ফার্মের মুরগির ডিমের অপকারিতা ও দেশি মুরগির ডিমে এলার্জি

ফার্মের মুরগির ডিমের অপকারিতা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন। আজকের আর্টিকেলে আমরা আপনাকে জানাবো ফার্মের মুরগির ডিমের অপকারিতা এবং দেশি মুরগির ডিমে কি এলার্জি আছে সেই সম্পর্কে।
ফার্মের মুরগির ডিমের অপকারিতা গুলো কি কি এবং দেশি মুরগির ডিমে কি এলার্জি আছে সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তাহলে আজকের এই সম্পূর্ণ আর্টিকেল জুড়ে আমাদের সঙ্গে থাকুন।
পেজ সূচিপএ

ফার্মের মুরগির ডিমের অপকারিতা

ডিমের মধ্যে রয়েছে শরীরের উপযোগী সকল ধরনের উপাদান। শরীর দুর্বল হওয়ার ফলে চিকিৎসকেরা নিয়মিত ডিম খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। ডিমে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন রয়েছে। অন্যান্য প্রোটিন যুক্ত খাবারের দামের তুলনায় ডিমের দাম খুবই কম। কিন্তু ব্রয়লার মুরগি কিংবা ফার্মের মুরগির ডিম খেলে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। বর্তমান বাজারে মুরগির ডিম ও মাংসের চাহিদা থাকায় খামারিরা মুরগি পালনে সকল ধরনের খারাপ উপায় অবলম্বন করছেন।
 
দিন দিন এই খারাপ উপায় গুলো ভক্ষণকারীর জন্য স্বাস্থ্য ঝুঁকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফার্মের মুরগিকে চামড়ার শিল্পের বর্জ্য খাবার হিসেবে দেওয়া হয়। এসব বর্জ্য রয়েছে বিষাক্ত ক্রোমিয়াম যা মানব দেহের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। ক্রোমিয়ামের তাপ সহনীয় ক্ষমতা হল ২০০-৯০০ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড। যার ফলে ডিম ও মুরগির মাংস রান্না করলেও ক্রোমিয়াম গুলো নষ্ট হয় না। ক্রোমিয়াম যুক্ত এই ডিম ও মুরগির মাংস খাওয়ার ফলে ক্রোমিয়াম গুলো সহজেই আমাদের দেহে প্রবেশ করে এবং ধীরে ধীরে কিডনি লিভার এর কার্যক্ষমতা কমিয়ে দিচ্ছে। 

এছাড়াও এ বিষাক্ত ক্রোমিয়াম শরীরের প্রবেশের ফলে শরীরের কোষগুলোকে নষ্ট করে দেয়। যা পরবর্তীতে ক্যান্সারের রূপ ধারণ করতে পারে। এছাড়াও মুরগিকে দেওয়া হয় কিছু এন্টিবায়োটিক। কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের মতে মুরগির ডিম ও মাংসে এই অ্যান্টিবায়োটিক গুলো থেকে যায়। আর এই ডিম ও মাংস খাওয়ার ফলে অ্যান্টিবায়োটিক গুলো আমাদের দেহে প্রবেশ করে এবং আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা খুব দ্রুত নষ্ট করে দেয়। 

মুরগির দেহে হিউম্যান অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়। এটি দেওয়ার ফলে মুরগি খুব দ্রুত বড় হয়। এন্টিবায়োটিক দেওয়ার কারণে মুরগিকে বেশি খাবার দেওয়ার প্রয়োজন হয় না। তাছাড়া মুরগিকে যেসব দানাদার খাবার দেওয়া হয় সেগুলোতে রাসায়নিক মিশ্রিত করা হয় এসব মুরগির মাংস ও ডিম খাওয়ার ফলে মানুষের শরীরে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা যেতে পারে। যতটা সম্ভব আমাদের ফার্মের মুরগির ডিম খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত কারণ এর ফলে পরবর্তীতে আমরা অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারি।

দেশি মুরগির ডিমে কি এলার্জি আছে

দেশি মুরগির ডিমে কি এলার্জি আছে ? দেশি মুরগির ডিম খেলে কি এলার্জির সমস্যা হতে পারে এসব বিষয় নিয়ে আমরা অনেক চিন্তা ভাবনা করে থাকি দেশি মুরগির ডিম খাওয়ার আগে। দেশি মুরগির ডিম খেতে পছন্দ করে না এমন মানুষের সংখ্যা খুবই কম। দেশি মুরগির ডিম রয়েছে পুষ্টিকর ও ভিটামিন এবং দেশি মুরগির ডিম একটি সুস্বাদু খাবার দেশি মুরগির ডিম। আমাদের শরীরের জন্য খুব উপকারী একটি খাদ্য কিন্তু দেশি মুরগির ডিমে কি এলার্জি আছে এই নিয়ে আমরা একটু চিন্তায় পড়ে যাই। 

তাই আজকে আমরা আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাকে একটি সঠিক ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব। দেশি মুরগির ডিমে কোন এলার্জি নেই। আপনি কোন ভাবনা ছাড়াই দেশি মুরগির ডিম খেতে পারেন। তবে হ্যাঁ দেশি মুরগির ডিমের এলার্জি খুব কম হয়। যদি দেশী মুরগীর ডিম খাওয়ার পর আপনার শরীরে এলার্জির কোন লক্ষণ দেখা দেয় তবে অবশ্যই দেশি মুরগির ডিম খাওয়া থেকে বিরত থাকুন এবং দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেশি মুরগির ডিমে বাচ্চাদের অ্যালার্জি হতে পারে। যদি দেশি মুরগির ডিম খাওয়ার পর বাচ্চাদের এলার্জির কোন সমস্যা দেখা দেয় তবে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত। দেশি মুরগির ডিমে এলার্জি খুব কম হয়। যদি হয়ে থাকে তবে আগে আপনাকে নিশ্চিত হতে হবে যে এই এলার্জির কারণ দেশি মুরগির ডিমের জন্য কিনা না অন্য কোন খাবারের জন্য।
 
যদি নিশ্চিত হয়ে যান যে দেশি মুরগির ডিম খেয়ে আপনার এলার্জি হচ্ছে তবে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে দেশি মুরগির ডিম খেতে পারেন। এতে অ্যালার্জি হওয়ার সম্ভাবনা কম হবে। আশা করি দেশি মুরগির ডিমে কি এলার্জি আছে সে সম্পর্কে উপরের আলোচনা থেকে আপনি সঠিক তথ্য পেয়েছেন।

দেশি মুরগির ডিমের অপকারিতা

দেশি মুরগির ডিমের অপকারিতা খুবই কম। তবে তা আমাদের জেনে রাখা ভালো প্রতিটি খাবারের যেমন ভালো দিক আছে তেমন কিছু ক্ষতিকারক দিক আছে। ঠিক তেমনি দেশি মুরগির ডিম ও রয়েছে কিছু ক্ষতিকারক দিক। দেশি মুরগির ডিমের অপকারিতা গুলো হলঃ

এলার্জি ও সংবেদনশীলঃ কিছু মানুষের অন্যান্য খাবারের মত ডিম খেলেও এলার্জির লক্ষণ দেখা দিতে পারে যেমন ত্বকে হতে পারে শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যা হয় এছাড়া পেটের সমস্যাও হতে পারে।

কোলেস্টেরলঃ ডিমের কুসুমে রয়েছে উচ্চ পরিমাণে কোলেস্টেরল। যাদের শরীরে কোলেস্টেরলের মাএা অতিরিক্ত বেশি ডিম খাওয়া ফলে তাদের শরীরে কোলেস্টেরলের মাএা আরো বাড়তে পারে যার ফলে পরবর্তীতে হার্টের সমস্যা বৃদ্ধি পেতে পারে।

প্রোটিনের সমস্যাঃ অতিরিক্ত ডিম খাওয়ার ফলে দেহে প্রোটিনের পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে এছাড়াও যাদের অনেক আগে থেকেই কিডনি সমস্যা আছে তাদের কিডনির সমস্যার ঝুঁকিও বাড়তে পারে।

স্যালমোনেলা সংক্রমণঃ ডিম সঠিকভাবে রান্না না করার ফলে স্যালমোনেলা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ঝুঁকি থাকে। যা খাদ্য বিষক্রিয়ার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এই ব্যাকটেরিয়ার ফলে ডায়রিয়া, বমি বমি ভাব এছাড়াও পেটে ব্যথার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।

ওজন বৃদ্ধিঃ আমরা সকলেই জানি, ডিম প্রোটিনের একটি ভালো উৎস। কিন্তু ডিম খাওয়ার ফলে শরীরে ক্যালরির মাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে। যার ফলে আমাদের ওজন বেড়ে যেতে পারে।

হাফ বয়েল ডিম খাওয়ার উপকারিতা

হাফ বয়েল ডিম খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে অনেক। প্রতিদিন একটি করে হাফ বয়েল ডিম মানে আপনার শরীরকে অতিরিক্ত পুষ্টি দেওয়ার একটি ভালো উৎস। হাফ বয়েল ডিম অতিরিক্ত পরিমাণে প্রোটিন সরবরাহ করে থাকে। এছাড়াও এটি শরীরের পেশি গঠনে সহায়তা করে থাকে এবং শরীরের শক্তি বাড়ায়। ডিমের কুসুমে রয়েছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড। যা হৃদযন্ত্রের জন্য অত্যন্ত উপকারী এবং আমাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
 
ডিমের কুসুমে লুটেইন ও জিয়াজ্যানথিন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য সহায়ক। ডিমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, ভিটামিন ডি এবং ভিটামিন বি ১২ থাকে। যা ত্বকের স্বাস্থ্য রক্ষা করতে হাড় মজবুত করতে এবং মস্তিষ্কের কার্যকারিতার উন্নতিতে অনেক সহায়তা করে। ডিম ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। 

কারণ ডিমে রয়েছে কম ক্যালোরি ও উচ্চ প্রোটিন যা দীর্ঘক্ষণ পেট ভরিয়ে রাখে ডিমে থাকা ভিটামিন এবং মিনারেল গুলো শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে তোলে। ফলে ডিম বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে অত্যন্ত কার্যকরী।

সিদ্ধ ডিম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

সেদ্ধ ডিম খাওয়ার যেমন কিছু উপকারিতা রয়েছে ঠিক তেমনি কিছু অপকারিতা রয়েছে। আমাদের খুব সাবধানতা অবলম্বন করে সেদ্ধ ডিম খাওয়া উচিত। যেমন সিদ্ধ ডিমের কিছু উপকারিতা হলো কারো কারো শুধু ডিমের সাদা অংশ পছন্দ। তারা কুসুম খেতে পছন্দ করে না। তবে ডিমের সাদা অংশ দেহে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন সরবরাহ করে থাকে। কিন্তু ডিমের কুসুম আমাদের দেহের জন্য অনেক উপকারী। বিশেষ করে ডিমের কুসুম শিশু দৈহিক বৃদ্ধি করতে অত্যন্ত সহায়তা করে। শিশুর হাড় শক্ত করে ও মেধার বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
 
ডিমে আরো রয়েছে ভিটামিন এ যা আমাদের দৃষ্টিশক্তি উন্নত করতে অধিক সহায়ক। ডিমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি, প্রোটিন, ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়াও সেদ্ধ ডিম দ্রুত ওজন কমানোর জন্য সহায়ক। চিকিৎসকরা বলেন ওমলেট ও ভেজে খাওয়ার তুলনায় সিদ্ধ করে ডিম খাওয়ায় বেশি উপকারী।
 
গবেষণায় দেখা যায় সিদ্ধ ডিম খাওয়ার ফলে দুই সপ্তাহের মধ্যে ১১ কেজি পর্যন্ত ওজন কমতে পারে। সিদ্ধ ডিমের কুসুম শরীরের ক্ষতিকর কোলেস্টোরল কমিয়ে উপকারী কোলেস্টেরল মাত্রা বাড়াতে পারে। সিদ্ধ ডিমে রয়েছে ৭৮ ক্যালোরি, ১৮৭ মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল, ২ গ্রাম সম্পৃক্ত ফ্যাট, ৫ গ্রাম ফ্যাট, ১ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ১ গ্রাম সুগার, ৬২ মিলিগ্রাম সোডিয়াম ও ৬ গ্রাম প্রোটিন।

সিদ্ধ ডিমে কিছু উপকারি দিক থাকলেও এতে কিছু কম পরিমাণ অপকারিতাও রয়েছে। যেমন দিনের ৩ টি পর্যন্ত ডিম খেলে কোন সমস্যা হবে না। কিন্তু অতিরিক্ত সিদ্ধ ডিম খাওয়া শরীরের পক্ষে মোটে ভালো না। যাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে তাদের বেশি সিদ্ধ ডিম না খাওয়াই ভালো। এছাড়াও ইউরিক এসিডের প্রবণতা থাকলে ডিম এড়িয়ে চলা উচিত। 

ডিম কম সিদ্ধ করার ফলে স্যালমোনেলা দূষণের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। যা খাদ্যে বিষক্রিয়ার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এই স্যালমোনেলা দূষণের ঝুঁকি কমাতে সিদ্ধ ডিম ভালোভাবে রান্না করতে হবে। ডিম সিদ্ধ করার ফলে অনেকেই এটিকে খাবারের জন্য অরুচি কর বলে মনে করে। আমাদের খাবারের স্বাদ বাড়ানোর জন্য অন্যান্য রেসিপিতে সিদ্ধ ডিম অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।

দেশি মুরগির ডিমের উপকারিতা

দেশি মুরগির ডিমে অনেক উপকারি দিক রয়েছে। অনেকেই হয়তো দেশি মুরগির ডিমের এই উপকারিতা গুলো সম্পর্কে জানেনা। তাহলে আসুন জেনে নেই ডিমের উপকারিতা গুলো কি। দেশি মুরগির ডিম ওজন কমাতে অনেক উপকারী। অনেকেই মনে করেন ডিম খেলে ওজন বাড়ে তবে এটি ভুল ধারণা ডিম আমাদের ওজন বাড়ায় না বরং ওজন কমাতে বেশি সাহায্য করে। ডিমের সাদা অংশে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন এই প্রোটিন পেটে খিদে কমিয়ে পেট ভরিয়ে রাখতে সহায়তা করে। 
পেট ভরা থাকলে খাবার খাওয়ার চাহিদাও কম থাকে যার ফলে শরীরের ওজন খুব সহজেই কমানো যায়। এনার্জি বাড়াতে দেশী মুরগীর ডিম অধিক সহায়ক। ডিমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন রয়েছে যা আমাদের শরীরে এনার্জি তৈরি করে। নিয়মিত ডিম খাওয়ার ফলে শরীর সুস্থ সবল থাকে। ক্যান্সার প্রতিরোধ করতেও দেশি মুরগির ডিম সহায়তা করে। ডিমে রয়েছে অধিক পরিমাণে ভিটামিন ডি, ভিটামিন ই এবং ইউনিক নামক উপাদান ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক। 

ডিম প্রোটিনের উৎস হিসেবে কাজ করে। ডিমের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন যা আমাদের দেহে ক্যালসিয়ামের অভাব দূর করে থাকে এবং হাড়কে শক্তিশালী ও মজবুত করতে সহায়তা করে। ডিমের মধ্যে থাকা উপাদান আমাদের দৃষ্টিশক্তি বাড়াতেও সাহায্য করে। নিয়মিত ডিম খাওয়ার ফলে হার্টের রক্ত জমাট বাধা থেকে বিরত থাকে এবং শরীরের রক্ত চলাচল স্বাভাবিক করতে সহায়তা করে।

ডিম খাওয়ার ফলে আমাদের দেহের খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমে এবং ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে থাকে। ডিমের মধ্যে থাকা পুষ্টিগুণ আমাদের ত্বক ভালো রাখতে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিন নিয়ম অনুযায়ী একটি করে ডিম খাওয়া উচিত। গর্ভাবস্থায় মহিলাদের দেহে পুষ্টি যোগাতে ডিম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

সচার-আচার জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর

১. প্রতিদিন কয়টি ডিম খেলে কোন ক্ষতি হবে না ?
ডিমে প্রচুর পরিমাণে কোলেস্টেরল থাকে। যা শরীরে নানান ভাবে ক্ষতি করতে পারে। কিছু বছর আগেও মনে করা হতো ডিম অতিরিক্ত খাওয়া শরীরের জন্য মোটেও ভালো না। এ ধারণাটি বর্তমানে ভুল প্রমাণিত হয়েছে। চিকিৎসকরা প্রতিদিন ৩টি করে ডিম খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

২. একটি সিদ্ধ ডিমের কত ক্যালরি থাকে ?
একটি সিদ্ধ ডিম এ প্রোটিন থাকে ৬ গ্রাম। ভালো স্বাস্থ্যকর চর্বি থাকে ৫ গ্রাম ও আরো থাকে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড সুতরাং সব মিলিয়ে একটি সিদ্ধ ডিমে আছে ৭২ ক্যালোরি।

৩. ডিম খেলে কি ওজন বাড়ে ?
ডিমের কুসুম শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল কমিয়ে ভালো কোলেস্টেরল বাড়াতে সাহায্য করে। অতিরিক্ত চর্বি কমায় এবং ডিম খেলে ওজন বাড়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।

৪. সকালে খালি পেটে ডিম খেলে কি হয় ?
আপনি যদি সকালে খালি পেটে একটি ডিম খেতে পারেন তবে ৬ গ্রামের বেশি প্রোটিন পাবেন। যা আপনার স্বাস্থ্য ভালো রাখা এবং সারাদিন শরীরকে ক্লান্ত মুক্ত রাখার জন্য যথেষ্ট।

কোন মুরগির ডিমে পুষ্টি বেশি 

কোন মুরগির ডিমে পুষ্টি বেশি ডিম খাওয়ার আগে অবশ্যই এটা জেনে নেওয়া ভালো। আমাদের দেশে অনেক ধরনের ডিম পাওয়া যায়। দেশী মুরগির ডিম, ফার্মের মুরগির ডিম ইত্যাদি সকল ডিমের পুষ্টিগুণ রয়েছে। তেমন সকল ডিমে কিছু অপকারী দিক ও রয়েছে। দেশি মুরগির ডিমের তুলনায় ফার্মের মুরগির ডিমের অপকারিতা বেশি।
আসুন তাহলে জেনে নেই কোন ডিম আপনার শরীরের জন্য বেশি উপকারী। যেকোনো ডিমের পুষ্টি গুণ মুরগির খাদ্য অভ্যাস, যত্ন এবং পরিবেশের উপর নির্ভর করে। তবে দেশি মুরগির ডিমে অন্যান্য সকল ডিমের চেয়ে অতিরিক্ত পরিমানে পুষ্টিগুণ থাকে। যেমন উদাহরণস্বরূপ বলা যায়ঃ
  • দেশি মুরগির ডিমে অধিক পরিমাণে পুষ্টি থাকে। দেশি মুরগির ডিম গুলোতে প্রোটিন, ভিটামিন এ, ভিটামিন ডি এবং অমেগা-৩ ফ্যাটি এসিডের পরিমাণ তুলনামূলক বেশি হয়ে থাকে।
  • দেশি মুরগির ডিম আমাদের চোখের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
  • দেশি মুরগির ডিমের মধ্যে রয়েছে এন্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের কোষের ক্ষতিরোধ করতে সাহায্য করে।
  • দেশি মুরগির ডিমের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন কে, যা আমাদের শরীরের রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে এবং হাড় মজবুত করে।
  • দেশি মুরগির ডিম আমাদের শরীরে রক্ত কণিকা গঠন করে এবং সায়ুতন্ত্রের কার্যকারিতা সঠিক রাখে।
  • দেশি মুরগির ডিম কোষ বিভাজন এবং গর্ভ অবস্থায় DNA সংশ্লেষণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  • দেশি মুরগির ডিম ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

লাল ডিমের উপকারিতা

লাল ডিমের উপকারিতা রয়েছে অনেক তবে লাল ডিম এবং সাদা ডিম এই দুই ধরনের ডিমের পুষ্টিগুণে বিশেষ কোনো তফাৎ নেই। তবে গবেষকদের মতে লাল ডিমে একটু বেশি অমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড রয়েছে। কিন্তু এই এসিড এতটাই কম যে এতে খুব একটা ফারাক হয় না। একটি ৫০ গ্রাম ওজনের ডিমে ৪.৭৫ গ্রাম ফ্যাট রয়েছে ও ৭২ ক্যালরি রয়েছে। সাদা ডিম ও লাল ডিম পুষ্টি গুণের পরিমান প্রায় একই।

শেষ কথা-ফার্মের মুরগির ডিমের অপকারিতা

ফার্মের মুরগির ডিমের অপকারিতা নিয়ে লেখা আজকের আর্টিকেলটি পড়ে আপনি সমস্ত বিষয়গুলো বুঝতে পেরেছেন বলে আমি আশা করছি। আজকের আর্টিকেলে আমরা শুধু ফার্মের মুরগির ডিমের অপকারিতা, কোন মুরগির ডিমে পুষ্টি বেশি, দেশি মুরগির ডিমের উপকারিতা, সিদ্ধ ডিম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা, দেশি মুরগির ডিমের অপকারিতা বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আমাদের আর্টিকেলটি পরে যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন তবে অবশ্যই প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না।

আর এমন নতুন নতুন স্বাস্থ্য বিষয়ক টিপস যদি আপনি নিয়মিত পেতে চান তাহলে অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো দিয়ে রাখুন। কারন আমরা প্রতিনিয়ত এরকম নতুন নতুন স্বাস্থ্য বিষয়ক টিপস আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে থাকি। আর এই আর্টিকেলটি সম্পর্কে আপনার যদি কোন মন্তব্য থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে জানিয়ে দিবেন।  খুব দ্রুত আপনার প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বিডি অনলাইন আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url