কিসমিসের ক্ষতিকারক দিক ও গর্ভাবস্থায় কিসমিস খাওয়ার নিয়ম
কিসমিসের ক্ষতিকারক দিক, কিসমিস খাওয়ার সময় অবশ্যই আমরা কিসমিসের উপকারিতা এবং কিসমিসের ক্ষতিকারক দিক নিয়ে বিশেষ চিন্তায় থাকি। কিসমিস খুব জনপ্রিয় একটি খাবার। যারা শরীরের ক্লান্তি দূর করতে চান এবং এবং গর্ভাবস্থায় কিসমিস খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চান তারা অবশ্যই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত খুব মনোযোগ সহকারে পড়ুন। কারণ এই আর্টিকেলে আলোচনা করা হয়েছে কিসমিসের ক্ষতিকারক দিক ও কিসমিস কিভাবে খেতে হবে সেই সম্পর্কে।
চলুন আর দেরি না করে কিসমিসের ক্ষতিকর দিক, গর্ভাবস্থায় কিসমিস খাওয়ার নিয়ম, কিসমিস খাওয়ার নিয়ম, কিসমিস খেলে কি ফর্সা হয়, প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত, কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার নিয়ম, সকালে খালি পেটে কিসমিস খেলে কি হয়, কিসমিস খেলে কি মোটা হয় আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে জেনে নেই।
পেজ সূচিপএ
কিসমিসের ক্ষতিকারক দিক
কিসমিসের ক্ষতিকারক দিক নিয়ে আমরা খুবই কম চিন্তা করি। কারণ কিসমিস খাওয়ার ফলে ক্ষতির চাইতে উপকার হয় বেশি। কিন্তু কিসমিসেরও কিছু কিছু ক্ষতিকারক দিক রয়েছে। যেগুলো আপনার শরীরে ক্ষতি করতে পারে। আসুন তাহলে জেনে নেই কিসমিস খেলে কি কি ক্ষতি হতে পারে। আসলেই কিসমিসের ক্ষতিকারক দিক খুবই কম কিসমিস খেলে খুব সামান্য পরিমাণ আমাদের শরীরে ক্ষতি হতে পারে।
তবে কিসমিসের ক্ষতিকারক দিক কম হোক বা বেশি হোক আমাদের জেনে রাখা ভালো। কারণ না জেনে রাখলে কিসমিস খেয়ে ক্ষতিকারক দিকে সম্মুখীন হতে পারি। ১০০ গ্রাম কিসমিসের মধ্যে ২৯৯ গ্রাম ক্যালোরি থাকে। আঙ্গুরের মধ্যে ৬৯ গ্রাম ক্যালরি। তাহলে এখন বুঝতে পেরেছেন কিসমিসে বেশি পরিমাণে ক্যালরি থাকে আর কিসমিস বেশি পরিমাণে খেলে এই ক্যালোরি আপনার শরীরে ক্ষতি করতে পারে।
অতিরিক্ত কিসমিস খাওয়ার পরে আপনার শরীরে ওজন বেড়ে যেতে পারে বিশেষ করে কিসমিস একটি মিষ্টি জাতীয় খাবার আর এই খাবার প্রচুর পরিমাণে খেলে আপনার সুগার লেভেল বেড়ে যেতে পারে কিসমিস খাওয়ার ফলে আপনার দাঁতের ও সমস্যা হতে পারে। কিসমিস আঠালো এবং দাঁতে লেগে থাকতে পারে এর ফলে দাঁতের ক্ষয় এবং দাঁতের মাড়ি সমস্যা হতে পারে। হজমে অস্বস্তি হতে পারে। কিসমিসে অতিরিক্ত ফাইবার এবং চিনি থাকার কারণে পেট ফুলে যাওয়া এবং গ্যাসের সমস্যা হতে পারে। কিছু কিছু সময় কিসমিস খাওয়ার ফলে অ্যালার্জি হতে পারে।
গর্ভাবস্থায় কিসমিস খাওয়ার নিয়ম
গর্ভাবস্থায় কিসমিস খাওয়ার নিয়ম জানার আগে গর্ভের সময় কিসমিস খেলে কি কি উপকার হয় সে সম্পর্কে আগে জেনে নেওয়া যাক। কিসমিসের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, মিনারেলস, পটাশিয়াম, আয়রন থাকে। আর আপনার গর্বের শিশুর বেড়ে উঠতে এই উপাদান গুলো প্রচুর পরিমাণে সাহায্য করে এবং গর্ভবতী মায়ের শরীরের উন্নতি করতে সাহায্য করে। পর্যাপ্ত পরিমাণ শক্তি যোগান দেয় গর্ভবতী মায়ের শরীরের।
কিসমিসে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে ফলে গর্ভবতী মায়ের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে এবং গর্ভকালীন সময় গ্যাস্টিকের সমস্যা থেকে আরাম দেয়। গর্ভকালীন সময়ে একজন মায়ের শরীরে যদি পর্যন্ত পরিমাণে রক্ত না থাকে তবে মা এবং গর্বের শিশুর বৃদ্ধি ও বাচ্চা ডেলিভারির সময় বিপদ হয়। কিসমিস শরীরে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে সাহায্য করে এবং শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ রক্ত তৈরি করতে সাহায্য করে। কিসমিসের মধ্যে পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম ও আয়রন থাকে।
এইসব উপাদানগুলি শিশুর হাড় গঠনে সাহায্য করে এবং হাড় মজবুত করে। গর্ভকালীন সময় আমাদের সকালবেলা বেশি ক্লান্ত মনে হয়। আপনি যদি নিয়ম করে প্রতিদিন কিসমিস খান তবে শরীরের ক্লান্তি ভাব এবং অনেকটা কমিয়ে দেয়। গর্ভকালীন সময় যদি আয়রন কম থাকে তবে অ্যানিমিয়ার সমস্যা দেখা দেয়। আর কিসমিসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন। কিসমিস খেলে এ্যানিমিয়ার সমস্যা হবে না। তবে হ্যাঁ যদি নিয়ম মেনে কিসমিস খেতে পারেন তবে অবশ্যই উপকার পাবেন
কিসমিস খাওয়ার নিয়ম
কিসমিস সরাসরি না খেয়ে ভিজিয়ে খাওয়া ভালো। রাতের বেলা ঘুমাতে যাওয়ার আগে ১০/১৫ টি কিসমিস পানিতে ভিজিয়ে রাখবেন এবং সকালে খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে ভেজানো কিসমিসের পানি এবং কিসমিস গুলো খাবেন। তবে প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫ টি বেশি কিসমিস খাবেন না কারণ গর্ভাবস্থায় কোন খাবারই বেশি কিংবা কম খাওয়া উচিত না।
কিসমিস খেলে কি ফর্সা হয়
কিসমিস খেলে কি ফর্সা হয় এই ভাবনাটা কিসমিস খাওয়ার সময় অবশ্যই আপনার মাথায় আসে। কিসমিস একটি শুকনো ফল আর আমরা জানি শুকনো ফল ত্বকের হারানো উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে। কিসমিসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, ভিটামিন ই, ভিটামিন সি, পটাশিয়াম এবং আরো অনেক ধরনের পুষ্টি উপাদান। কিসমিস খেলে যেমন আমাদের শরীরের বিভিন্ন উপকার হয় তেমন আমাদের ত্বকের ও বিভিন্ন ধরনের উপকার হয়।
কিসমিসের মধ্যে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা আমাদের ত্বকের মৃত কোষ গুলো দূর করে নতুন কোষ তৈরি করতে সাহায্য করে। কিসমিস ভিজিয়ে রাখলে কিসমিসের গুনাগুন আরো বেড়ে যায়। কিসমিস ভিজিয়ে রেখে সেই পানি যদি পান করা হয় তাহলে আপনার শরীরের জন্য আরও বেশি উপকার নিয়ে আসে। কিসমিস আপনার শুষ্ক ত্বকে কোমল করতে সাহায্য করে।
কিসমিস খেলে যে আপনার ত্বক ফর্সা হবে এমন কোন বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই। তবে হ্যাঁ কিসমিস একটি পুষ্টিকর খাবার এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার ভিটামিন খনিজ এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে। এগুলো আপনার শরীর সুস্থ রাখতে এবং ত্বককে ভালো রাখতে সাহায্য করে। বিশেষ করে এন্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের কোষগুলোকে ফ্রি রেডিক্যাল থেকে রক্ষা করে।
যার ফলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বজায় থাকে। তবে ত্বকের উজ্জ্বলতা কিংবা রং ফর্সা করার জন্য শুধুমাত্র কিসমিস খাওয়ায় যথেষ্ট নয় আরো অনেক ভাবে আপনি আপনার ত্বককে ফর্সা করতে পারেন। যেমন সঠিকভাবে খাদ্য খাওয়া, নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা এবং বিভিন্ন ধরনের সানস্ক্রিন ব্যবহার করার মাধ্যমে।
প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত
প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত তা নির্ভর করে আপনার স্বাস্থ্যের ওপর। আপনার বয়স কেমন, আপনার স্বাস্থ্যের অবস্থা কেমন এবং কতটুক ক্যালরি আপনার স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী তার ওপর নির্ভর করছে আপনি প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খেতে পারবেন। স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য কিসমিস একটি উপকারী খাবার। কিসমিসের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, খনিজ পদার্থ, ফাইবার। আর এসব উপাদান আপনার শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। তবে সাধারণত প্রতিদিন (১/2 কাপ) ৩০ গ্রাম কিসমিস খাওয়া শরীরের জন্য ভালো বলে মনে করা হয়।
নিয়মিত এভাবে কিসমিস খেলে আপনার শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করবে এবং ক্যালরি গ্রহণের পরিমাণকে নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করবে। কিসমিস ক্যালরির একটি ভালো উৎস । এগুলো আপনাকে ওজন বাড়াতে সাহায্য করতে পারে কিন্তু হ্যাঁ ওজন বাড়ানোর জন্য যে পরিমাণ কিসমিস খেতে হবে তা নির্ভর করে আপনার কিসমিস খাওয়ার উপর। আপনি যদি ওজন বাড়াতে চান তবে যতটুক প্রতিদিন কিসমিস খান তার চেয়ে বেশি কিসমিস খেতে হবে।
তবে আপনি যদি এমনি কিসমিস না খেতে চান তবে কিসমিস দিয়ে ওজন বাড়ানোর জন্য আরও অনেক টিপস রয়েছে। যেমন কিসমিস সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে খেতে পারেন এতে আপনার হজম হবে খুব সহজে এবং আপনার ওজন বাড়াতেও সাহায্য করবে। দই বা ওটমিলের কিসমিস যোগ করুন। এছাড়া আপনি কিসমিস দিয়ে স্ন্যাক ও তৈরি করে খেতে পারেন।
কিসমিসে অবশ্যই চিনির পরিমাণ বেশি থাকে তাই ডায়াবেটিসের রোগীর খাওয়ার আগে অবশ্যই চিন্তা ভাবনা করে খেতে হবে। আপনি যদি আপনার ওজন অতিরিক্ত বাড়াতে চান তবে কিসমিস খাওয়া বাড়িয়ে দিন এবং ওজন যদি কমাতে চান তবে কিসমিস খাওয়া কমিয়ে দিন আর ওজন যদি ঠিক রাখতে চান তবে পরিমাণ মতন কিসমিস খান।
কিসমিস ভেজিয়ে খাওয়ার নিয়ম
কিসমিস ভেজিয়ে খাবার বেশ কিছু উপকারিতা রয়েছে। কিসমিসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, পুষ্টি এন্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। কিসমিস ভেজিয়ে খেলে কিসমিসের মধ্যে থাকা শর্করা ও ভিটামিন আরো ভালোভাবে আপনার শরীরের কাজ করে থাকে। তবে হ্যাঁ কিসমিস শুধু ভিজিয়ে খেলেই হবে না কিসমিস ভিজিয়ে খাবার কিছু নিয়ম রয়েছে। প্রতিদিন আপনি কিসমিস ভেজিয়ে এবং কিসমিস ভেজানো পানি খেতে পারেন।
সাধারণত ২০ থেকে ২৫ টি কিসমিস যথেষ্ট। একটি পরিষ্কার বাটি নিয়ে পরিষ্কার পানি নিয়ে পরিমাণ মতো কিসমিস নিয়ে সাত-আট ঘন্টা ভিজিয়ে রাখুন কিংবা রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে কিসমিস ভিজিয়ে দিন এবং সকালে ঘুম থেকে উঠে কিসমিস ভেজানো পানি এবং ভিজিয়ে থাকা কিসমিস গুলো খান। আপনার যদি ইচ্ছে হয় তবে কিসমিসের সাথে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন এইটা আপনার রুচির উপরে নির্ভর করছে। কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে অনেক, যেমন কিসমিস ভিজিয়ে গেলে হজম শক্তি উন্নত করে এবং পেটের গ্যাসও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে।
কিসমিস লিভারের জন্য ভালো, নিয়মিত কিসমিস খেলে লিভার পরিষ্কার রাখে এবং দেহ থেকে টক্সিন গুলো বের করে দেয়। আপনি যদি নিয়মিত নিয়ম অনুযায়ী কিসমিস খান তবে আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা কমায় এবং ত্বক উজ্জ্বলতা করতে সাহায্য করে। যাদের শরীরে প্রচুর পরিমাণে আয়রন ও হিমোগ্লোবিনের প্রয়োজন তারা নিয়মিত কিসমিস খেতে পারেন। তাছাড়া যাদের শরীর একটুতেই ক্লান্ত হয়ে পড়ে তারা প্রতিদিন সকালে কিসমিস ভিজিয়ে পানি খেতে পারেন। এতে শরীরে এক্সট্রা এনার্জি পাবেন।
সকালে খালি পেটে কিসমিস খেলে কি হয়
সকালে খালি পেটে কিসমিস খেলে কি হয় সে সম্পর্কে জেনে নেওয়ার আগে কিসমিস ভিজিয়ে খেলে কি হয় সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া জরুরী। আমরা উপরে আলোচনা করেছি কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার নিয়ম তাই আগে অবশ্যই কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নিন। ভেজানো কিসমিসে থাকে আয়রন, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ফাইবার। কিসমিস শুধু কাচাঁ খেলেই যে উপকার হয় তা কিন্তু নয় কিসমিস ভেজানো পানি খেলেও অনেক উপকার হয়।
কালো কিসমিস কিংবা লাল কিসমিস যে কোনো কিসমিসই আপনি পানিতে ভিজিয়ে রেখে জল খেতে পারেন। একটি পাত্রে পরিমাণ মতো কিসমিস নিয়ে সারা রাত জলে ভিজিয়ে রাখুন সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে কিসমিস ভেজানো জলটি একটু গরম করে খেয়ে নিন। তারপর আধাঘন্টা কিছু খাবেন না। সকালে খালি পেটে কিসমিস ভেজানো জল খেলে আপনার হতে পারে বিভিন্ন ধরনের উপকার যেমন হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, কিসমিস ভেজানোর ফলে অনেকটাই নরম হয়ে যায় এটা আপনার হজম ক্ষমতা বাড়ে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।
খালি পেটে কিসমিস খেলে ডিহাইড্রেশনের সমস্যা মিটে যায়। তাছাড়া হার্ট ভালো রাখতে, দাঁত ও চুলের সমস্যা দূর করতে, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে, ব্লাড প্রেসার কমাতে এবং রক্ত স্বল্পতা কমাতে কিসমিস অনেকাংশের সাহায্য করে।
কিসমিস খেলে কি মোটা হয়
হ্যাঁ, কিসমিস খেলে মোটা হয়। আপনি যদি আপনার ওজন বাড়াতে চান তবে অবশ্যই পরিমাণের চাইতে একটু বেশি কিসমিস খান। কিসমিসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি, ফাইবার বিভিন্ন ধরনের খনিজ পদার্থ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এই উপাদান গুলি আপনার ওজন বাড়াতে সাহায্য করে। দিনে ৩০ থেকে ৪০ গ্রাম কিসমিস খাওয়া উপকারী তবে হ্যাঁ আপনি কতটুকু ওজন বাড়াতে চাচ্ছেন তার ওপর নির্ভর করে কতটুকু কিসমিস খাবেন।
এমনি শুকনো কিসমিস খেতে যদি আপনার সমস্যা হয় তবে রাতে কিসমিস ভিজিয়ে রেখে সকালে কিসমিস ভেজানো জল খেতে পারেন। এছাড়া কিসমিস দিয়ে বিভিন্ন রেসিপি তৈরি করেও আপনি খেতে পারেন। যেমন দুধের সাথে মিশিয়ে, দইয়ের সাথে মিশিয়ে কিংবা সকালের নাস্তায়। ডায়াবেটিসের রোগীরা যদি ওজন বাড়াতে চান তবে কিসমিস খাওয়ার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেন।
কারণ কিসমিসে রয়েছে মিষ্টি তাই অতিরিক্ত পরিমাণে কিসমিস খেলে আপনার সুগার বেড়ে যেতে পারে। কিসমিস ওজন বাড়াতে সাহায্য করে ঠিকই কিন্তু ব্যায়াম, সুষম খাদ্য এগুলো নিয়মিত করলে শুধু কিসমিস আপনার ওজন বাড়াতে পারবে না।
শুকনো কিসমিস খেলে কি হয়
শুকনো কিসমিস খেলে শরীরে অনেক ধরনের উপকার পাওয়া যায়। কিসমিসের মধ্যে রয়েছে এমন কিছু উপাদান যা আপনার শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। কিসমিসের মধ্যে রয়েছে ক্যালোরি, ফাইবার, খনিজ পদার্থ, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। কিসমিসে প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক শর্করা থাকে যা আপনার শরীরে বাড়তি শক্তি বৃদ্ধি করে, ক্লান্তি ভাব দূর করে এবং শরীরকে সতেজ রাখে।
কিসমিস হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। কিসমিসে প্রচুর পরিমানে আয়রন রয়েছে যা রক্তস্বল্পতা বৃদ্ধি করে হাড়ের স্বাস্থ্য বজায় রাখে। বিশেষ করে এটি মহিলাদের জন্য উপকারী। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। কিসমিসে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সি যা আপনার ত্বক ও চুলের যত্নে ভাল কাজ করে।
কিসমিস খেলে কি ওজন কমে
কিসমিস খেলে কি মোটা হয় সে সম্পর্কে আমরা উপরে জেনেছি। এখন জানবো কিসমিস খেলে কি ওজন কমে। অবশ্যই কিসমিস খেলে আপনার ওজন কমবে, তবে হ্যাঁ নিয়ম করে কিসমিস খেতে হবে। কিসমিস ওজন কমাতে অনেকাংশের সাহায্য করে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে কিসমিস খাওয়া অনেক উপকারী। আর রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে কিসমিস খেলে আপনার ওজন কমে।
কিসমিসে রয়েছে ফাইবার। আর ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খেলে আপনার পেট অনেক সময় ধরে ভরে থাকে। এজন্য সকালে উঠেই খিদে পায় না ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। তাছাড়া রাতে কিসমিস খেলে আপনার ঘুম ভালো হয়। প্রতিদিন রাতে যদি আপনি নিয়ম করে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ৮/১০ কিসমিস খান তবে আপনার শরীরে ক্যালরির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে এবং আস্তে আস্তে ওজন কমবে।
শেষ কথা-কিসমিস খাওয়ার অপকারিতা
কিসমিস খাওয়ার অপকারিতা কিংবা কিসমিসের ক্ষতিকারক দিক নিয়ে আলোচনা। কিসমিসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার আর কিসমিস যদি অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া হয় তবে বদহজম, পেট ফাঁপা, ডায়রিয়া এবং অন্যান্য হজমে সমস্যা হতে পারে। তাছাড়া এটি যেহেতু উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার তাই আপনার ওজন বাড়াতে পারে এবং কিসমিসে চিনি থাকে যা রক্তের শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি করে। তাই অবশ্যই কিসমিস খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে এবং নিয়ম মেনে খাওয়া উচিত।
আশা করি আমাদের এই আর্টিকেল পড়ে আপনি কিসমিসের ক্ষতিকারক দিক এবং আরো বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। আমাদের এই আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তবে অবশ্যই প্রিয় মানুষদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। কিসমিস সম্পর্কে আপনার আর যদি কোন প্রশ্ন থেকে থাকে তবে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে জানিয়ে দিবেন। আমি পরবর্তী কোন পোস্টে আপনার প্রশ্নের সমাধান দেওয়ার চেষ্টা করব। ধন্যবাদ
সতর্কতা
কিসমিসে রয়েছে অনেক ধরনের ভিটামিন মিনারেল এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট এই উপাদান গুলো আপনার ত্বকের জন্য খুব উপকারী। কিন্তু কিসমিসে থাকা অতিরিক্ত অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট আপনার শরীরের এলার্জি বাড়িয়ে দিতে পারে। তাছাড়া কিসমিসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি যা আপনার সুগার কিংবা ওজন বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই অবশ্যই কিসমিস খাওয়ার আগে কিসমিস খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিবেন এবং প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস আপনার স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
বিডি অনলাইন আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url