

আমরা এখন গর্ভাবস্থায় চালটা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানব। চালতা একটি টক জাতীয় ফল আর আমরা গর্ভকালীন সময় সবাই টক জাতীয় ফল খুব বেশি পছন্দ করি। সে ক্ষেত্রে চালতা গর্ভকালীন সময় একটি পছন্দের ফল হিসেবে খেতে পারি। তবে গর্ভাবস্থায় চালতা খাওয়া আপনার জন্য উপকার নাকি ক্ষতিকর তা না জেনে চালতা খাওয়া কিন্তু ঠিক না। চালতা ফলে রয়েছে ক্যালসিয়াম, শর্করা, ভিটামিন সি, বিটা ক্যারোটিন, ভিটামিন বি, থায়ামিন ও আমিষের মত আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্যকরী উপাদান। 

চালতার একটি বিশেষ গুণ হচ্ছে এটি গর্ভকালীন সময় আমাদের শরীরে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। গর্ভাবস্থায় রক্তচাপ বেশি থাকা কতটা ক্ষতিকর তা একজন গর্ভবতী মাই জানে। আপনি যদি গর্ভকালীন সময় আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান তবে অবশ্যই পটাশিয়ামযুক্ত খাবার খেতে হবে। আর চালতাই রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম যা আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ম্যাজিক এর মত কাজ করবে। তবে যাদের গর্ভকালীন সময় রক্তচাপ কম থাকে তারা অবশ্যই চালতা খাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকবেন এবং পরিমাণে কম খাবেন। গর্ভাবস্থায় একজন নারীর ইমিউন সিস্টেম ঠিক রাখার জন্য চালতা একটি গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য। 

কারণ চালতার মধ্যে রয়েছে ভিটামিন সি আর এ ভিটামিন সি একজন গর্ভবতী নারীর ঠান্ডা, সর্দি, কাশি এমনকি শ্বাসকষ্ট নিরাময় করে থাকে। গর্ভাবস্থায় আমরা হজমের সমস্যা নিয়ে খুব ভুগি। চালতাতে রয়েছে ফাইবার। আর ফাইবার থাকার কারণে চালটা খেলে আমাদের হজম শক্তি বেড়ে যায় এবং গ্যাসের সমস্যা থেকেও মুক্তি পেতে সাহায্য করে। বিশেষ করে কাঁচা চালতা হজমশক্তি বাড়ানোর জন্য খুব উপকারী। আপনি যদি কাঁচা চালটা খান গর্ভাবস্থায় তবে পেটের বিভিন্ন সমস্যা থেকেও মুক্তি পাবেন।

চালটাতে রয়েছে ভিটামিন এ আর আপনি যদি নিয়মিত চালটা খেতে পারেন তাহলে আপনার গর্ভের সন্তানের চোখের দৃষ্টিশক্তি কোন সমস্যা হবে না। চালতাতে রয়েছে ভিটামিন সি। আর এই ভিটামিন সি আপনার ত্বকের বয়সের ছাপ পরতে দেয় না। এছাড়া চালতার মধ্যে থাকা ভিটামিন সি শিশুর লিভার ও কিডনি ভালো রাখতে সাহায্য করে। গর্ভাবস্থায় ডায়রিয়া, পেট ব্যথা কিংবা যাদের ডায়াবেটিসের সমস্যা রয়েছে চালতা খেলে উপকার মিলে। 

এছাড়া যে কোনো শরীরের ব্যথায় আপনি চালটা খেতে পারেন খেতে পারেন ভালো উপকার পাবেন। তবে হ্যাঁ চালতা থেকে আপনার উপকার নির্ভর করছে চালটা খাওয়ার সঠিক নিয়মের উপরে। কাঁচা চালতা খেতে পারেন কিংবা হালকা গরম ভাত দিয়ে সামান্য গোলমরিচের গুড়া ও সামান্য বিট লবণ ছিটিয়ে খেতে পারেন। অতিরিক্ত মসলা দিয়ে চালটা খাওয়া যাবেনা। এতে আপনার গর্ভাবস্থায় ক্ষতি হতে পারে তবে হ্যাঁ চালটা কাটার পরে কখনোই ধুবেন না এতে চালতার পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায়।

গর্ভাবস্থায় আতা ফল খাওয়ার উপকারিতা

গর্ভাবস্থায় আতা ফল খাওয়ার উপকারিতা আমাদের অনেকেরই অজানা। আতা ফলের ভেতরে কি পুষ্টিগুণ রয়েছে এবং গর্ভাবস্থায় খেলে কি কি উপকার পাওয়া যায় সে সম্পর্কে আমরা অনেকেই না জেনে আতা ফল খেয়ে থাকি। তবে যে কোন ফলের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জেনে খাওয়া গেলে গর্ভাবস্থায় সে ফল খাওয়ার ফলে গর্ভের বাচ্চার ক্ষতি হবে নাকি সে চিন্তায় পড়তে হয় না। তাহলে চলুন গর্ভাবস্থায় আতা ফল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানি। 

আতা ফলের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন এ, ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, প্রোটিন ও চর্বি জাতীয় পদার্থ। কার্বোহাইড্রেট, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ইত্যাদি। গর্ভাবস্থায় আমাদের সকালের দিকে শরীরে একটু দুর্বলতা অনুভূত হয়। আপনি যদি গর্ভাবস্থায় এমন কিছু অনুভব করেন তবে অবশ্যই প্রতিদিন সকালে আতাফল খেতে পারেন। কারণ আতা ফলের মধ্যে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা আপনার সকালের দুর্বলতা দূর করতে এবং শরীরের ব্যথা উপশম করতে সহায়তা করে। 

আতা ফলের মধ্যে পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম বিদ্যমান থাকার কারণে গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। যাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিত আতা ফল খেতে পারেন। আতা ফল খাওয়ার কোন সময় বা নিয়ম নেই। আপনি যেকোনো সময় পাকা আতা খেতে পারেন এতে পুষ্টিগুণ সঠিক পরিমাণে পাবেন।

গর্ভাবস্থায় গরুর কলিজা খাওয়ার উপকারিতা

গর্ভাবস্থায় গরুর কলিজা খাওয়া উপকারী না ক্ষতিকর এটা আমরা গর্ভকালীন প্রথম মাস থেকেই ভেবে থাকি। গরুর মাংসের মত গরুর কলিজা গর্ভাবস্থায় খাওয়া নিয়েও আমাদের মনে অনেক প্রশ্ন থেকে থাকে। কলিজা একজন নারীর জন্য খুব উপকারী একটি খাবার বিশেষ করে যেসব নারীদের শরীরে আয়রনের অভাব রয়েছে এবং ভিটামিন এর অভাব রয়েছে তারা নিয়মিত কলিজা খেতে পারে। কলিজার মধ্যে ভিটামিন এ থাকার কারণে গর্ভকালীন সময় অনেক মায়েরাই অধিক ভিটামিন এর চাহিদা পূরণ করার জন্য কলিজা খেয়ে থাকে। 

একজন সুস্থ মা মাসে দুইবার ৭৫ গ্রাম করে কলিজা খেতে পারে। যেসব মায়েরা পুষ্টির অভাবে ভুগছেন তারা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী গর্ভের তিন মাস পূর্ণ হবার পর সপ্তাহে একবার ৬০ গ্রাম করে কলিজা খেতে পারেন। এই পরিমাণ কলিজা খাওয়া গর্ভে শিশুর জন্য তেমন ক্ষতির কারণ হবে না। এর ফলে ভিটামিন এ চাহিদা পূরণ হওয়ার পাশাপাশি অন্যান্য অনেক ভিটামিন ও খনিজের চাহিদা পূরণ হবে।

সতর্কতা

কলিজার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ। তাই গর্ভের তিন মাস পূর্ণ হওয়ার পর থেকে কলিজা খাওয়া উচিত। আর অতিরিক্ত পরিমাণে গর্ভাবস্থায় কলিজা খাওয়া উচিত নয় এতে বেশি পরিমাণে ভিটামিন এ শরীরে প্রবেশ করে এবং তার ফলে গর্ভবতী মায়ের ও সন্তানের ভ্রনের ক্ষতি হয়। তবে সবচাইতে বেশি ভাল হয় কলিজা খাওয়ার আগে অবশ্যই একজন ভালো চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নেওয়া। যার ফলে আপনি নিজেও ভালো থাকবেন এবং আপনার গর্ভের সন্তানও ভালো থাকবে।

গর্ভাবস্থায় নাশপাতি খাওয়ার উপকারিতা

গর্ভাবস্থায় নাশপাতি খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করার আগে নাশপাতির মধ্যে কি কি ভিটামিন রয়েছে সে বিষয় সম্পর্কে আগে জানবো। নাশপাতিকে অনেকেই সুপার ফুট বলে থাকে কারণ নাশপাতিতে প্রাকৃতিক কোনো চিনি নেই। নাশপাতি কম ক্যালোরিযুক্ত খাবার এবং পুষ্টিগুণ বেশি হয়। একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য সেরা খাবার। নাশপাতিতে রয়েছে ভিটামিন সি। আর এই ভিটামিন সি থাকার কারণে গর্ভবতী মা এবং গর্ভের সন্তানের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য অত্যন্ত উপকারী। আপনি যদি নিয়মিত নাশপাতি ফল খেতে পারেন তাহলে আপনার গর্ভের সন্তানের হার্ট, লিভার এমনকি কিডনির সুস্থ থাকবে। 

তাছাড়া নাশপাতির মধ্যে রয়েছে আশযুক্ত ফাইবার। যা আপনার গর্ভাবস্থায় গ্যাসের সমস্যা, পেট ফাঁপা, পেট ফুলে যাওয়া এমনকি কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতেও সহায়তা করে। এছাড়া গর্ভবতী মায়ের শরীরে ক্ষতিকর কোলেস্টোরল দূর করতে সাহায্য করে। নিয়মিত নাশপাতি খেলে রক্তশূন্যতা দূর হয়, হাড়ের সমস্যা দূর হয়, ক্যান্সারের সমস্যা দূর হয়। যেহেতু নাশপাতি কোন মিষ্টি জাতীয় ফল নয় তাই ডায়াবেটিসের রোগীরাও অনায়াসে এটি খেতে পারে। 

নাশপাতির ভেতরে ভিটামিন সি থাকার জন্য এটি আপনার ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়া নাশপাতি আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় ও শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি করে। নাশপাতি ফল খাওয়ার বিশেষ কোন নিয়ম নেই। তবে ফলের মধ্যে যেমন পুষ্টিগুণ রয়েছে তেমন খোসার মধ্যেও সমান পরিমাণে ভিটামিন রয়েছে। তাই এই ফল অবশ্যই খুব ভালোভাবে ধুয়ে খোসা সহকারে খাবেন এতে সঠিক পুষ্টিগুণ পাবেন।

গর্ভাবস্থায় তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা

গর্ভাবস্থায় তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হলো। পুষ্টিবিদরা বলেন গর্ভাবস্থায় তরমুজ শুধু নিরাপদ নয়, গর্ভবতী মায়ের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি খাদ্য। এই ফলটি যেমন পুষ্টিগুণে ভরপুর তেমন রসালো। তরমুজ একটি শুষ্ক গর্ভধারণের সহায়তা করে। গর্ভকালীন সময় একজন মায়ের শরীরে প্রয়োজনীয় পরিমাণ পানি থাকা প্রয়োজন। প্রয়োজনীয় পরিমাণে পানি না থাকলে বাচ্চা প্রসবের সময় বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে। 

আর তরমুজের মধ্যে রয়েছে 92% পানি। তাই গর্ভকালীন সময় পানির চাহিদা পূরণ করার জন্য তরমুজ নিরাপদ বলে মনে করতে পারেন। তাছাড়া তরমুজের মধ্যে রয়েছে হাইড্রোজেন এটি রক্তের পরিমাণ বৃদ্ধি করে। তরমুজের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি এবং ভিটামিন বি কমপ্লেক্স যা একজন মায়ের গর্ভের বাচ্চার বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং শিশুর মস্তিষ্ক ও সায়ুতন্ত্রের বিকাশে সাহায্য করে। 

আমাদের শরীরের ভেতরের টিস্যুতে তরল জমার কারণে গর্ভের সময় হাত ও পা ফুলে যায়। তরমুজ পেশী কিংবা শিরার ভেতরে তরল জমতে দেয় না এবং বাধা প্রদান করে। হাত ও পা ফোলা ভাব দূর করার জন্য প্রতিদিন পরিমাণ মতো তরমুজ খান। তরমুজ একটি স্বাস্থ্যকর ফল। তরমুজের ভেতরে শর্করার মাত্রা বেশি থাকে তাই গর্ভকালীন সময় যদি আপনার ডায়াবেটিস থাকে তাহলে অবশ্যই তরমুজ খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।

গর্ভাবস্থায় বরই খাওয়ার উপকারিতা

গর্ভাবস্থায় বরই খাওয়ার উপকারিতা কিংবা অপকারিতা আমরা কোনটাই না জেনে বরই খেয়ে থাকি। কারণ গর্ভাবস্থায় আমাদের টক জাতীয় ফলের প্রতি আকৃষ্ট বেশি থাকে। আসুন তাহলে জেনে নেই গর্ভাবস্থায় আপনি যে বরই খাচ্ছেন তার উপকারিতা কতটা। বরই এর মধ্যে রয়েছে ফ্যাট, কার্বোহাইড্রেট, সোডিয়াম, জিংঙ্ক, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, ক্যালসিয়াম এবং অন্যান্য আরো অনেক পুষ্টিগুণ। তাছাড়া এর মধ্যে রয়েছে খনিজ ও গর্ভাবস্থায় প্রয়োজনীয় ভিটামিন। বরই হল জলদ্রব্যনীয় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট খাদ্য গুলির মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী একটি খাদ্য। 

ইরান দেশে কোষ্ঠকাঠিন্য, কাশি এবং হাঁপানি রোগের প্রতিকারের জন্য ওষুধ হিসেবে বরই ব্যবহার করেন। এছাড়া বরই আপনার গর্ভের সন্তানের স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশ ও মস্তিষ্কের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাছাড়া প্রতিদিন বরই খেলে গর্ভবতী মায়ের চুলের বৃদ্ধি ও ঘনত্ব বাড়ে। এছাড়াও বরই একজিমা ও শুষ্ক ত্বকের বিরুদ্ধে খুব কার্যকরী। গর্ভাবস্থায় আমাদের প্রায় সময়ই মুড সুইং থাকে। বরই খেলে মুড সুইং অনেকাংশে কমে যায়। 

একজন গর্ভবতী মায়ের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য বরই খুব উপকারী। তাছাড়া উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে ও পেশী কিংবা জয়েন্টের ব্যথা নিরাময় জন্য এন্টি ইনফ্লেমেটরির কাজ করে। এছাড়া গর্ভবতী শিশুর হাড়ের শক্তি বৃদ্ধি করে ও হাড় শক্তিশালী করে। বরই এমন একটি ফল এর কোন ক্ষতিকারক দিক নেই। আপনি নিয়মিত বরই খেতে পারেন তবে পরিমাণ মতো। অতিরিক্ত বড়ই খেলে আপনার হজমের সমস্যা হতে পারে সেই দিকে অবশ্যই নজর রাখতে হবে।

গর্ভাবস্থায় মিষ্টি কুমড়া খাওয়ার উপকারিতা

গর্ভাবস্থায় মিষ্টি কুমড়া খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হল। গর্ভাবস্থায় মিষ্টি কুমড়া খাওয়া অত্যন্ত পুষ্টিকরী। গর্ভাবস্থায় আপনি যদি নিয়মিত মিষ্টি কুমড়া খেতে পারেন তাহলে এটি আপনার বমি বমি ভাব এবং ডায়রিয়া সমস্যা থেকে মুক্তি দিবে। মিষ্টি কুমড়া এমন একটি সবজি যা আপনার রক্তের কোলেস্টোরল নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। একজন গর্ভবতী মা যদি নিয়মিত মিষ্টি কুমড়া খায় তাহলে তার রক্তে কোলেস্টেরল বাড়ার সম্ভাবনা থাকে না। 

তাছাড়া মিষ্টির কুমড়ার মধ্যে রয়েছে ক্যালোরি কম। তাই গর্ভাবস্থায় আপনার ওজন বাড়ানো সম্ভাবনা কম। গর্ভাবস্থায় যারা কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগছেন তারা তাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অবশ্যই মিষ্টি কুমড়া রাখুন। মিষ্টি কুমড়ার মধ্যে রয়েছে অক্সিডেন্ট তাই একজন গর্ভবতী মা যদি মিষ্টি কুমড়া খায় তাহলে ক্ষতিকর ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে। মিষ্টি কুমড়ার মধ্যে রয়েছে ভিটামিন ও বেটা ক্যারোটিন তাই প্রতিদিন মিষ্টি কুমড়া খেলে আপনার চোখের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি পাবে। 
তাছাড়া উচ্চ রক্তচাপ ও চুলের জন্য ভালো। মিষ্টি কুমড়া গর্ভে থাকা শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশ করতে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মিষ্টি কুমড়ার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অসম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিড যা শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে অন্যতম হিসেবে কাজ করে। তাই গর্ভাবস্থায় আপনার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় পরিমাণমতো মিষ্টি কুমড়া রাখার চেষ্টা করুন।

অন্যান্য প্রশ্নাবলী ও উত্তর

১. গর্ভাবস্থায় হাঁসের মাংস খাওয়া যাবে কি ?
হ্যাঁ অবশ্যই গর্ভাবস্থায় আপনি হাঁসের মাংস খেতে পারবেন। তবে চর্বি ও চামড়া ছাড়া হাঁসের মাংস খাবেন এবং অবশ্যই কলিজা খাওয়া এড়িয়ে চলবেন।

২. গর্ভাবস্থায় কি কি খাওয়া উচিত ?
গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্যকর খাবার যেমন প্রোটিন, ভিটামিন, আয়রন, খনিজ, আমিষ এবং প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি খাওয়া উচিত। এছাড়া কি কি খাবার আপনার গর্ভাবস্থায় খেলে ভালো হবে সে সম্পর্কে অবশ্যই একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে নিবেন।

৩. গর্ভাবস্থায় কাঁচা আম খাওয়া যাবে কি ?
আমের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ এবং ভিটামিন বি ৬ আর এসব উপাদান আপনার গর্ভের সময় খুব উপকারী। তাই অবশ্যই গর্ভাবস্থায় কাঁচা আম খাওয়া উচিত।

৪. গর্ভাবস্থায় কোন ফল খাওয়া যাবে না ?
গর্ভাবস্থায় পেঁপে ফল খাওয়া নিরাপদ না। পেঁপে ফলের মধ্যে রয়েছে ল্যাটেক্স যা আপনার গর্ভে শিশুর জন্য বিপদজনক। তবে আপনি পাকা পেঁপে খেতে পারেন এতে ভিটামিন ও আয়রন রয়েছে।

৫. গর্ভাবস্থায় ডালিম খাওয়া যাবে কি ?
হ্যাঁ অবশ্যই, গর্ভাবস্থায় ডালিম খাওয়া যাবে। ডালিমের মধ্যে রয়েছে খনিজ পদার্থ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। তাই চিকিৎসকরা গর্ভাবস্থায় ডালিম খাওয়ার পরামর্শ দেন। একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য ডালিম একটি পুষ্টিকর খাবার বলে বিবেচিত।

আমাদের শেষ কথা-গর্ভাবস্থায় মাদার হরলিক্স খাওয়ার উপকারিতা

গর্ভাবস্থায় প্রতিটি খাবারের ব্যাপারে আমাদের সতর্ক হওয়া উচিত। যে কোন খাবার খাওয়ার আগে অবশ্যই জেনে নিতে হবে সে খাবার আপনার এবং আপনার গর্ভের সন্তানের জন্য নিরাপদ কিনা। গর্ভাবস্থায় কিছু কিছু খাবার যেমন আমাদের জন্য নিরাপদ তেমন কিছু কিছু খাবারে আমাদের ক্ষতিও হতে পারে তাই গর্ভের সময় প্রত্যেকটা খাবার খাওয়ার ব্যাপারে ভালো করে জেনে তারপর খেতে হবে। এতে আপনার গর্বের সন্তানও আপনার জন্য নিরাপদ। 

আশা করি গর্ভাবস্থায় মাদার হরলিক্স খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কিত আর্টিকেলটি আপনার গর্ভাবস্থায় কি কি খাবার পুষ্টিকর সে ব্যাপারে কিছুটা হলেও ধারণা দিয়েছে। যদি গর্ভাবস্থায় মাদার হরলিক্স খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কিত আর্টিকেলটি আপনার ভালো লেগে থাকে তবে অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করবেন কারণ আমরা প্রতিদিন এরকম নতুন নতুন স্বাস্থ্য বিষয়ক টিপস শেয়ার করে থাকি। আর আর্টিকেল সম্পর্কিত আপনার যদি আর কোন প্রশ্ন থেকে থাকে তবে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে জানিয়ে দিবেন আমি অতি দ্রুত আপনার প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কিত আরেকটি আর্টিকেল লেখার চেষ্টা করব।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বিডি অনলাইন আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url