শুকনো মরিচের উপকারিতা ও অপকারিতা - কাচাঁ মরিচের উপকারিতা ও অপকারিতা

শুকনো মরিচের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আজকে আলোচনা করব। সারা বছরের সবজি হিসেবে পরিচিত শুকনো মরিচ। আমরা অনেকেই শুকনো মরিচ উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে তেমন জানিনা এই আর্টিকেল থেকে আসুন জানি শুকনো মরিচের উপকারিতা ও অপকারিতা।
যদি আপনি নিয়মিত শুকনো মরিচ খেয়ে থাকেন তাহলে আপনাকে অবশ্যই শুকনো মরিচের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে ধারণা নিয়ে তারপর খেতে হবে। তাছাড়া কাঁচামরিচের উপকারিতা ও অপকারিতা, গোলমরিচের উপকারিতা, অতিরিক্ত কাঁচামরিচ খেলে কি হয় এগুলো সম্পর্কেও জানব। তাহলে আসুন দেরি না করে শুকনো মরিচের উপকারিতা অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
পেজ সূচিপএ

শুকনো মরিচের উপকারিতা ও অপকারিতা

শুকনো মরিচের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আমাদের সকলেরই জানা উচিত। কারণ প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় আমরা খাবারের সাথে মরিচ খেয়ে থাকি। সেটা শুকনা মরিচ হোক আর কাঁচামরিচ হোক। রান্নার স্বাদ বাড়াতে মরিচের কোন জুড়ি নেই। কেউ কেউ মনে করে থাকে শুকনো মরিচের উপকারিতা বেশি আবার কেউ কেউ মনে করে থাকে কাঁচা মরিচের উপকারিতা বেশি। কেউ ভাবে শুকনো মরিচ তরকারিতে দিলে তরকারির স্বাদ বেশি হয় আবার কেউ ভাবে কাঁচা মরিচ তরকারিতে দিলে তরকারি স্বাদ বেশি হয়। 

আসলে শুকনো এবং কাঁচা দুটো মরিচের স্বাদই ভিন্ন। তবে শুধু স্বাদ নয় উপকারিতার দিক থেকেও দুটো মরিচের উপকারিতা ভিন্ন। পুষ্টিবিজ্ঞানীরা বলেন শুকনো মরিচ এবং কাঁচামরিচ দুটো মরিচের ভেতরেই ক্যাপসাইসিন থাকে আর ক্যাপসাইসিন হলো সেই উপাদান যা আমাদের মুখের ভেতরে পানি এনে দেয়। শুকনো মরিচের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, ভিটামিন ই এছাড়া পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, লোহা, ম্যাগানিজ আসুন তাহলে জেনে নেই শুকনো মরিচের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে।

শুকনো মরিচের উপকারিতা

  • শুকনো মরিচের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। আর এই ভিটামিন সি শুকনো মরিচের মধ্যে থাকার কারণে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং ত্বকের স্বাস্থ্যেও ভালো থাকে।
  • শুকনো মরিচের মধ্যে রয়েছে ক্যাপসাইসিন নামক উপাদান যা আমাদের শরীরের কোষগুলো ক্ষতি প্রতিরোধে সাহায্য করে এবং ত্বক থেকে বয়সের ছাপ দূর করে।
  • শুকনো মরিচ হজমের এনজাইম সচল করতে সাহায্য করে। ফলে আমাদের হজম প্রক্রিয়া উন্নত হয়।
  • এছাড়া শুকনো মরিচের মধ্যে রয়েছে ক্যাপসাইসিন উপাদান । আর এ ক্যাপসাইসিন উপাদান আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের ব্যথা এবং শরীরের বিভিন্ন প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।

শুকনো মরিচের অপকারিতা

  • শুকনো মরিচ খাবারের স্বাদ বৃদ্ধি করতে এবং আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হলেও শুকনো মরিচ সীমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত। কিছু কিছু ক্ষেত্রে শুকনো মরিচ আমাদের শরীরে ক্ষতি করে থাকে। যেমন
  • যাদের গ্যাস্ট্রিকের প্রবলেম রয়েছে তারা অতিরিক্ত পরিমাণে মরিচ খাবেন না। এতে আপনার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে এবং পেটে অস্বস্তি হতে পারে।
  • শুকনো মরিচ অতিরিক্ত খেলে শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। তাই প্রয়োজনের চাইতে অতিরিক্ত পরিমাণে শুকনো মরিচ খাবেন না। এতে আপনার শরীর থেকে অতিরিক্ত পানি ঘাম হিসেবে বের হয়ে যেতে পারে।
  • কারো কারো ক্ষেত্রে শুকনো মরিচে এলার্জি হতে পারে কিংবা পেট খারাপ বা মাথা ঘোরার সমস্যা হতে পারে। তাই অতিরিক্ত পরিমাণে শুকনো মরিচ খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।

কাঁচা মরিচের উপকারিতা ও অপকারিতা

কাঁচামরিচের উপকারিতা অপকারিতা সম্পর্কে এখন আমরা জানবো। উপরে শুকনো মরিচের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আপনারা জেনেছেন। উপরের আলোচনা থেকে আমরা বুঝতে পেরেছি শুকনো মরিচের খাবার যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমন অপকারিতা রয়েছে। ঠিক তেমনি কাঁচা মরিচ খাওয়ার যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমন কাঁচামরিচ খাওয়ার অপকারিতা ও রয়েছে। 

কাঁচা মরিচ এর মধ্যে বেশ কিছু ভিটামিন রয়েছে যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। যেমন ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি ৬, ভিটামিন কে, ও ফোলেট। আসুন তাহলে জেনে নেই কাঁচামরিচের উপকারিতা অপকারিতা সম্পর্কে।

কাঁচা মরিচের উপকারিতা

  • কাঁচা মরিচের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন সি। আর ভিটামিন সি আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় ও ত্বক সুস্থ রাখতে সাহায্য করে এবং শরীরের ক্ষতিগ্রস্ত কোষ গুলো সতেজ করতে সাহায্য করে।
  • কাঁচা মরিচের মধ্যে রয়েছে বেটা ক্যারোটিন ভিটামিন। যা শরীরের ভেতরে গিয়ে ভিটামিন এ তে রূপান্তরিত হয়। আর এ ভিটামিন এ কাঁচা মরিচে থাকার জন্য আমাদের চোখে দৃষ্টি শক্তি এবং স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
  • এছাড়া কাঁচা মরিচের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন বি, ভিটামিন সি যা আমাদের স্বাস্থ্য উন্নত করে এবং মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
  • কাঁচামরিচের ভিটামিন কে থাকার কারণে আমাদের শরীরের রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে এবং হাড় মজবুত করে।
  • কাঁচা মরিচের মধ্যে রয়েছে ফোলেট উপাদান। আর এই ফলিক উপাদান আমাদের মৃত কোষগুলিকে জাগিয়ে তোলে এবং গর্ভবতী নারীদের জন্য ফলিক বিশেষ উপকারী।

কাঁচা মরিচের অপকারিতা

কাঁচামরিচের প্রচুর পুষ্টিগুণ রয়েছে এইটা ঠিক কিন্তু অতিরিক্ত পরিমাণে কাঁচামরিচ খেলে আপনার শরীরে কিংবা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতি হতে পারে। যেমন

  • আপনার যদি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থাকে তাহলে অতিরিক্ত কাঁচা মরিচ খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। কারণ অতিরিক্ত কাঁচা মরিচ খেলে গ্যাস্টিকের সমস্যা দেখা দেয় ও বুক জ্বালাপোড়া সৃষ্টি হতে পারে।
  • অতিরিক্ত পরিমাণে কাঁচামরিচ খেলে ডায়রিয়া, পেট ব্যথা, প্রদাহ জনিত সমস্যা হতে পারে।
  • কাঁচামরিচ এ রয়েছে অতিরিক্ত পরিমাণে ঝাল। তাই শরীরের তাপমাত্রা বাড়িয়ে থাকে। অতিরিক্ত ঘামের কারণে আপনার শরীরে থেকে প্রয়োজনীয় পানি বের হয়ে যেতে পারে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে উচ্চ রক্তচাপও বেড়ে যেতে পারে।
  • মরিচের মধ্যে থাকা উপাদান গুলো কিছু মানুষের শরীরে এলার্জির কারণও হতে পারে। যেমন ত্বক লালচে ভাব কিংবা শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

গোলমরিচ খাওয়ার উপকারিতা

গোলমরিচ খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে। গোলমরিচ শুধু আমাদের খাবারের স্বাদই বাড়ায় না বরং শরীরের জন্য বিশেষ উপকারী। আসুন তাহলে জেনে নেই গোলমরিচের মধ্যে কি কি ভিটামিন রয়েছে। গোলমরিচের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন সি, ভিটামিন কে, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স এছাড়াও আর অন্যান্য অনেক ভিটামিন যেমন ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন এবং বিভিন্ন ধরনের খনিজ উপাদান রয়েছে যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য বিশেষ উপকারী।
  • গোলমরিচে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং ভিটামিন ই চুল ও ত্বকের জন্য উপকারী।
  • গোলমরিচের মধ্যে থাকা ভিটামিন কে আমাদের শরীরের রক্তে জমাট বাধা হাড় মজবুত করতে এবং শরীরের রক্তগুলো যেন সচলভাবে চলতে পারে এতে সাহায্য করে।
  • গোলমরিচের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন এ। আর ভিটামিন এ আমাদের চোখের শক্তি বাড়াতে ও চোখের বিভিন্ন সমস্যা সারিয়ে তুলতে কার্যকারী ভূমিকা পালন করে।
  • ভিটামিন বি কমপ্লেক্স গোলমরিচে থাকার ফলে আমাদের স্নায়ুতন্ত্র ও হজম প্রক্রিয়া উন্নত হয়।
  • এছাড়া গোলমরিচ গুঁড়ো করে এক গ্লাস পানির সাথে মিশিয়ে খেলে আমাশা ভালো হয় এবং পেটের কৃমি প্রতিরোধ হয় ও গোলমরিচের গুড়ো দিয়ে দাঁত মাজলে দাঁতের গোড়া মজবুত হয়।
  • গোলমরিচের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন সি যাদের ঠান্ডা জনিত সমস্যা রয়েছে হাঁচি কিংবা কাশি রয়েছে তারা গোলমরিচ গুঁড়ো করে খেতে পারে এটি ভালো অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবেও কাজ করে।

কাঁচা মরিচ কি ভিটামিন

কাঁচামরিচ কি ভিটামিন না শুধু খাবারের ঝাল বাড়ানোর জন্যই ব্যবহার করা হয় এমন প্রশ্ন আমাদের অনেকের মনে আসতে পারে। আসুন তাহলে কাঁচা মরিচ এর ভেতরে কি কি ভিটামিন রয়েছে না শুধু খাবারের ঝাল বাড়ানোর জন্যই আমরা বিভিন্ন খাবারে ব্যবহার করে থাকি সে সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করি। কাঁচা মরিচের মধ্যে রয়েছে একাধিক পরিমাণ ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ। 
কাঁচামরিচের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন ১, ভিটামিন বি ২, ভিটামিন বি ৩, ভিটামিন বি ৫, ভিটামিন বি ৬, ভিটামিন সি, তাছাড়া রয়েছে ভিটামিন এ ও ওফলেট এ ছাড়া কাঁচা মরিচের মধ্যে আরও কিছু উপাদান রয়েছে যেমন ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, সোডিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাগানিজ, আয়রন, কপার সহ আরো বেশ কিছু উপকারী খনিজ পদার্থ রয়েছে। আর এই ভিটামিন গুলো আমাদের শরীলের বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে থাকে ও শরীরকে সুস্থ রাখে।

অতিরিক্ত কাঁচামরিচ খেলে কি হয়

অতিরিক্ত কাঁচা মরিচ খেলে কি হয় আমাদের শরীরে সে সম্পর্কে এবার আমরা জানবো। উপরে আমরা জেনেছি কাঁচামরিচ খাওয়ার উপকারিতা কিন্তু অতিরিক্ত পরিমাণে কাঁচামরিচ খেলে কি কি ক্ষতি হতে পারে সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া ভালো।
  • যাদের অন্তের ব্যথা রয়েছে তারা অতিরিক্ত পরিমাণে কাঁচামরিচ খাবেন না। কাঁচা মরিচের মধ্যে রয়েছে ক্যাপসাইসিন নামক একটি যৌগিক পদার্থ যা আমাদের অন্তের ব্যাথার কারণ হতে পারে।
  • ফলিক অ্যাসিড আমাদের শরীরের জন্য উপকারী হলেও অতিরিক্ত পরিমাণে ফলিক এ্যাসিড গ্রহণ করলে আমাদের পাকস্থলীতে ফলিক এ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে যায়। আর আপনি যদি অতিরিক্ত পরিমাণে কাঁচামরিচ খান তাহলে ফলিক এ্যাসিড বেড়ে যেতে পারে এবং আপনার পাকস্থলীর সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • যাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে তারা অতিরিক্ত পরিমাণে কাঁচামরিচ খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। কারণ কাঁচামরিচ বেশি খেলে আমাদের শরীরে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। কাঁচামরিচের মধ্যে থাকা ক্যাপসাইসিন আপনার উচ্চ রক্তচাপ বাড়িয়ে দিতে পারে। যারা উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভুগছেন যারা অতিরিক্ত কাঁচা মরিচ খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
  • অতিরিক্ত কাঁচা মরিচ খেলে সর্বশেষে যে সমস্যাটি আপনি বেশি ভুগতে পারেন সেটা হল গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা অবশ্যই যারা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় ভুগছেন তারা অতিরিক্ত কাঁচা মরিচ খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করুন

সচার আচার জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর

১. গোল মরিচের কাজ কি ?
গোলমরিচের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। আর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকার কারণে আমাদের শরীরের বিভিন্ন কঠিন রোগ সারাতে সহায়তা করে। শরীরের ভালো কোলেস্টেরল বাড়ায় এবং ক্যান্সারের প্রতিরোধ করে। এছাড়া রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।

২. খালি পেটে ঝাল খাবার খেলে কি হয় ?
যাদের গ্যাসের সমস্যা রয়েছে তারা কখনোই খালি পেটে ঝাল খাবার খাবেন না। এতে আপনার পাকস্থলীতে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া পেট ব্যথা, বুক জ্বালাপোড়া এমনকি ডায়রিয়া ও হতে পারে।

৩. পৃথিবীর সবচেয়ে ঝাল মরিচ কোনটি ?
পৃথিবীর সবচেয়ে ঝাল মরিচের নাম হল ক্যারোলাইনা রিপা রেড। এই মরিচটি আকৃতি সাধারণত লাল ও প্যাঁচানো হয়।

৪. মরিচ খেলে ঝাল লাগে কেন ?
মরিচ খেলে ঝাল লাগে কারণ মরিচের ভেতরে রয়েছে একপ্রকার রাসায়নিক উপাদান ক্যাপসাইসিন। ক্যাপসাইসিন মরিচের বীচে ও মরিচের ভিতরে বেশি থাকে সেজন্যই মরিচ খেলে আমাদের ঝাল লাগে।

গর্ভাবস্থায় কাঁচামরিচ খাওয়ার উপকারিতা

গর্ভাবস্থায় কাঁচা মরিচ খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আমাদের জানা থাকলে কাঁচা মরিচ থেকে আমরা উপকার পেতে পারি। কাঁচামরিচের মধ্যে রয়েছে এক বিশেষ ধরনের ক্যাপসাইসিন উপাদান যা কাঁচা মরিচের ঝাল বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়া কাঁচামরিচের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি ৬, আয়রন, পটাশিয়াম এবং খুবই গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থ এবং সামান্য পরিমাণ প্রোটিন ও কার্বোহাইড্রেট। 

আর এই উপাদানগুলো আমাদের মুখের ভেতরে লালা আনে এবং খাবার খেতে ভালো লাগে। একজন গর্ভবতী মায়ের শরীরে ভিটামিন সি এবং ভিটামিন এ খুবই গুরুত্বপূর্ণ আর কাঁচামরিচের রয়েছে ভিটামিন সি ও ভিটামিন এ তাই একজন গর্ভবতী মহিলা কাঁচামরিচ খাওয়ার উপকারিতা অনেক। গর্ভাবস্থায় শিশুর সঠিকভাবে বিকাশ হতে সাহায্য করে এবং মায়ের রক্তশূন্যতা বা এনিমিয়ার মতো প্রকট রোগ থেকে মুক্তি দেয়। কাঁচামরিচের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বেটা ক্যারোটিন আছে যা একজন গর্ভবতী মায়ের ইমিউন সিস্টেমকে উন্নত করে। 
কাঁচা মরিচ রক্তের কোলেস্টোরল কমায়। তাই হৃদরোগের আক্রান্ত হওয়া থেকে ঝুঁকি কমে গর্ভাবস্থায়। তাছাড়া একজন গর্ভবতী মা যদি নিয়মিত পরিমান মতন কাঁচামরিচ খায় তাহলে গর্ভবতী মায়ের এবং গর্ভের সন্তানের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। এছাড়া কাঁচামরিচের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন এ যা গর্ভের বাচ্চার হাড়ের সঠিক গঠন এবং গর্ভবতী মায়ের দাঁতের বিভিন্ন সমস্যা প্রতিরোধ করে। তবে অবশ্যই গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত পরিমাণে কাঁচামরিচ খাবেন না। এতে আপনার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে, পেটে ব্যথা হতে পারে এবং ডায়রিয়া সমস্যা দেখা দিতে পারে।

কাঁচা মরিচ খাওয়ার নিয়ম

কাঁচামরিচ খাওয়ার নিয়ম জানা থাকলে কাঁচামরিচ থেকে সর্বোচ্চ উপকার পাওয়া যায় এবং কাঁচা মরিচ থেকে ক্ষতির হওয়ার আশঙ্কা অনেকটা কমে যায়। কাঁচা মরিচের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, ভিটামিন ই, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ক্যাপসাইসিন ও খনিজ পদার্থ থাকে। যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য বিশেষ উপকারী। আসুন তাহলে জেনে নেই কাঁচা মরিচ খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে।

  • প্রতিদিন আপনি কাঁচা মরিচ একটা থেকে দুইটা খেতে পারেন। অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে হজমের সমস্যা এমনকি পাকস্থলীতেও সমস্যা হতে পারে।
  • যাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা রয়েছে তারা কাঁচা মরিচ সরাসরি না খেয়ে কোন খাবারের সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন এতে পেটে কম গ্যাস হবে।
  • কাঁচামরিচ খাওয়ার আগে কিংবা রান্না করার আগে অবশ্যই পানি দিয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে যেন কাঁচা মরিচের উপরে কোন ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া না থাকে।
  • যাদের গ্যাসের সমস্যা রয়েছে এবং অতিরিক্ত বুকে জ্বালাপোড়া হয় তারা খালি পেটে কখনোই কাঁচামরিচ খাবেন না।
  • রাতের বেলা কাঁচা মরিচ খাওয়া থেকে বিরত থাকুন রাতের বেলা কাঁচা মরিচ খেলে পাকস্থলীতে অস্বস্তি হতে পারে এবং রাতে ঘুম কম হয়।
  • বাচ্চা এবং বৃদ্ধরা অনেক সময় কাঁচা মরিচের ঝাল সহ্য করতে পারেনা তাদের অবশ্যই কাঁচা মরিচ সীমিত পরিমানে খাওয়া উচিত।

বাচ্চাদের মরিচ খাওয়ার উপকারিতা

বাচ্চাদের মরিচ খাওয়ার কিছু উপকারিতা রয়েছে। তবে খুবই সীমিত পরিমাণে কিংবা অল্প পরিমাণে দেওয়া উচিত। মরিচে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান যেমন ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, অ্য্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ক্যাপসাইসিন যা বাচ্চাদের স্বাস্থ্যের জন্য বিশেষ উপকারী।

  • মরিচে রয়েছে ভিটামিন সি যা বাচ্চাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং এবং বাচ্চাদের ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে তুলতে সাহায্য করে।
  • মরিচের মধ্যে ক্যাপসাইসিন থাকার ফলে বাচ্চাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়।
  • মরিচ খেলে শরীর থেকে ঘাম বের হয়ে যায় এতে বাচ্চাদের শরীর ঠান্ডা রাখে।
  • এছাড়া মরিচের মধ্যে রয়েছে ক্যাপসাইসিনের প্রাকৃতিক এন্টি ইনফ্লেমেটরি গুণ যা বাচ্চাদের শরীরের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।

সর্তকতা

তবে বাচ্চাদের খাদ্য তালিকায় খুব অল্প পরিমানে মরিচ রাখার চেষ্টা করুন এবং ধীরে ধীরে খাওয়ানোর চেষ্টা করুন অতিরিক্ত পরিমাণে মরিচ খাওয়ালে গ্যাসের সমস্যা কিংবা পেট ব্যাথা হতে পারে কিংবা বাচ্চাদের ত্বকে যদি কোন সমস্যা থাকে তাহলে অবশ্যই ডাক্তারে পরামর্শ নিয়ে মরিচ খাওয়াতে হবে।

শেষ কথা - শুকনো মরিচের উপকারিতা ও অপকারিতা

স্বাস্থ্য উপকারিতা পেতে নিয়মিত শুকনো মরিচ কিংবা কাঁচা মরিচ সীমিত পরিমানে খাওয়া উচিত। বিশেষ করে যাদের গ্যাসের সমস্যা রয়েছে কিংবা পেটের সমস্যায় ভুগছেন তাদের শুকনা মরিচ এবং কাঁচামরিচ খাওয়ার ব্যাপারে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। আপনি যদি পুরো আর্টিকেলটি খুব মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই বুঝতে পেরেছেন আপনার স্বাস্থ্যের জন্য কাঁচা মরিচ এবং শুকনো মরিচ খেলে কি কি উপকার পাবেন এবং অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে কি কি অপকার হতে পারে। 

আপনার যদি আমাদের এই শুকনো মরিচের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কিত আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার নিকটস্থ বন্ধুবান্ধবদের সাথে শেয়ার করুন এবং শুকনো মরিচের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে তাদের জানানোর চেষ্টা করুন। স্বাস্থ্য সকল সুখের মূল তাই নিজে ভালো থাকুন এবং অন্যকে ভালো রাখার চেষ্টা করুন। আজকে তাহলে এই পর্যন্তই আশা করি আপনি একটু হলেও উপকৃত হয়েছেন। যদি এরকম স্বাস্থ্য বিষয়ক নতুন নতুন ধারণা পেতে চান তাহলে অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করুন। আর শুকনো মরিচের উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে আপনার যদি কোন মন্তব্য থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে জানিয়ে দিবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বিডি অনলাইন আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url