গর্ভাবস্থায় জাফরান খাওয়ার ২০টি উপকারিতা

গর্ভাবস্থায় জাফরান খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে প্রতিটি গর্ভবতী মায়েরই জেনে রাখা জরুরী। কারণ জাফরান একটি উপকারী খাদ্য। বিশেষ করে যারা গর্ভবতী তাদের জন্য জাফরান একটি উপকারী খাদ্য হিসেবে খুব জনপ্রিয়।
গর্ভাবস্থায় জাফরান খাওয়ার ২০টি উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা ফর্সা হয়, গর্ভাবস্থায় খেজুর খেলে কি হয়, গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা বুদ্ধিমান হয়, গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা ওজন বাড়ে ইত্যাদি সমস্ত বিষয় সম্পর্কে আমরা আজকে আর্টিকেলের ভেতরে আলোচনা করতে চলেছি তাই অবশ্যই আজকের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়া শুরু করুন।
পেজ সূচিপএ

গর্ভাবস্থায় জাফরান খাওয়ার উপকারিতা

গর্ভাবস্থায় জাফরান খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে যদি জানা না থাকে তাহলে আমাদের আজকের আর্টিকেলের এই অংশ থেকে জেনে নিতে পারেন। জাফরান বিভিন্ন মসলার ভেতরে একটি মূল্যবান মসলা। জাফরান খুব কম সংখ্যক দেশে পাওয়া যায়। জাফরান সাধারণভাবে ভারত, স্পেন, ইরান ও কিসের মত দেশগুলোতে স্বল্প পরিসরে উৎপাদিত হয়। 

জাফরানের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন সি, ম্যাগনেসিয়াম ও আরো বিভিন্ন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এই উপাদানগুলো একজন গর্ভবতী নারীর জন্য খুব জরুরী। চলুন তাহলে গর্ভাবস্থায় জাফরান খাবার ২০টি উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
  • মানসিক চাপ কমেঃ গর্ভাবস্থায় যে কোন নারীর একটি সাধারণ সমস্যা হল মানসিক চাপ। আর এই মানসিক চাপ সৃষ্টি হয় হরমোনের বিভিন্ন পরিবর্তনের কারণে। জাফরানের মধ্যে রয়েছে প্রাকৃতিকভাবে সেরোটোনিন উপাদান। আপনি যদি গর্ভাবস্থায় জাফরান খান তাহলে প্রাকৃতিক ভাবে আপনার শরীরে সেরোটোনিন বাড়িয়ে জাফরান মুড ভালো রাখতে সাহায্য করে।
  • হজম প্রক্রিয়া উন্নত করেঃ জাফরান হজম প্রক্রিয়া উন্নত করতে সহায়তা করে। আর গর্ভাবস্থায় হজমের সমস্যা দেখা দেয়। তাই হজম প্রক্রিয়া উন্নত করতে আপনি গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন জাফরান খেতে পারেন।
  • রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করেঃ জাফরানের মধ্যে রয়েছে পটাশিয়াম ও ক্রোসিন। তাই গর্ভাবস্থায় আপনি যদি প্রতিদিন জাফরান খান তাহলে আপনার শরীরের রক্ত প্রবাহ ঠিক থাকে এবং শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে।
  • গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কমায়ঃ গর্ভাবস্থায় আমাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা একটি সাধারণ সমস্যা। আপনি যদি গর্ভাবস্থায় খুব বেশি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় ভুগেন তাহলে প্রতিদিন জাফরান খেতে পারেন। জাফরান গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা খুব সহজেই কমাতে সহায়তা করে।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃ জাফরানের মধ্যে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যেগুলো আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। তাই গর্ভাবস্থায় আপনি যদি শরীলকে সঠিকভাবে সুস্থ রাখতে চান তাহলে অবশ্যই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় জাফরান রাখুন।
  • অ্যানিমিয়া প্রতিরোধ করেঃ জাফরানের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন। তাই গর্ভাবস্থায় জাফরান খেলে আমাদের রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি পায় ফলে শরীলে আয়রনের ঘাটতি পূরণ হয়।
  • মাংসপেশির ব্যথা কমায়ঃ জাফরান মাংসপেশির ব্যথা কমাতে সহায়তা করে। জাফরানের মধ্যে রয়েছে এন্টি ইনফ্লেমেটরি গুণাবলী। তাই গর্ভাবস্থায় আপনার যদি কোমর ব্যথা, পা ব্যথা ইত্যাদির সমস্যা হয় তাহলে জাফরান খেতে পারেন।
  • ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়ঃ গর্ভাবস্থায় হরমোনের বিভিন্ন তারতম্যের কারণে ত্বকের উজ্জ্বলতা কমে যায়। তাই আপনি যদি ত্বকের উজ্জ্বলতা ঠিক রাখতে চান তাহলে গর্ভাবস্থায় জাফরান খেতে পারেন।
  • হৃদযন্ত্র ভালো থাকেঃ গর্ভাবস্থায় আমাদের হৃদযন্ত্রের ওপরে চাপ বেড়ে যায়। প্রতিদিন জাফরান খেলে গর্ভাবস্থায় আমাদের হৃদ যন্ত্র ভালো থাকে।
  • ভালো ঘুমের সহায়তা করেঃ গর্ভাবস্থায় আমাদের ঘুমের সমস্যা হয়। জাফরান ঘুম উদ্দীপক হিসেবে কাজ করে। তাই গর্ভাবস্থায় ভালো ঘুম আসার জন্য আপনি জাফরান খেতে পারেন।।
  • হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখেঃ গর্ভাবস্থায় আমাদের হরমোনের সমস্যা হয়। তাই হরমোনের সমস্যা ঠিক রাখার জন্য আপনি প্রতিদিন জাফরান খেতে পারেন। জাফরান হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করে।
  • বমি বমি ভাব কমায়ঃ গর্ভাবস্থায় সকালবেলা আমাদের বমি বমি ভাব বেশি হয়। আপনি যদি গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন জাফরান খান তাহলে বমি বমি ভাব খুব সহজেই কমে যাবে।
  • রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া বৃদ্ধি পায়ঃ জাফরান গর্ভাবস্থায় রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। নিয়মিত জাফরান খেলে শরীরে অক্সিজেনের প্রবাহ বৃদ্ধি পায় এবং মা ও শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হয়।
  • পেশীর খিচুনি কমেঃ গর্ভাবস্থায় নিয়মিত জাফরান খেলে পেশীর খিচুনি কমে ও পেশির ব্যথা দূর হয়।
  • হাড় মজবুত হয়ঃ জাফরান হাড় মজবুত করতে সহায়তা করে। আপনি যদি নিয়মিত জাফরান খান তাহলে আপনার শরীরের হাড় মজবুত হবে এবং শিশুর হাড় সঠিকভাবে বিকাশ হতে পারবে।
  • প্রদাহ কমেঃ জাফরান প্রদাহ কমাতে সহায়তা করে কারণ জাফরানের মধ্যে রয়েছে এন্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান। তাই গর্ভাবস্থায় শরীরের বিভিন্ন ধরনের প্রদাহ কমানোর জন্য জাফরান খাওয়া জরুরী।
  • স্মৃতিশক্তি বাড়াইঃ জাফরান স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সহায়তা করে কারণ জাফরের মধ্যে রয়েছে ক্রোসিন ও ক্রোসেটিন উপাদান। আর এই উপাদান দুটি আমাদের মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়িয়ে স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সহায়তা করে।
  • শিশু ত্বক উজ্জ্বল করেঃ অনেকেই ধারণা করেন যে গর্ভাবস্থায় জাফরান খেলে শিশু ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়।
  • ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখেঃ গর্ভাবস্থায় জাফরান খেলে আমাদের ওজন নিয়ন্ত্রণের ভেতরে থাকে। জাফরান শরীরের ওজন বাড়তে দেয় না এবং মেটাবলিজম ঠিক রাখতে সহায়তা করে।
  • প্রসবে সহায়তা করেঃ গর্ভাবস্থায় নিয়মিত জাফরান খেলে জরায়ুর বেশি শিথিল হয় এবং প্রসব কালীন সময় কম কষ্ট হয়।

সতর্কতা

গর্ভাবস্থায় জাফরান খাওয়ার উপকারিতা হলেও অতিরিক্ত পরিমাণে জাফরান খাওয়া উচিত না এতে আপনার গর্ভপাতের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। গর্ভাবস্থায় দৈনিক তিন থেকে চারটি জাফরান খাওয়া আপনার জন্য নিরাপদ তবে গর্ভাবস্থায় প্রথম বারো সপ্তাহ জাফরান এড়িয়ে চলাই ভালো কারণ জাফরান শরীরের তাপমাত্রা বাড়ায় ফলে আপনার গর্ভপাতের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে। আর গর্ভাবস্থায় যে কোন খাবার খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরী।

গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা ফর্সা হয়

গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা ফর্সা হয় অনেক খোঁজাখুঁজি করার পরও সঠিক তথ্য পাচ্ছেন না তাহলে আমাদের আজকের আর্টিকেল থেকে আপনি জেনে নিতে পারেন গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা ফর্সা হয় সে সম্পর্কে সঠিক তথ্য। আমরা যখন গর্ভবতী হয় তখন অনেকের মনের ভেতরে একটি ধারণা রয়েছে যে বাচ্চা সুন্দর ও ফর্সা হওয়া জরুরি। তবে আমি মনে করি বাচ্চা সুন্দর ও ফর্সা হওয়ার আগে একটি সুস্থ বাচ্চা জন্ম নেওয়া জরুরি। 
গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা ফর্সা হয় জেনে নিন
গর্ভাবস্থায় অনেকেই রয়েছেন যারা বাচ্চা ফর্সা করার জন্য বিভিন্ন ধরনের খাবার খেয়ে থাকেন। বিভিন্নভাবে গুগলে সার্চ দিয়ে থাকেন যে কিভাবে বাচ্চা ফর্সা করা যায় সেই উপায় সম্পর্কে। তবে বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে বাচ্চার ত্বকের রং পরিবর্তন করার জন্য কোন খাবারের ভূমিকা নেই। বাচ্চা ত্বকের রং পরিবর্তন হয় মূলত জেনেটিক ফ্যাক্টর এর ওপর ভিত্তি করে। 

অনেকের মধ্যে ভুল ধারণা রয়েছে যে বাচ্চার গায়ের রং খাবার কিংবা বিভিন্ন ধরনের পানীয় খাওয়ার ওপর নির্ভর করে। বৈজ্ঞানিকভাবেই কোন প্রমাণ নেই বাচ্চার গায়ের রং পরিবর্তন নির্ভর করে কোন খাবারের ওপর। তবে আপনি যদি গর্ভাবস্থায় সঠিক নিয়ম এবং পুষ্টিকর খাবার খান তাহলে আপনার বাচ্চার স্বাস্থ্য ও মানসিক উন্নতি খুব দ্রুত হয় এবং বাচ্চার শরীর সুস্থ থাকে। 
তাই গর্ভাবস্থায়ী অবশ্যই প্রতিটি গর্ভবতী মায়ের উচিত ফলমূল, শাকসবজি, বাদাম ও প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া। এতে গর্ভবতী মায়ের ও শরীর ভালো থাকবে এবং গর্ভের ভ্রুনের বিকাশ সঠিকভাবে হবে। আশা করি গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা ফর্সা হয় সে সম্পর্কে আপনি সঠিকভাবে জানতে পেরেছেন। আপনি যদি গর্ভবতী হয়ে থাকেন তাহলে এমন ভুল ধারণা ত্যাগ করে পুষ্টিকর ও সুস্বাদু খাবার নিয়মিত খাওয়ার চেষ্টা করুন।

গর্ভাবস্থায় নুডুলস খেলে কি হয়

গর্ভাবস্থায় নুডুলস খেলে কি হয় সে সম্পর্কে আমরা আপনাদের এখন বিস্তারিত জানাবো আর্টিকেলের ওপরের অংশে আমরা আপনাদের গর্ভাবস্থায় জাফরান খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছি। নুডুলস ছোট এবং বড় সকলেরই প্রিয় একটি খাবার। নুডুলস খেতে পছন্দ করে না এমন মানুষের সংখ্যা খুবই কম। 

লুডুস খেতে যেমন সুস্বাদু তেমন দেখতে অনেক লোভনীয় হয়ে থাকে তাই নুডুলস সকলের কাছে খুব জনপ্রিয় একটি খাবার। কিন্তু গর্ভাবস্থায় আমরা প্রতিটি খাবারের বিষয়ে খুব গুরুত্ব দেই। গর্ভাবস্থায় যে কোন খাবার খাওয়ার আগে অবশ্যই সে খাবারের ভালো-মন্দ দুটো দিকই বিচার করা জরুরী। তাহলে গর্ভাবস্থায় খাবার খেয়ে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। চলুন তাহলে জেনে গর্ভাবস্থায় নুডুলস খেলে কি হয় এবং গর্ভাবস্থায় কতটুকু নুডুস আপনার জন্য নিরাপদ। 

চিকিৎসকরা মনে করেন যে গর্ভাবস্থায় একজন গর্ভবতী মায়ের নুডুলস না খাওয়াই উচিত কারণ নুডুলস রান্না করার সময় অনেক মসলা দেওয়া হয়। আর অনেক মসলাযুক্ত খাবার একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য ক্ষতি হতে পারে। আপনি যদি গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত পরিমাণে নুডুলস খান তাহলে আপনার অকাল গর্ভপাত ঘটতে পারে কারণ নুডুলস ভ্রুনের স্বাভাবিক বৃদ্ধি প্রতিহত করে। 

নুডুসের মধ্যে ক্ষতিকর উপাদান রয়েছে আর সেটি হল মনোসোডিয়াম গ্লুটামেট। তাই আপনি যদি অতিরিক্ত পরিমাণে নুডুলস খান তাহলে আপনার বাচ্চার ক্ষতি হতে পারে। তাছাড়া নুডুলসে বেশি পরিমাণে ময়দা থাকে ফলে নুডুলসের মধ্যে খুবই কম পরিমাণে পুষ্টি গুণ রয়েছে। একজন গর্ভবতী মা যদি অতিরিক্ত পরিমাণে নুডুলস খায় তাহলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে। 

নুডুসের মধ্যে অতিরিক্ত মাত্রায় ফ্যাট থাকে। তাই আপনি যদি গর্ভাবস্থায় নুডুলস খান তাহলে শরীরে অতিরিক্ত ফ্যাট সৃষ্টি হতে পারে। আপনার যদি নুডুস অনেক বেশি প্রিয় হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই কম মশলা দিয়ে পরিমাণের চেয়ে কম খেতে পারেন এতে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কম থাকে। আশা করি গর্ভাবস্থায় নুডুলস খেলে কি হয় সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।

গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা লম্বা হয়

গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা লম্বা হয় সে সম্পর্কে চলুন আপনাদের বিস্তারিত জানাই। গর্ভাবস্থায় প্রতিটি মায়ের সবচেয়ে বেশি চিন্তার কারণ থাকে বাচ্চা ফর্সা হবে না কালো, বাচ্চা লম্বা হবে না খাটো হবে সে বিষয় সম্পর্কে। প্রতিটি মা চাই তার বাচ্চা সুঠামদেহ এবং স্বাস্থ্যবান দেহের অধিকারী হোক। সন্তান লম্বা হবে না খাটো হবে তা সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করে সন্তানের জেনেটিক হরমোনের ওপর। 

আবার অনেকেই মনে করেন বাবা-মা লম্বা হলে সন্তান লম্বা হয়। অনেক সময় জেনেটিক হরমোন ঠিক এবং বাবা-মা লম্বা হলেও সন্তান খাটো হতে দেখা যায়। আবার অনেক সময় একই মা-বাবার সন্তান হওয়ার পরও দুই সন্তানের ভেতর একটি সন্তান খাটো ও লম্বা হয়ে থাকে। আসলেই এরকম সমস্যা হয় বাবা-মার অসচেতনতা, পুষ্টিহীনতা কারণে। 

বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিহীনতার সমস্যার কারণে গর্ভের সন্তান লম্বা হয় না। আপনি যদি আপনার সন্তানকে লম্বা, সুঠাম এবং স্বাস্থ্যবান দেহের অধিকারী হিসেবে জন্ম দিতে চান তাহলে অবশ্যই আয়রন, ক্যালসিয়াম, জিংক, ফলিক এসিড, ফলমূল, প্রোটিন, ভিটামিন ইত্যাদি খাদ্য তালিকায় রাখুন এবং প্রতি তিন মাস অন্তর অন্তর ডাক্তারের পরামর্শ নিন। আশা করি বুঝতে পেরেছেন গর্ভাবস্থায় কি খেলে আপনার বাচ্চা লম্বা হবে।

গর্ভাবস্থায় খেজুর খেলে কি হয়

গর্ভাবস্থায় খেজুর খেলে কি হয় সে সম্পর্কে এখন আমরা বিস্তারিত জানবো। একজন গর্ভবতী মাকে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিকর খাবারের পাশাপাশি ভিটামিনযুক্ত খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা। গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন ধরনের ফলমূল খাওয়া জরুরী। আর এই ফলমূলের ভেতরে খেজুর অন্যতম। খেজুরের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ। 

একজন গর্ভবতী মায়ের শরীর সুস্থ রাখার জন্য এবং ভ্রুনের সঠিক বিকাশের জন্য খেজুর অনেক উপকারী একটি খাদ্য। গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন খেজুর খেলে শরীরের দুর্বলতা দূর হয় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। গর্ভাবস্থায় খেজুর খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর হয়। খেজুর জরায়ু শক্তিশালী করতে সহায়তা করে। গর্ভাবস্থায় খেজুর খেলে হাড় মজবুত হয় এবং গর্ভের সন্তানের হাড়ের সঠিক বিকাশ হয়। 
খেজুরের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ তাই গর্ভাবস্থায় খেজুর খেলে আমাদের চোখের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি পায়। খেজুর উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের সহায়তা করে। গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য খেজুর খাওয়া উচিত। খেজুর হৃদপিণ্ড, লিভার এবং কিডনির স্বাস্থ্য ভালো রাখতেও সহায়তা করে। গর্ভাবস্থায় খেজুর খেলে স্টোকের ঝুঁকি কমে। তবে খেজুর উপকারি বলে গর্ভাবস্থায় যত ইচ্ছে তত খেতে পারবেন না অবশ্যই খেজুরের পরিমাণ ঠিক রাখা জরুরি।

গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা বুদ্ধিমান হয়

গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা বুদ্ধিমান হয় সে সম্পর্কে প্রতিটি মায়ের জানা উচিত কারণ গর্ভাবস্থায় প্রতিটি বাচ্চার ২৫ ভাগ ব্রেনের বিকাশ ঘটে। তাই গর্ভাবস্থায় বাচ্চাকে বুদ্ধিমান করতে হলে অবশ্যই কিছু নির্দিষ্ট খাবার খাদ্য তালিকায় যোগ করা উচিত। এমন কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো গর্ভাবস্থায় খেলে আপনার বাচ্চার মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায় এবং স্মৃতিশক্তি বাড়ে। 

গর্ভাবস্থায় আপনি যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে মাছ, ডিম এবং দুধ জাতীয় খাবার খান তাহলে বাচ্চার মস্তিষ্কের বিকাশ সুষ্ঠুভাবে হয়। তাছাড়া গর্ভাবস্থায় বাচ্চাকে বুদ্ধিমান করার জন্য বীজ জাতীয় খাবার বেশি পরিমাণে খাওয়া উচিত। গর্ভাবস্থায় আয়রন যুক্ত খাবারের উপরে বেশি পরিমাণে নজর দিতে হবে। ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিডের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণ রয়েছে। 

তাই যেসব খাবারে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড রয়েছে সেসব খাবার গর্ভাবস্থায় খাওয়া উচিত। তাছাড়া আপনি যদি কর্ম অবস্থায় বাচ্চাকে বুদ্ধিমান করতে চান তাহলে অবশ্যই প্রচুর পরিমাণে সবুজ শাকসবজি খান। আশা করি গর্ভাবস্থায় কি কি খাবার খেলে আপনার বাচ্চা বুদ্ধিমান হবে সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।

গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চার ওজন বাড়ে

গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চার ওজন বারে সে সম্পর্কে এখন আমরা বিস্তারিত আপনাদের জানাবো। গর্ভাবস্থায় অনেক সময় আমাদের বাচ্চার ওজন অনেক কম থাকে। আর বাচ্চা ওজন কম থাকার কারণে জন্মের পরে মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে। 
গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চার ওজন বাড়ে
তাই গর্ভাবস্থায় বাচ্চার ওজন নিয়ন্ত্রণের ভেতরে রাখা জরুরি। আপনি যদি গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিকর খাবার খান তাহলে আপনার বাচ্চার ওজন বাড়বে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণের ভেতরে থাকবে। চলুন তাহলে জেনে নেই গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চার ওজন বাড়ে।

  • গর্ভাবস্থায় আশঁ ও ভিটামিন বিযুক্ত খাবার খেলে বাচ্চার ওজন বাড়ে। যেমন রুটি, অটমিল, ব্রাউন রাইস ইত্যাদি খাবার।
  • গর্ভাবস্থায় পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিনযুক্ত খাবার খেতে হবে যেমন মাছ-মাংস, ডিম, বাদাম, মটরশুঁটি, সয়াবিন ইত্যাদি। এই খাবারগুলো শিশুর পেশি ও টিস্যু গঠনে সাহায্য করে এবং ওজন বাড়ায়।
  • গর্ভাবস্থায় পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালরিযুক্ত খাবার খেতে হবে যেমন খেজুর, বাদাম, কিসমিস ইত্যাদি।
  • গর্ভাবস্থায় বীজ জাতীয় খাবার খেলে বাচ্চার ওজন খুব তাড়াতাড়ি বৃদ্ধি পায় যেমন চিয়া বীজ, আখরোট ইত্যাদি।
  • গর্ভাবস্থায় ক্যালসিয়াম যুক্ত খাবার খেলে বাচ্চার ওজন খুব তাড়াতাড়ি বৃদ্ধি পায়।
  • গর্ভাবস্থায় দুধ ও দুগ্ধ জাত খাবার বেশি পরিমাণে খাওয়া উচিত।
  • ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার খেলে গর্ভের বাচ্চার ওজন খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং মস্তিষ্কের কার্যকারিতা করে।
  • তাছাড়া গর্ভাবস্থায় বাচ্চার ওজন বৃদ্ধি করার জন্য আপনি প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খেতে পারেন। পানি বাচ্চা স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়তা করে এবং ওজন বৃদ্ধি করে।

লেখকের বক্তব্য - গর্ভাবস্থায় জাফরান খাওয়ার উপকারিতা

গর্ভাবস্থায় জাফরান খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আশা করি আপনারা জেনে গেছেন এবং সাথে সাথে গর্ভাবস্থায় কি কি খাবার খেলে আমাদের স্বাস্থ্য ভালো থাকে সে সম্পর্কে একটি ভালো ধারণা পেয়েছেন। আপনি যদি একজন গর্ভবতী হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। 
তবে আমি মনে করি গর্ভাবস্থায় যে কোন খাবার পরিমাণ মতন খেলে কোন ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। প্রিয় পাঠক, আমাদের আর্টিকেলটি কেমন লেগেছে আপনার? যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের আর্টিকেলটি আপনার প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করুন। 

এতে আরো গর্ভবতী অনেক মা গর্ভাবস্থায় জাফরান খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবে। আর আর্টিকেল সম্পর্কে আপনার যদি কোন মন্তব্য থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে জানাবেন। আমরা সব সময় আপনাদের মন্তব্যের অপেক্ষায় থাকি। আর এতক্ষণ আমাদের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য শুভেচ্ছা।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বিডি অনলাইন আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url