হাতিশুর গাছের শিকড় কোমরে বাঁধলে কি হয়
হাতিশুর গাছের শিকড় কোমরে বাঁধলে কি হয় সে সম্পর্কে আপনার যদি জানা না থাকে তাহলে আমাদের আজকের আর্টিকেল থেকে জেনে নিতে পারেন। আমরা আজকের আর্টিকেলে হাতিশুর গাছ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।
হাতিশুর গাছ অনেকেই চিনেনা তাই হাতিশুর গাছের শিকড়ের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে অনেকেরই তেমন কোন ধারনা নেই। হাতিশুর গাছের শিকড় খাওয়ার নিয়ম, হাতিশুর গাছ কোথায় পাওয়া যায়, হাতিশুর গাছের উপকারিতা ও অপকারিতা, হাতিশুর গাছের পাতা খাওয়ার নিয়ম ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে আমরা আপনাদের বিস্তারিত জানাবো।
পেজ সূচিপএ
হাতিশুর গাছের শিকড় কোমরে বাধলে কি হয়
হাতিশুর গাছের শিকড় কোমরে বাধলে কি হয় এ বিষয় সম্পর্কে অনেকেই জানতে চাই কারণ বহু যুগ আগে থেকে হাতিশুর গাছ বিভিন্ন ধরনের আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে। আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকরা মনে করে যে হাতিশুর গাছে শিকড় কোমরে বাধলে ধাতুর সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। আপনি যদি এক ইঞ্চি পরিমাণ হাতিশুর গাছের শিকড় কেটে সুতা দিয়ে কোমরে মাঝামাঝিতে বেঁধে রাখেন তাহলে ধাতুর সমস্যা থেকে মুক্তি মিলে।
হাতিশুর গাছের শিকড় কোমরে বাধলে ধাতুর সমস্যা, যৌন সমস্যা ও বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা থেকে মুক্তি হতে পারে। অনেকেই আবার হাতিশুর গাছের শিকড় শরীরের বিভিন্ন ধরনের ব্যথা কমানোর জন্য কোমরে বেধে থাকে। কেউ কেউ আবার মনে করেন যে হাতিশুর গাছের শিকড় কোমরে বাধলে শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি পায়।
আরো পড়ুন: বেল পাতার ১৬টি উপকারিতা ও অপকারিতা
আগের যুগে হাতিশুর গাছের শিকড় বিভিন্ন ধরনের অশুভ শক্তির হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য কোমরে ব্যবহার করা হতো। মোট কথাই অনেকের বিশ্বাস করে যে হাতিশুর গাছের শিকড় কোমরে বাধলে বিভিন্ন ধরনের রোগ থেকে মুক্তি মিলে। হাতিশুর গাছের শিকড় উপকারী তবে অনেক সময় হাতিশুর গাছের শিকড় কোমরে বাঁধলে আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সাথে সাথে এলার্জি সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
আপনি যদি হাতিশুর গাছের শিকড় কোমরে বেঁধে বিভিন্ন ধরনের রোগ নিরাময় করতে চান তাহলে অবশ্যই একজন ভালো আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। আশা করি হাতিশুর গাছের শিকড় কোমরে বাঁধলে কি হয় সে সম্পর্কে আমরা আপনাকে বিস্তারিত জানাতে পেরেছি।
হাতিশুর গাছের শিকড় খাওয়ার নিয়ম
হাতিশুর গাছের শিকড় খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে এখন আমরা আপনাদের জানাবো উপরে আমরা হাতিশুর গাছের শিকড় কোমরে বাধলে কি হয় সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করেছি। হাতিশুর গাছের শিকড় শুধু কোমরে বাঁধলে উপকার পাওয়া যায় না আপনি যদি মুখে খেয়ে থাকেন তাতেও উপকার মিলে অনেক। হাতিশুর গাছ একটি উপকারী গাছ এবং ভেষজ উদ্ভিদ হিসেবে পরিচিত।
বিভিন্ন ধরনের রোগের কারণে হাতে সর গাছের শিকড় খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা। যেমন আপনার যদি শরীরের কোথাও ফুলে যায় তাহলে হাতিশুর গাছে শিকড় খেলে উপকার পাওয়া যায়। ঠান্ডা জনিত যেকোনো সমস্যার সমাধান পেতে আপনি হাতিশুর গাছের শিকড় খেতে পারেন। হাতিশুর গাছটি ওষুধিগুণ সম্পন্ন একটি গাছ এবং বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে থাকে। হাতিশুর গাছের শিকড় খাওয়ার নিয়ম আপনার রোগের ওপর নির্ভর করছে।
চিকিৎসকরা আপনার রোগ আগে ভালোভাবে নির্ণয় করে তারপর হাতিশুর গাছের শিকড় খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত পরামর্শ দিয়ে থাকে। বহু প্রাচীনকাল আগে থেকেই হাতিশুর গাছের শিকড় যৌন রোগের চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত হয়ে আসছে। হাতিশুর গাছের শিকড় খাওয়ার বিভিন্ন নিয়ম রয়েছে তবে আপনি যদি দুই নিয়মে প্রতিদিন হাতিশুর গাছের শিকড় খেতে পারেন তাহলে অবশ্যই হাতিশুর গাছের শিকড় থেকে সঠিক উপকারিতা পাবেন।
আরো পড়ুন: বীর্য মনি পাউডার খাওয়ার নিয়ম
হাতিশুর গাছের শিকড় সংগ্রহ করার জন্য অবশ্যই আপনাকে পূর্ণবয়স্ক হাতিশুর গাছ নির্বাচন করতে হবে। যদি দেখেন যে আতিশুর গাছে অনেকগুলো ফুল ধরে আছে এবং পাতার রং হলদে হয়ে গেছে তাহলে সেই গাছটি একটি পূর্ণবয়স্ক হাতিশুর গাছ হিসেবে আমরা বলতে পারি। এমন পূর্ণবয়স্ক হাতিশুর গাছ থেকে শিকড় সংগ্রহ করলে আপনি অনেক বেশি উপকৃত হবেন। কারণ পূর্ণ বয়স্ক হাতিশুর গাছের শিকড় এ সর্বোচ্চ পুষ্টিগুণ বিদ্যমান থাকে। চলুন তাহলে হাতিশুর গাছের শিকড় খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আপনাদের জানাই।
- একটি পূর্ণবয়স্ক গাছের শিকড় ১ ইঞ্চি থেকে ২ ইঞ্চি কেটে নিয়ে খুব ভালোভাবে ধুয়ে একটি বড় পানের ভেতরে মধু ও কালোজিরা একসাথে নিয়ে চিবিয়ে খেতে হবে। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার অন্তত এক ঘন্টা আগে আপনি যদি এই পদ্ধতি অবলম্বন করে হাতিশুর গাছের শিকড় খেয়ে থাকেন তাহলে আপনার যৌন চাহিদা অনেক বেশি বৃদ্ধি পায় এবং যৌন অক্ষমতা দূর হয়।
- রাতে আপনি যে নিয়মে হাতিশুর গাছের শিকড় খাচ্ছেন ঠিক একই নিয়মে সকালে খালি পেটে পানের সাথে মিশিয়ে মধু ও কালোজিরা যদি খান তাহলে উপকার পাবেন। তবে হাতিশুর গাছের শিকড় রাতের বেলা খেলে অনেক বেশি উপকার পাওয়া যায়।
- আপনার শরীরের যদি কোথাও ফুলে যায় তাহলে হাতিশুর গাছের শিকড় খুব ভালোভাবে থেটলিয়ে রস বের করে সেই রস হালকা গরম করে ৩/৪ দিন পান করুন।
- ঠান্ডার সমস্যা থাকলে হাতিশুর গাছের শিকড় খুব ভালোভাবে পানিতে সিদ্ধ করে সিদ্ধ করা পানি ৫-৬ দিন খান এতে উপকার পাবেন।
এছাড়া আপনি হাতিশুর গাছ থেকে ভালো ফলাফল পেতে চান তাহলে অবশ্যই টানা ৭ দিন হাতিশুর গাছের শিকড় খেয়ে দেখতে পারেন। আপনি যদি টানা সাত দিন হাতিশুর গাছের শিকড় খেয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই নিজেই ফলাফল বুঝতে পারবেন। এছাড়া হাতিশুর গাছের শিকড় আপনি ত্বকের উপরে ব্যবহার করেও ভালো ফলাফল পেতে পারেন।
ত্বকের কোথাও যদি কেটে যায় কিংবা ফুলে যায় তাহলে হাতিশুর গাছের শিকড় থেতলিয়ে রস বের করে আক্রান্ত স্থানে লাগাতে পারেন। হাতিশুর গাছের শিকড় কখনোই অতিরিক্ত পরিমাণে খাবেন না। হাতিশুর গাছের শিকড় খাওয়ার আগে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের আয়ুর্বেদিক পরামর্শ নিন। আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী হাতিশুর গাছের শিকড় খেলে অনেক বেশি উপকৃত হতে পারবেন এবং হাতিশুর গাছের শিকড় থেকে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকবে।
হাতিশুর গাছ কোথায় পাওয়া যায়
হাতিশুর গাছ কোথায় পাওয়া যায় সে সম্পর্কে অনেকেই প্রশ্ন করে থাকে কারণ হাতিশুর গাছ খুবই উপকারী একটি গাছ। হাতিশুর গাছ সাধারণভাবে গ্রাম অঞ্চলে অনেক বেশি দেখা যায়। বিভিন্ন ধরনের বনে জঙ্গলে, পাহাড়ি এলাকা, মাঠে, নদীর উপকূলীয় এলাকায় হাতিশুর গাছ বেশি পরিমাণে পাওয়া যায়। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের পরিত্যক্ত বিল্ডিং এর আশেপাশে হাতিশুর গাছ বেশি পরিমাণে দেখা যায়। হাতিশুর গাছ সাধারণত বছরে একবার জন্মায়।
তাই হাতিশুর গাছ একবর্ষজীবী গাছ হিসেবে সকলেই কাছে পরিচিত। হাতিশুর গাছ বেশি পাওয়া যায় দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এলাকায়। এছাড়া নেপাল, ভারত, বাংলাদেশ, শ্রীলংকা ইত্যাদি দেশেও অনেক পরিমাণে হাতিশুর গাছ জন্মে। অনেক সময় আমরা হাতিশুর গাছ না চেনার কারণে হাতিশুর গাছ খুঁজে পাই না। তাই আগে অবশ্যই হাতিশুর গাছ ভালোভাবে চিনে নিবেন। তাহলে খুব সহজেই আপনি বিভিন্ন জায়গা থেকে হাতিশুর গাছ পেতে পারেন। হাতিশুর গাছ কোথায় পাওয়া যায় আশা করি সে সম্পর্কে আপনি জানতে পেরেছেন।
হাতিশুর গাছের উপকারিতা ও অপকারিতা
হাতিশুর গাছের উপকারিতা ও উপকারিতা সম্পর্কে অনেকেরই জানা নেই কারণ হাতিশুর গাছ খুব কম পরিচিত সকলের কাছে। বিভিন্ন ধরনের আয়ুর্বেদিক চিকিৎসার জন্য হাতিশুর গাছ ব্যবহার করা হয়। হাতিশুর গাছের বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা রয়েছে। চলুন তাহলে জেনে নেই হাতিশুর গাছের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে।
হাতিশুর গাছের উপকারিতা
- শরীরের কোথাও যদি ফোলা ভাব দেখা দেয় তাহলে হাতিশুর গাছের পাতার রস লাগালে ফোলা ভাব দূর হয়।
- দেহে বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে হাতিশুর পাতার রস ব্যবহার করা হয়। যেমন লাল লাল চাকা চাকা দাগ, কালো দাগ, এলার্জি ইত্যাদি সমস্যা।
- বিভিন্ন ধরনের পোকামাকড়ের বিষক্রিয়া কমাতে হাতিশুর গাছের পাতা ব্যবহার করা হয়।
- হাতিশুর গাছের শিকড় ভেজানো পানি খেলে খুব তাড়াতাড়ি জ্বর ও কাশি ভালো হয়।
- ঠান্ডা জনিত সমস্যা দূর করার জন্য হাতিশুর পাতা রস খেলে আরাম পাওয়া যায়।
- হাতিশুর পাতার রস টাইফয়েড জ্বর দূর করতেও খুব কার্যকরী। আপনার যদি টাইফয়েড হয়ে থাকে তাহলে হাতিশুর পাতার রস হালকা গরম করে পানিতে মিশিয়ে খেতে পারেন।
- হাতিশুর পাতার রস বিভিন্ন ধরনের ব্যথা কমাতে ও সমান উপকারী। আপনার যদি বাতের ব্যথার সমস্যা থাকে তাহলে হাতিশুর পাতার রস খেতে পারে।
- দাঁতের ফোলা ভাব এবং মাড়ির বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ রোধ করতে হাতিশুর গাছের শিকড় কার্যকরী।
- শরীরের কোন স্থানে কেটে গেলে হাতিশুর গাছের পাতা কিংবা শিকড় বেটে লাগালে খুব তাড়াতাড়ি ঘা শুকিয়ে যায়।
- ফ্যারিন্জাইটিস রোগ ভালো করতেও হাতিশুর গাছের পাতার রস ব্যবহার করা হয়
- মুখের ত্বকে ব্রণ কমানোর জন্য হাতিশুর গাছের পাতা ও ডাল ব্যবহার করা হয়।
- একজিমা রোগ দূর করার জন্য হাতিশুর গাছের পাতা ও শিকড় ব্যবহার করা হয়।
- শরীরে বিভিন্ন ধরনের দুর্বলতা এবং যৌন দুর্বলতা দূর করার জন্য হাতিশুর গাছে শিকড় ও পাতা চিবিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়।
- হাতিশুর গাছ কিডনি ও লিভার ভালো রাখতেও খুব কার্যকরী। নিয়ম করে হাতিশুর গাছের পাতা খেলে লিভারের ভেতর থেকে ক্ষতিকর টক্সিন গুলো খুব সহজেই বের হয়ে যায়।
- হাতিশুরের পাতা কিংবা শিকড় বেটে আক্রান্ত স্থানে লাগালে খুব দ্রুত রক্তপাত বন্ধ হয়।
- হাতিশুর গাছের পাতা ও শিকড় উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ ও রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সহায়তা করে।
- হাতিশুর গাছের পাতা ও শিকড় খেলে বদহজম, গ্যাস্টিকের সমস্যা ও কৃমিনাশক হিসেবে ভালো কাজ করে।
হাতিশুর গাছের অপকারিতা
উপরে আমরা হাতিশুর গাছের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনেছি এখন আমরা হাতিশুর গাছের অপকারিতা সম্পর্কে জানব। হাতিশুর গাছ যেমন আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী তেমন আপনি যদি অতিরিক্ত পরিমাণে হাতিশুর গাছ খান তাহলে স্বাস্থ্যের বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি হতে পারে। এছাড়া প্রতিটি গাছের যেমন উপকারী গুণ রয়েছে তেমন। বিভিন্ন গবেষণার মাধ্যমে জানা গেছে যে হাতিশুর গাছের ভেতরে পাইরোলিজিডিন অ্যালকোহেল জাতীয় বিষ থাকে।
আর এই বিষের প্রভাবে আমাদের শরীরে টিউমার দেখা দেয়। আপনি যদি অতিরিক্ত পরিমাণে হাতিশুর গাছ সেবন করেন তাহলে পেট ব্যথা সমস্যা হতে পারে। হাতিশুর গাছের পাতার রসে অনেক তীব্র গন্ধ থাকে। তাই হাতিশুর গাছের রস সেবন করার ফলে ডায়রিয়া বা বমি হতে পারে। যাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে তারা যদি হাতিশুর গাছের পাতার রস খায় তাহলে উচ্চ রক্তচাপ বেড়ে যায়।
আরো পড়ুন: স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির আয়ুর্বেদিক ওষুধ
তাছাড়া হাতিশুর গাছ পরিবেশের ভারসাম্যর ওপরে প্রভাব ফেলতে পারে যদি আশেপাশের অন্যান্য গাছের উপরে চাপ সৃষ্টি হয়। হাতিশুর গাছের মূল বা শিকড় বড় হওয়ার কারণে মাটির রস ও পুষ্টি অনেকটাই শোষণ করে নেয় ফলে মাটির উর্বরতা কমে যায়। এছাড়া হাতিশুর গাছের পাতার ভালোভাবে না ধুয়ে আপনি যদি রস করে খান তাহলে হাতিশুর গাছের পাতার ভেতরে থাকা বিভিন্ন ধরনের পোকামাকড় ও ব্যাকটেরিয়া শরীরে রোগের সংক্রমণ ঘটাতে পারে।
হাতিশুর গাছের পাতা খাওয়ার নিয়ম
হাতিশুর গাছের পাতা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কেও আমাদের ভালোভাবে জেনে নেওয়া জরুরী। হাতিশুর গাছের শিকড় খাওয়া আমরা আর্টিকেলের উপরের অংশে আলোচনা করেছি। এখন আমরা হাতিশুর গাছের পাতা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আপনাদের জানাবো। হাতিশুর গাছের পাতার উপকারিতা রয়েছে অনেক।
বিভিন্ন ধরনের ঠান্ডা জনিত সমস্যা, বিভিন্ন ধরনের ব্যথা ও বিভিন্ন ধরনের দীর্ঘস্থায়ী রোগ ভালো করার জন্য হাতিশুর গাছের পাতা ব্যবহার করা হয়। হাতিশুর গাছের পাতা উপকারিতা তবে অবশ্যই আপনাকে সঠিক নিয়মে হাতিশুর গাছের পাতা ব্যবহার করতে হবে। চলুন তাহলে হাতিশুর গাছের পাতা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
- আপনার যদি সর্দি, কাশি কিংবা জ্বর থাকে তাহলে হাতিশুর গাছের পাতার রস করে আপনি দিনে দুইবার খেতে পারেন। যদি হাতিশুর পাতার রস এমনি খেতে অসুবিধা হয় তাহলে সামান্য পরিমাণ মধু মিশিয়ে খেতে পারেন।
- শরীরের কোথাও যদি ব্যথা থাকে তাহলে হাতিশুর গাছের পাতার রস খেলে উপকার পাওয়া যায় কিংবা আপনি হাতিশুর গাছের পাতা বেটে আক্রান্ত স্থানে লাগালে উপকৃত হবেন।
- ফ্যারিন্জাইটিস রোগের জন্য হাতিশুর গাছের পাতার রস গরম পানির সাথে মিশিয়ে গার্গল করলে উপকার পাওয়া যায়।
- টাইফয়েড জ্বরের সমস্যা থাকলে হাতিশুর পাতার রস পানির সাথে মিশিয়ে খেলে টাইফয়েড জ্বর খুব তাড়াতাড়ি ভালো হয়।
- প্রতিদিন সকালে খালি পেটে হাতিশুর পাতার পেস্ট অল্প পরিমাণ পানির সাথে খেলে অন্তের ভেতরে বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া খুব সহজে দূর হয়ে যায়।
- শরীরের ভেতরে বিভিন্ন ধরনের প্রদাহ কমানোর জন্য হাতিশুর পাতা পানিতে সেদ্ধ করে সেই পানি দিনে দুইবার খেলে প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
হাতিশুর গাছের পাতা উপকারিতা তবে অবশ্যই একজন ভালো চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। আর কখনোই অতিরিক্ত পরিমাণে হাতিশুর গাছের পাতা খাবেন না। হাতিশুর গাছ একটি প্রাকৃতিক ভেষজ উদ্ভিদ। তাই অবশ্যই হাতিশুর গাছের পাতা খাওয়ার আগে ভালোভাবে হাতিশুর গাছের পাতার উপকারিতা ও নিয়ম সম্পর্কে জেনে নেওয়া জরুরী। তাছাড়া হাতিশুর গাছের পাতা দীর্ঘ সময় না খাওয়াই ভালো। এতে আপনার উপকারের চাইতে অপকার হবে বেশি। প্রিয় পাঠক আশা করি হাতিশুর গাছের পাতা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আমরা আপনাকে সঠিকভাবে জানাতে পেরেছি।
হাতিশুর গাছের ডালের উপকারিতা
হাতিশুর গাছের ডালের উপকারিতা কথাটি শুনে হয়তো আপনি অনেক বেশি অবাক হচ্ছেন। কিন্তু হ্যাঁ হাতিশুর গাছের শিকড় ও পাতার মতো ডালও খুব উপকারী। হাতিশুর গাছের ডাল আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের উপকার করে থাকে। আপনি যদি অনেক বেশি মুখে ব্রণের সমস্যায় ভুগেন তাহলে হাতিশুর গাছের কচি পাতা ও ডাল একসাথে বেটে পেস্ট তৈরি করে মুখে লাগাতে পারেন।
এতে আপনার মুখের ব্রণ দূর হবে এবং মুখের ওপরে ব্রণের দাগ গুলো খুব সহজে মিশে যাবে। তাছাড়া আপনার যদি দাঁতের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা থাকে এবং দাঁতের মাড়ি ফুলে যাওয়ার সমস্যা থাকে তাহলে আপনি হাতিশুর গাছের ডাল ব্যবহার করতে পারেন। দাঁতের ফোলা ভাব কমানোর জন্য হাতিশুর গাছের শিকড় ও ডাল একসাথে চিবিয়ে খেলে অনেক বেশি উপকার পাওয়া যায়।
হাতিশুর গাছের ডাল ব্যথা কমাতেও সহায়তা করে। হাতিশুর গাছের ডালের পেস্ট তৈরি করে বিভিন্ন ধরনের স্থানে লাগালে খুব দ্রুত আরাম পাওয়া যায়। এছাড়া চর্মরোগ, বিভিন্ন ধরনের ক্ষত, বিষাক্ত পোকামাকড়ের কামরের বিষক্রিয়া থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আপনি হাতিশুর গাছের ডালের পেস্ট ব্যবহার করতে পারেন।
আমাদের শেষ কথা - হাতিশুর গাছের শিকড় কোমরে বাঁধলে কি হয়
আমরা আজকের পোস্টে হাতিশুর গাছের শিকড় কোমরে বাঁধলে কি হয় সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আমি আশা করি আমাদের আর্টিকেলটি আপনি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত খুব মনোযোগ সহকারে পড়েছেন এবং হাতিশুর গাছ সম্পর্কে একটি সঠিক ধারণা পেয়েছেন।হাতিশুর গাছ গ্রামাঞ্চলে খুব সহজে পাওয়া গেলেও শহর অঞ্চলে হাতিশুর গাছ খুব বেশি দুর্লভ। অনেক সময় সাধারণ মানুষ হাতিশুর গাছের উপকারিতা সম্পর্কে না জানার কারণে হাতিশুর গাছ কেটে ফেলে।
আমি মনে করি আমাদের প্রকৃতিতে যত ধরনের গাছ রয়েছে প্রত্যেকটি গাছের মধ্যে কোন না কোন ওষুধি গুণ রয়েছে। তাই কোন গাছ সহজে কেটে ফেলা উচিত না। আমাদের আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুবান্ধবদের উপকৃত হওয়ার সুযোগ করে দিন। যত দ্রুত সম্ভব আর্টিকেলটি তাদের কাছে শেয়ার করুন এবং এই আর্টিকেল সম্পর্কে আপনার যদি কোন মন্তব্য থেকে থাকে তাহলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে ভুলবেন না।
বিডি অনলাইন আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url