শীতকালের বিভিন্ন পিঠার নাম ও খেজুর রসের চিতই পিঠা বানানোর রেসিপি

শীতকালের বিভিন্ন পিঠার নাম না জানার কারণে আমরা অনেকেই আমাদের পরিবারের লোকদের বিভিন্ন রকমের মজাদার পিঠা বানিয়ে খাওয়াতে পারি না। শিশির ভেজা কুয়াশা আর ঠান্ডা আমেশ আমাদের মনে করিয়ে দেয় শীতকালে পিঠা খাওয়ার কথা। তাহলে আসুন জেনে নেই শীতকালের বিভিন্ন পিঠার নাম এবং পিঠা তৈরির রেসিপি সম্পর্কে।
পিঠা খেতে আমরা ছোট বড় সকলেই পছন্দ করি, আর যদি হয় খেজুরের রস দিয়ে চিতই পিঠা তাহলে তো আর কোন কথাই নেই। তাহলে চলুন দেরি না করে শীতের আগমনের আগেই শীতকালের বিভিন্ন পিঠার নাম ও রেসিপি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
পেজ সূচিপএ

শীতকালের বিভিন্ন পিঠার নাম

শীতকালের বিভিন্ন পিঠার নাম জানা থাকলে আপনি খুব সহজেই ঘরে বসেই বানিয়ে ফেলতে পারেন মজাদার সব পিঠার রেসিপি এবং বাড়ির সকলকে অবাক করে দিতে পারেন। শীতকালে আমাদের দেশে পিটাপুলি খাওয়ার ধুম পড়ে যায় শীতকালে। খেজুরের গাছের রস জাল দিয়ে বাড়িতে বানিয়ে পিঠে তৈরি করা যায় শীতকালে। আমাদের দেশে বিভিন্ন ধরনের পিঠা পাওয়া যায়।
 
আমাদের দেশে এমন এমন পিঠা রয়েছে যেগুলো আমরা নাম কিংবা কখনো খায়নি। আসছে শীতকাল পিঠাপুলি খাওয়ার পালা। তাই শীতে বাংলাদেশের যত পিঠার নাম রয়েছে তার তালিকা দেওয়া হল। আসুন তাহলে এমন কিছু শীতকালীন পিঠার রেসিপি সম্পর্কে আপনাকে জানাই যেগুলো নাম হয়তো আপনি শুনলেও রেসিপি সম্পর্কে তেমন কোন ধারণা নেই।
  1. খেজুরের রসের চিতই পিঠা।
  2. ভাপা পিঠা।
  3. গুড়ের পুলি পিঠা।
  4. ঝিনুক বা খেজুর পিঠা।
  5. পাটিসাপটা।
  6. দুধ চিতই।
  7. নারিকেলের পুলি পিঠা।
  8. মালপোয়া।
  9. নকশী পিঠা।
  10. ক্ষীরের পিঠা।
উপরের উল্লেখিত পিঠাগুলোর রেসিপি সম্পর্কে আলোচনা করা হলোঃ

খেজুরের রসের চিতই পিঠা বানানোর রেসিপি

খেজুরের রসের চিতই পিঠা যেমন মজাদার তেমন খেতে সুস্বাদু। শীতকালে আমাদের দেশে খেজুরের রস পাওয়া যায় আর এ খেজুরের রস দিয়েই আমরা বিভিন্ন ধরনের পিঠা বানিয়ে খাই। এর মধ্যে একটি পিঠা হল খেজুর রসের চিতই পিঠা। আসুন তাহলে খেজুর রসের চিতায় পিঠা রেসিপি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

উপকরণ
পানি, শুকনো চালের গুঁড়ো, নারিকেল, লবণ, খেজুরের রস, তেজপাতা, গরম মসলা ও চিনি।

প্রস্তুত প্রণালী
  • প্রথমে একটি হাঁড়িতে পরিমাণ মতন হালকা গরম পানি নিয়ে তার ভেতরে পরিমান মতন লবন দিতে হবে।
  • তারপর পানির ভিতরে শুকনো চালের গুড়া দিয়ে আস্তে আস্তে ভালোভাবে হাত দিয়ে মাখাতে হবে।
  • কুড়ে রাখা নারিকেল দিয়ে আবার ভালোভাবে নাড়তে হবে।
  • তারপর ১০ মিনিটের জন্য রেস্টে রেখে দিতে হবে।
  • একটি হাড়িতে পরিমাণমতো খেজুরের রস নিয়ে ২০ মিনিট জ্বাল করে নিতে হবে।
  • খেজুরের রসের ভিতরে পরিমাণ মতো আগে থেকে গরম করে রাখা তরল দুধ দিয়ে দিতে হবে। আমরা অনেকে মিষ্টি খাবার পছন্দ করি। তাই রসের ভেতরে দুধ দেওয়ার পরে আপনার যদি মিষ্টির পরিমাণ কম লাগে তাহলে আপনি আপনার ইচ্ছামত গুড় কিংবা চিনি দিয়ে মিষ্টি করে নিতে পারেন।
  • তারপর ভালোভাবে নাড়াচাড়া করে রসের ভেতরে তেজপাত, গরম মসলা ও এলাচ দিয়ে দিতে হবে।
  • যারা নারিকেল পছন্দ করেন, কিংবা খেতে ভালোবাসেন তারা সামান্য পরিমাণ রসের ভিতরে নারিকেল কুড়ো দিতে পারেন।
  • এবং সর্বশেষের সামান্য পরিমাণ লবণ দিয়ে রসটি নামিয়ে নিতে হবে তবে অবশ্যই রসের সেরাটা ঢেকে রাখতে হবে।
  • আগে যে ডোটা মেখে রেখেছিলাম ওইটার ভেতরে হালকা গরম পানি দিয়ে ডোটা একটু পাতলা করে নিতে হবে। তবে একেবারেই পাতলা করা যাবে না এবং খুব ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে।
  • তারপর পিঠা বানিয়ে নিতে হবে তবে হ্যাঁ অবশ্যই আপনি যেটাতে পিঠা বানাবেন সেটাতে একটু হালকা সোয়াবিন তেল দিয়ে নিবেন এতে পিঠাগুলো খুব সহজেই উঠে আসবে।
  • চুলার আচঁ মিডিয়াম হিটে রাখতে হবে এবং পিঠাগুলো ঢেকে দিতে হবে যাতে ভালো করে ফুলতে পারে।
  • তিন থেকে চার মিনিট অপেক্ষা করার পর একটি ছুটির কিংবা চামচ সাহায্যে পিঠাগুলো তুলে নিতে হবে এবং রসের সিরার ভেতরে দিয়ে দিতে হবে। পিঠাগুলো অবশ্যই গরম অবস্থাতে রসের সিরার ভেতর দিতে হবে।
  • ৭/৮ ঘন্টা অপেক্ষা করার পর রসের ভেতর পিঠাগুলো ভালোভাবে ভিজে গেলে খাওয়ার জন্য পরিবেশন করুন।

ভাপা পিঠা বানানোর রেসিপি

ভাপা পিঠা খাওয়ার মজাই আলাদা শীতকালে। ভাপা পিঠা শীতকালের একটি জনপ্রিয় পিঠা এবং ছোট বড় সবাই এই পিঠা খেতে খুব পছন্দ করে। আসুন তাহলে খেজুরের গুড় দিয়ে ভাপা পিঠা বানানোর রেসিপি সম্পর্কে জানি।
উপকরণ
শুকনো চালের গুড়া, লবণ, নারিকেল ও গুড়।

প্রস্তুত প্রণালী
  • প্রথমে একটি হাড়িতে কিংবা রাইস কুকারের বাটিতে অর্ধেক পানি নিয়ে চুলায় গরম করার জন্য দিতে হবে। তবে ভাপা পিঠা রাইস কুকারের বেশি ভালো হয় ।
  • পরিমাণ মতো শুকনো চাউলের গুড়ো কিংবা আতপ চালের গুড়ো।
  • চালের গুড়ার মধ্যে লবণ দিয়ে ভালোভাবে মেখে নিতে হবে।
  • অল্প ঠান্ডা পানি দিয়ে হালকা ভাবে চালের গুড়ো গুলো মেখে নিতে হবে যতক্ষণ পর্যন্ত ঝুরঝুরে না হয়।
  • পিঠা তৈরি করার জন্য স্টিলের ছোট একটি বাটি নিয়ে তার ভেতরে প্রথমে অল্প চালের গুঁড়ো দিয়ে গুড় এবং নারিকেল দিয়ে তার উপরে আবার চালের গুলো দিয়ে ঢেকে দিতে হবে এবং উপরের অংশটা ভালো করে সমান করে দিতে হবে।
  • তারপর একটি পাতলা সুতি কাপড় দিয়ে ভালোভাবে উপরের অংশটা ঢেকে দিতে হবে।
  • এখন হাড়ি কিংবা বাটির ওপরে একটি ছিদ্রযুক্ত চালনি দিয়ে দিতে হবে।
  • পানি ফুটে আসলে সে ছিদ্রযুক্ত চালনির উপরে ভাপা পিঠাগুলো বসিয়ে দিতে হবে এবং কাপড়টা হালকা ফাঁকা করে পিঠা থেকে বাটিটা সরিয়ে নিতে হবে এবং কাপড়টা দিয়ে ভালোভাবে পিঠার উপরটা ঢেকে দিতে হবে ও একটি ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিতে হবে।
  • চার থেকে পাঁচ মিনিট পর ঢাকনা তুলে পিঠাটা তুলে নিতে হবে এবং গরম গরম পরিবেশন করুন।

গুড়ের পুলি পিঠা বানানোর রেসিপি

গুড়ের পুলি পিঠা তৈরি রেসিপি যেমন সহজ তেমন খেতেও খুব মজাদার। গুড়ের পুলি পিঠা তৈরির রেসিপি সম্পর্কে আপনার যদি জানা না থাকে তাহলে আসুন গুড়ের পুলি পিঠা রেসিপি জেনে নেই।

উপকরণ
ময়দা, চিনি, লবণ, পানি, তেল, ঘি, দারচিনি, এলাচ, নারিকেল ও গুড়।

প্রস্তুত প্রণালী
  • পরিমাণ মতো ময়দা নিয়ে তার ভেতরে চিনি ও সামান্য পরিমাণ লবণ দিয়ে খুব ভালোভাবে একটা হ্যান্ডউইচ দিয়ে মিশিয়ে নিতে হবে।
  • তারপর হালকা গরম তেল অল্প পরিমাণে দিতে হবে এবং আবার ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে।
  • এখন হাতের সাহায্যে ঠান্ডা পানি দিয়ে অল্প অল্প করে নাড়াচাড়া করে একটি ডো তৈরি করে নিতে হবে এবং ২০ মিনিটের জন্য ডোটা রেস্ট রেখে দেবো।
  • তারপর একটি সসপ্যানে পরিমাণ মতন ঘি, দারচিনি, এলাচ ও গুড় দিয়ে তারপর নারিকেল দিতে হবে এবং খুব ভালোভাবে নাড়াচাড়া করতে হবে।
  • গুড়ের সাথে নারিকেল গুলো যখন খুব ভালোভাবে মিশে যাবে এবং হালকা বাদামী রঙের হবে তখন বুঝে নিতে হবে পিঠা বানানোর জন্য নারিকেলের পুরটা একেবারে রেডি।
  • একটি বেলনির সাহায্য ছোট ছোট করে লুচির মত করে বেলে নিতে হবে এবং তার ভেতরে পুরটা ভরে খুব ভালোভাবে মুখের অংশটা বন্ধ করে দিতে হবে।
  • একটি সসপ্যানে মধ্যে তেল নিয়ে চুলায় গরম করতে হবে এবং তেল গরম হয়ে গেলে একে একে পিঠাগুলো তেলের ভিতর দিয়ে দিতে হবে ও বাদামি করে ভেজে নিতে হবে তাহলে খাওয়ার জন্য একেবারে রেডি।

ঝিনুক বা খেজুর পিঠা বানানোর রেসিপি

ঝিনুক বা খেজুর পিঠা সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানিনা। ঝিনুক বা খেজুর পিঠা খেতে অনেক সুস্বাদু ও মজাদার। চলুন ঝিনুক বা খেজুর পিঠার রেসিপি সম্পর্কে তাহলে জেনে আসি।

উপকরণ
ময়দা, চালের গুড়া, চিনি, গুড়, তেল, চিরুনি।

প্রস্তুত প্রণালী
  • ময়দা বা চালের গুড়া চালনির সাহায্যে ভালো করে চেলে নিতে হবে।
  • হালকা গরম পানি দিয়ে ভালো করে ময়দা গুলো মেখে পিঠের ডো তৈরি করতে হবে।
  • ছোট ছোট লম্বা করে বেলে নিতে হবে এবং চিরুনির দাঁতের উপরে বসিয়ে হাতে চেপে ডিজাইন করতে হবে।
  • একটি সসপ্যানে তেল নিয়ে তেল যখন গরম হয়ে যাবে তখন পিঠাগুলো তার ভিতরে ছেড়ে দিতে হবে।
  • আগে থেকে তৈরি করা চিনি বা গুড়ের সিরার ভেতরে পিঠাগুলো দিয়ে ভালোভাবে ভিজাতে হবে।
  • চার পাঁচ ঘন্টা অপেক্ষা করার পর ভালোভাবে সিরার সাথে ভিজে গেলে খাবার জন্য পরিবেশন করুন।

ক্ষীরের পাটিসাপটা পিঠা বানানোর রেসিপি

পাটিসাপটা পিঠা এমন এক ধরনের পিঠা যা বাংলাদেশসহ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য খুব জনপ্রিয়। খুব অল্প সময়ে এবং খুব অল্প উপকরণ দিয়ে আপনি খুব সহজেই পাটিসাপটা পিঠা বানিয়ে নিতে পারেন। আসুন তাহলে জেনে নিন পাটিসাপটা পিঠা বানানোর গোপন রেসিপি।

উপকরণ
শুকনো চালের গুঁড়ো, ময়দা, সুজি, চিনি, লবণ, নারিকেল, গুড়, সাদা তেল, গুঁড়ো দুধ, তরল দুধ।

প্রস্তুত প্রণালী
  • একটি বড় বাটি নিয়ে তাতে চালের গুঁড়া, ময়দা, সুজি এবং পরিমাণ মতো লবণ দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে।
  • তারপর উপকরণটির ভেতরে আগে থেকে হালকা গরম করে রাখা দুধ মিশিয়ে দিয়ে খুব ভালোভাবে একটি বেটার তৈরি করে নিন। খেয়াল রাখবেন বেটারটি যেন কোন দলা পাকিয়ে না থাকে। এরপর পাঁচ মিনিটের মত ঢাকনা দিয়ে ঢাকা দিয়ে রাখুন।
  • এবার একটি প্যানে পরিমাণ মতন দুধ দিয়ে নিন। দুধ গরম হয়ে আসলে তার সঙ্গে পরিমাণ মতন গুড়ো দুধ মেশান। তবে অবশ্যই খেয়াল রাখবেন দুধ মেশানোর সময় যেন চুলার আচঁ কম থাকে।
  • পুরো মিশে গেলে আরো কিছুক্ষণ ভালোভাবে নাড়াচাড়া করুন। এরপর ঘন হয়ে আসলে চুলার তাপ একেবারেই কম হিট করে গুড় মেশান।
  • গুড় ভালোভাবে মিশে গেলে তার ভেতরে আগে থেকে খুলে রাখা নারিকেলের কুড়ে গুলো দিয়ে দিন এবং ঘন হয়ে আসলে চুলা থেকে নামিয়ে ঠান্ডা করুন।
  • আগে থেকে মেখে রাখা বেটারগুলো ভালো করে আরেকবার নাড়াচাড়া করে নিন যদি মনে হয় ঘন হয়ে গেছে তাহলে আরেকটু তরল দুধ মিশাতে পারেন।
  • এবার গ্যাসের চুলায় একটি সসপ্যান বসিয়ে দিন সসপ্যান যখন গরম হয়ে আসবে তখন সসপ্যানের ভেতরে একেবারেই হালকা করে তেল মাখিয়ে নিন।
  • তারপর চুলার আঁচ হালকা করে বেটার হাতা সাহায্যে ভালোভাবে সসপ্যানে ছড়িয়ে দিন তারপর একটি ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিন।
  • কিছুক্ষণ পর ঢাকনা তুলে আগে থেকে তৈরি করে রাখা পায়েস গুলো পিঠার ভিতর দিয়ে দিতে হবে এবং একটি খুন্তির সাহায্যে রোল বানিয়ে নিতে হবে।
  • তারপর এভাবে প্রতিটা পিঠা বানিয়ে নিতে হবে এবং গরম গরম পরিবেশন করুন।

দুধ চিতই পিঠার রেসিপি

দুধ চিতই পিঠা শীতের অন্যান্য পিঠাগুলোর মত খুব জনপ্রিয় ও অন্যতম একটি পিঠা। শীতের আমেসে দুধ চিতই পিঠা না খেলে শীতকালে পিঠা খাবার মজায় পাওয়া যায় না। আসুন তাহলে দুধ চিতই পিঠা রেসিপি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

উপকরণ
শুকনো চালের গুঁড়, দুধ, গুঁড়ো দুধ, খেজুরের গুড়, এলাচ, দারচিনি।

প্রস্তুত প্রণালী
  • প্রথমে একটি সসপ্যানে পরিমাণ মতো তরল দুধ নিয়ে নিতে হবে এবং তার ভেতরে পরিমাণ মতো গুঁড়ো দুধ দিতে হবে। তারপর দারচিনি ও এলাচ দিয়ে দিতে হবে।
  • খেজুরের গুড় দিয়ে খুব ভালোভাবে নাড়াচাড়া করতে হবে এবং চুলার আচঁ মিডিয়াম রাখতে হবে।
  • এবং সিরাগুলো ভালোভাবে জ্বাল দিয়ে ঘন করে নিতে হবে। ঘন হয়ে আসলে চুলা থেকে নামিয়ে ঢাকনা দিয়ে রাখতে হবে।
  • শুকনো চালের গুঁড়ো পরিমাণ মতন, সামান্য পরিমাণ লবণ, নারিকেলের পুর মিশিয়ে পানি দিয়ে একটি বেটার তৈরি করে নিতে হবে। বেটারটি খুব ঘন কিংবা পাতলা ও হবে না।
  • এরপর চুলা একটি প্যান্ট গরম করে পিঠাগুলো তৈরি করে নিতে হবে। অবশ্যই পিঠা দেওয়ার আগে সসপ্যানটি ভালো করে গরম করে নিতে হবে এবং সামান্য পরিমাণ উপরে তেল দিয়ে নিতে হবে এতে পিঠাগুলো থেকে খুব সহজেই উঠে আসবে।
  • পিঠাগুলো তৈরি হয়ে গেলে দুধের সিরার ভিতরে ভিজিয়ে দিয়ে সাত আট ঘন্টা অপেক্ষা করার পরে পরিবেশন করুন।

ভাপা পুলি পিঠা বানানোর রেসিপি

নারিকেলের পুলি পিঠা আমরা প্রায় সবাই খুব পছন্দ করে থাকি। কিন্তু বানানোর সঠিক নিয়ম কিংবা রেসিপি সম্পর্কে জানি না বলে সবাইকে বানিয়ে খাওয়াতে কিংবা নিজে বানিয়ে খেতে পারি না। তাহলে আসুন আজকে আমরা নারিকেলে পুলি পিঠা বানানোর রেসিপি সম্পর্কে জেনে নেই।

উপকরণ
শুকনো চালের গুড়, নারিকেল, গুড়, ঘি, এলাচ, দারচিনি, তেজপাতা, লবণ।

প্রস্তুত প্রণালী
  • গ্যাসের চুলায় একটি সসপ্যান নিয়ে তাতে সামান্য পরিমাণ, ঘি, এলাচ, দারচিনি ও তেজপাতা
  • নারিকেল কুড়া ও এক কাপ খেজুরের গুড় দিয়ে খুব ভালোভাবে নাড়াচাড়া করতে হবে। তবে হ্যাঁ চুলার হিট কিন্তু মিডিয়াম আচেঁ রাখতে হবে না হলে নারিকেলের পুরগুলো পুড়ে যেতে পারে।
  • পুরটা তৈরি হয়ে গেলে একটা প্যানে পরিমান মতন পানি নিয়ে তার ভিতরে পরিমাণ মতো লবণ দিয়ে ভালোভাবে পানিটা ফুটাতে হবে। পানিটা ভালোভাবে ফুটে গেলে চালের গুড়ো গুলো পানির ভিতর দিয়ে দিতে হবে এবং খুব ভালোভাবে সিদ্ধ করে নিতে হবে।
  • আটার ডোগুলো ভালোভাবে মুথে নিতে হবে এবং একটু বেলুন পিড়ার সাহায্যে বেলে নিয়ে ছোট ছোট গোল গোল রুটির মত করতে হবে।
  • এবং ওই রুটির ভেতরে নারিকেলের পুরগুলো ভরে খুব ভালোভাবে মুখটা বন্ধ করে মেরে দিতে হবে।

মালপোয়া পিঠা বানানোর রেসিপি

মালপোয়া পিঠা বানানোর সময় অনেক ক্ষেত্রে পিঠা অনেকটা শক্ত এবং ফেটে যায়। মালপোয়া পিঠা খেতে অনেক সুস্বাদু ও মজাদার হয়। আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষই মালপোয়ার পিঠা খেতে পছন্দ করে। আসুন কিভাবে নরম এবং সঠিক নিয়মে মালপোয়া পিঠা বানাবেন সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

উপকরণ
চালের গুড়ো, ময়দা, গুড়, তেল।

প্রস্তুত প্রণালী
  • প্রথমে শুকনো চালের গুঁড়ো একটি চাঁদনীতে করে ভালো করে চেলে নিতে হবে তারপর পরিমাণ মতন ময়দা কিংবা প্যাকেটের আটা দিতে হবে।
  • এরপর আটার ভেতরে গুড় কিংবা চিনি মিশিয়ে দিতে হবে এবং খুব ভালোভাবে নাড়াচাড়া করতে হবে।
  • আপনি চাইলে সামান্য পরিমাণে কালোজিরা দিতে পারেন এতে মালপোয়ার ঘ্রাণ ভালো হবে।
  • তারপর হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে খুব ভালোভাবে ২০ থেকে ২৫ মিনিট মোথে নিতে হবে এবং যদি খুব ঘন মনে হয় তাহলে সামান্য পানি দিয়ে পাতলা করে নিতে পারেন।
  • একটি সসপ্যানে পরিমাণ মতন তেল নিয়ে চুলায় বসিয়ে দিতে হবে এবং তেলগুলো গরম হয়ে আসলে চামচের সাহায্যে পিঠা তেলের ভেতরে ছেড়ে দিতে হবে।
  • এবং কালার যখন হালকা বাদামি হয়ে আসবে তখন পিঠাগুলো তুলে নিতে হবে। তবে হ্যাঁ অবশ্যই চুলার জ্বাল মিডিয়াম আচে রাখতে হবে নইলে পিঠাগুলোর ভেতরে কাঁচা হয়ে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।

নকশী পিঠা বানানোর রেসিপি

নকশী পিঠা বানানো সম্পর্কে অনেকই তেমন ধারণা নেই। মূলত তাদের জন্যই এই নকশী পিঠা বানানোর রেসিপিটি আলোচনা করা হলো।
উপকরণ
চালের গুড়া, লবণ, তেজপাতা, দুধ, গরম মসলা, এলাচ।

প্রস্তুত প্রণালী
  • চালের গুড়া প্রথমে ভালো করে চালনি দিয়ে চেলে নিতে হবে এবং তার ভিতরে একটু লবণ দিতে হবে।
  • গ্যাসের চুলায় একটি সসপ্যান বসিয়ে তাতে পরিমাণ মতো পানি নিয়ে গরম করতে হবে এবং পানি না ফোটা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
  • পানি ফুটে আসলে তার ভিতরে চালের গুড়া দিয়ে দুই মিনিট ঢাকনা দিয়ে রাখতে হবে এবং দুই মিনিট পর ঢাকনা তুলে ভালোভাবে নাড়াচাড়া করে চুল থেকে নামিয়ে নিতে হবে।
  • তারপর আটা গুলো ভালোভাবে মোথে নিয়ে বেলুন পিড়াতে করে ছোট সাইজের রুটি বেলে নিতে হবে।
  • তারপর পিঠার উপরে ডিজাইন করে নিতে হবে।
  • সবগুলো পিঠা তৈরি করা হয়ে গেলে চুলার আঁচ মাঝারি রেখে পিঠাগুলো বাদামি আকারে ভেজে নিতে হবে।
  • সিরা তৈরি করার জন্য পরিমাণমতো দুধ নিয়ে তাতে তেজপাতা ও গরম মসলা এবং এলাচ দিয়ে তার ভেতরে চিনি কিংবা গুড় মিশিয়ে সিরা তৈরি করে নিতে হবে।
  • এবং ভেজে রাখা পিঠাগুলো সিরার ভেতরে গরম গরম দিয়ে দিতে হবে। ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হবে যাতে পিঠার ভিতরে সিরার রস গুলো ভালোভাবে ঢুকে যেতে পারে। তারপর খাবার জন্য পরিবেশন করুন।

আমাদের শেষ কথা-শীতকালের বিভিন্ন পিঠার নাম

শীতকালের পিঠার নাম শুনলে আমাদের জ্বিহাই এমনি জল আসে আর যদি হয় উপরের আলোচিত এই পিঠাগুলো তাহলে তো শীতকালে বারবার খেতে মন চাই। আপনি যদি একজন পিঠা প্রেমিক হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই উপরের এই পিঠাগুলো রেসিপি দেখে বানানোর চেষ্টা করবেন এবং পরিবারের সকলকে নতুন নিয়মে পিঠা বানিয়ে খেয়ে খুশি করতে পারবেন। তাহলে আর দেরি কেন এখনই পিঠা বানানোর জন্য যেসব উপকরণ প্রয়োজন সেগুলো সংগ্রহ করার কাজে লেগে পড়ুন।
 
প্রিয় পাঠক, আমার খুব ভালো লাগছে এটা ভেবে যে আপনি শীতকালের পিঠা বানানো সম্পর্কে এত বেশি আগ্রহী। আপনার যদি আমার এই শীতকালের বিভিন্ন পিঠার নাম সম্পর্কিত আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই অন্যদের সাথে শেয়ার করুন। যেন তারাও তাদের পরিবারদের সাথে পিঠা খাওয়ার আনন্দ উপভোগ করতে পারে। আর এরকম আরো মজার মজার আর্টিকেল পেতে অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করে রাখুন। কারণ আমরা প্রতিনিয়তই এরকম মজার মজার আর্টিকেল আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে থাকি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বিডি অনলাইন আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url