আপাং গাছের শিকড় কোমরে বাধলে কি হয়
আপাং গাছের শিকড় কোমরে বাধলে কি হয় সে সম্পর্কে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও সঠিক তথ্য পাচ্ছেন না তাহলে আমি বলব আজকে আর্টিকেলটি শুধুমাত্র আপনার জন্য। আজকের আর্টিকেলে আমরা আপাং গাছের শিকড় সম্পর্কে আপনাদের বিস্তারিত জানাবো।
তাছাড়া আপাং গাছের শিকড় খেলে কি হয়, আপাং গাছের শিকড় খাওয়ার নিয়ম, আপাং গাছের উপকারিতা, আপাং গাছ কোথায় পাওয়া যায়, আপং গাছ কিভাবে খেতে হয় সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমাদের আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
পেজ সূচিপএ
আপাং গাছের শিকড় কোমরে বাধলে কি হয়
আপাং গাছের শিকড় কোমরে বাধলে কি হয় সে সম্পর্কে অনেকেরই অজানা রয়েছে। আজকের আর্টিকেলের মূল আলোচ্য বিষয় হলো আপাং গাছের শিকড় কোমরে বাধলে কি হয়। বহু যুগ আগে থেকে লোকমুখে প্রচলিত আছে যে আপাং গাছের শিকড় কোমরে বাধলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সমাধান হয়। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে আপাং গাছের শিকড় বিভিন্ন ধরনের তাবিজ, ঝাড়ফুঁক ইত্যাদি কাজে ব্যবহার করা হয়। চলুন তাহলে জেনে নেই আপাং গাছের শিকড় কোমরে বেঁধে আমাদের শরীরের কি কি রোগ নিরাময় করা সম্ভব।
- কিছু কিছু মানুষের মধ্যে ধারণা রয়েছে যে আপাং গাছের শিকড় কোমরে বাধলে সৌভাগ্য বৃদ্ধি পায়।
- আপাং গাছের শিকড় কোমরে বাধলে খারাপ নজর কিংবা বদ নজর থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
- আপাং গাছের শিকড় কোমরে বাধলে স্ত্রী সহবাস ক্ষমতা ও যৌন মিলনের সময় বৃদ্ধি পায়।
- আপাং গাছের শিকড় কোমরে বাধলে দ্রুত বীর্যপাত রোধ হয় এবং শুক্রানুর মাত্রা বৃদ্ধি পায়।
- লাল আপাং গাছের শিকড় কোমরে বাধলে বিভিন্ন ধরনের রোগ নিরাময় হয়।
- আপাং গাছের শিকড় কোমরে বাঁধলে বিভিন্ন ধরনের ব্যথা নিরাময় হয়।
- তাছাড়া অনেকেই মনে করেন লাল আপাং গাছের শিকড় দিয়ে বিভিন্ন ধরনের বশীকরণ করা যায়।
তবে আমি মনে করি এগুলো সবই কুসংস্কার। বহু যুগ আগে থেকে এগুলো লোকমুখে প্রচলিত হয়ে আসছে বলে অনেকের মধ্যে এরকম ভুল ধারণা রয়েছে। আপাং গাছের শিকড় খেলে বিভিন্ন ধরনের রোগ নিরাময় হয়। কিন্তু কোমরে বাধলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সমাধান হয় এমন বৈজ্ঞানিক কোন প্রমাণ নেই।
তাই আপাং গাছের শিকড় কোমরে না বেঁধে আপনি আপাং গাছ খেয়ে বিভিন্ন ধরনের রোগ থেকে দূরে থাকতে পারেন। আশা করি আপাং গাছের শিকড় কোমরে বাঁধলে কি হয় সে সম্পর্কে আপনি সঠিক ভাবে জানতে পেরেছেন। তাহলে চলুন এবার আপাং গাছের শিকড় খেলে কি হয় সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
আপাং গাছের শিকড় খেলে কি হয়
আপাং গাছের শিকড় খেলে কি হয় সে সম্পর্কে অনেকেই গুগলে সার্চ দিয়ে থাকেন। আর্টিকেলের উপরের অংশে আমরা আপাং গাছের শিকড় কোমর বাধলে কি হয় সে সম্পর্কে আপনাদের বিস্তারিত জানিয়েছি। এখন আমরা আপাং গাছের শিকড় খেলে কি হয় সে সম্পর্কে আপনাদের জানাবো। আপাং গাছ একটি ভেষজ উদ্ভিদ এবং আয়ুর্বেদিক বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসায় আপাং গাছ ব্যবহার করা হয়।
আপাং গাছের পাতা, ফুল, কান্ড, মূল ইত্যাদি আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের রোগ নিরাময় করতে সক্ষম। মোট কথাই বলতে গেলে আপাং গাছের প্রতিটি উপাদানই ওষুধি গুন সম্পন্ন। তবে আমরা আপনাদের আর্টিকেলের এই অংশে আপাং গাছের শিকড় খেলে কি হয় সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো।
- শরীরের কোথাও কেটে গেলে আপাং গাছের শিকড় বেটে আক্রান্ত স্থানে লাগালে রক্তপাত খুব দ্রুত বন্ধ হয়।
- আপাং গাছের শিকড় জ্বর নিরাময় করতে ও সক্ষম। আপনার যদি অনেকদিন পর্যন্ত জ্বর হয় তাহলে আপাং গাছের শিকড় বেটে দিনে দুইবার রস খেলে জ্বর থেকে আরাম পাওয়া যায়।
- আপাং গাছের শিকড় আমাশয় ও কলেরা দূর করতে ও সহায়তা করে। আপাং গাছের শিকড় খুব ভালোভাবে ছেঁচে রস বের করে দিনে দুইবার খেলে আমাশয় ও কলেরা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
- যাদের বুক ধরফর করে এবং হৃদরোগের সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিত আপাং গাছের শিকড় খেলে বুক ধরফর এবং হৃদরোগের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
- যাদের ক্ষুধা কম, হজমের সমস্যা এবং মুখে রুচি নেই তারা আপাং গাছের শিকড়ের সাথে লবঙ্গ মিশিয়ে বড়ি বানিয়ে রোদে শুকিয়ে রেখে প্রতিদিন একটি করে বড়ি খেলে এসব সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।
- যদি শরীরের কোথাও ক্ষত থাকে বা বাগি রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে আপাং গাছের শিকড় বেটে দিনে দুইবার রস খেলে কিংবা ক্ষতস্থানে লাগালে ক্ষত খুব দ্রুত সেরে উঠবে।
- আপাং গাছের শিকড় চোখের মনির অস্বচ্ছতা ও চোখের প্রদাহ কমাতেও ব্যবহার করা হয়।
- শরীরের কোথাও যদি কীটপতঙ্গ কিংবা বিষাক্ত কোন পোকা দংশন করে তাহলে আপাং গাছের শিকড় রস করে খেলে কিংবা বেটে আক্রান্ত স্থানে লাগালে বিষ নষ্ট হয়ে যায়।
- আপনাকে যদি পাগলা কুকুরে কামড় দিয়ে থাকে তাহলে আপাং গাছের পুষ্প চূর্ণ অল্প চিনির সাথে মিশিয়ে খেলে কুকুরের বিষ খুব দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়।
আশা করি আপাং গাছের শিকড় খেলে কি হয় সে সম্পর্কে আপনি বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। আপনি যদি উপরের যে কোন একটি সমস্যায় ভুগে থাকেন তাহলে আপান গাছের শিকড় খেতে পারেন। আপাং গাছের শিকড় খেলে কি হয় সে সম্পর্কে জানলে শুধু হবে না আপাং গাছের শিকড় খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হবে। আমরা আর্টিকেলের নিচের অংশে আপাং গাছের শিকড় খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। তাই অবশ্যই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ রইল।
আপাং গাছের শিকড় খাওয়ার নিয়ম
আপাং গাছের শিকড় খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করা হলো। আপাং গাছের শিকড়ের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল ও প্রদাহনাশক উপাদান রয়েছে।আপাং গাছের শিকড় খেলে কি কি উপকার হয় সে সম্পর্কে আপনারা উপরেই জেনে গেছেন। চলুন তাহলে এখন জেনে নেই আপং গাছের শিকড় খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে।
- আপং গাছের শিকড় সকালে খালি পেটে চিবিয়ে খেতে পারেন।
- আপং গাছের শিকড় খুব ভালোভাবে ছোট ছোট টুকরা করে কেটে নিয়ে বিলিন্ডার কিংবা শিলপাটার সাহায্যে রস বের করে সকালে খালি পেটে খাওয়া যায়।
- সকালে চায়ের সাথে আপাং গাছের শিকড় মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়।
- আপাং গাছের শিকড় পানিতে দিয়ে খুব ভালোভাবে ফুটিয়ে পানি খেলে উপকার পাওয়া যায়।
তাছাড়া আপাং গাছের শিকড় দিয়ে পেস্ট তৈরি করে শরীরের কোন ক্ষত স্থানে লাগালে খুব দ্রুত ক্ষত ভালো হয়। বিষাক্ত কোনো পোকা কামড় দিলে কিংবা পাগলা কুকুরের কামড়ের বিষ নষ্ট করার জন্য আপাং গাছের শিকড়ের পেস্ট ও রস উপকারী। আশা করি আপাং গাছের শিকড় খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আপনি বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।
আরো পড়ুন: উলট কম্বল গাছের ১৫টি উপকারিতা ও অপকারিতা
তবে আপাং গাছের শিকড় খাওয়ার আগে আপনি একজন ভালো চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। কারণ আপনার যদি কোন শারীরিক সমস্যা থাকে তাহলে আপাং গাছের শিকড় খেলে শরীরের ক্ষতি হতে পারে। তাই আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খাওয়া উচিত। চিকিৎসক আপনাকে শিকড় খাওয়ার পরিমাণ সম্পর্কে সঠিকভাবে পরামর্শ দিতে পারবেন।
আপাং গাছের উপকারিতা ও অপকারিতা
আপাং গাছের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানা না থাকলে আমাদের আর্টিকেলের আজকের এই অংশ থেকে জেনে নিতে পারেন। আপাং গাছের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের ওষুধি গুণাবলী রয়েছে তাই আপাং গাছ খুব উপকারী একটি গাছ।
শহরাঞ্চলে আপাং গাছ খুব কম পরিমাণে দেখা গেলেও গ্রামাঞ্চলে আপাং গাছ ব্যাপক পরিমাণে দেখা যায়। বিভিন্ন ধরনের ঝোপ জঙ্গলে কিংবা পাহাড়ি এলাকায় আপনি খুব সহজেই আপাং গাছ পেয়ে যাবেন। চলুন তাহলে কথা না বাড়িয়ে জেনে নেই আপান গাছের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে।
আপাং গাছের উপকারিতা
- আপাং গাছ হজম প্রক্রিয়া উন্নত করতে সহায়তা করে তাই যাদের হজমের সমস্যা রয়েছে তারা আপাং গাছ খেতে পারেন।
- আপাং গাছ পাচনতন্ত্রের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে এবং পাচনতন্ত্রের ভেতরে বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে।
- আপাং গাছ ডায়রিয়া ও কলেরা নিরাময়ে সহায়তা করে।
- গর্ভকালীন সময় প্রসব বেদনা উঠলে আপাং গাছের শিকড় কোমরে ব্যথা বেঁধে দিলে প্রসব বেদনা কমে এবং প্রসবের সময় কোন সমস্যা হয় না।
- আপাং গাছের মধ্যে রয়েছে এন্টি ক্যান্সার উপাদান। আপাং গাছের নির্যাস ক্যান্সারের কোষের বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।
- আপাং গাছের শিকড় শরীরের রক্তপাত বন্ধ করতে সহায়তা করে। শরীরের কোথাও যদি কেটে যায় তাহলে রক্তপাত বন্ধ করার জন্য আপাং গাছ বেঁটে লাগিয়ে দিলে খুব তাড়াতাড়ি রক্তপাত বন্ধ হয়।
- অশ্ব রোগের যন্ত্রণা নিরাময় করতেও আপাং গাছের বীজ-বেশ উপকারী। আপাং গাছের বীজ ভালোভাবে বেটে প্রতিদিন সকালে নিয়মিত খেলে অশ্ব রোগ আরোগ্য হয়।
- আপাং গাছের শিকড় ব্যথা দূর করতেও খুব কার্যকরী। যাদের বাপের ব্যাথার সমস্যা রয়েছে তারা যদি আপাং গাছের শিকড় বেটে আক্রান্ত স্থানে লাগাই কিংবা রস বের করে খায় তাহলে ব্যথা নিরাময় হয়।
- আপাং গাছের পাতা দীর্ঘমেয়াদি জ্বর দূর করতেও সহায়তা করে। আপনার যদি অনেকদিন পর্যন্ত জ্বর হয়ে থাকে তাহলে আপাং গাছের পাতার রস খেলে খুব তাড়াতাড়ি জ্বর থেকে আরাম অনুভব করবেন।
- আপাং গাছ ঠান্ডা জনিত সমস্যা দূর করতেও সহায়তা করে। যাদের সর্দি কাশি কিংবা শ্বাসকষ্টের সমস্যা রয়েছে তারা প্রতিষেধক হিসেবে আপাং গাছ খেতে পারেন।
- আপাং গাছ মানসিক চাপ কমাতে সহায়তা করে। নিয়মিত আপাং গাছের পাতা এবং ফুলের নির্যাস খেলে মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায় এবং মানসিক চাপ কমে।
- আপাং গাছ চোখে দৃষ্টি শক্তি বাড়াতেও খুব কার্যকরী। নিয়মিত আপাং গাছ খেলে চোখের জ্বালাপোড়া কমায় এবং দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সহায়তা করে। চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য বহু যুগ আগে থেকেই আপাং গাছ ব্যবহার হয়ে আসছে।
- আপাং গাছের রস শরীরের রক্ত পরিষ্কার করতে পারে। শরীরের ভিতরে ক্ষতিকর পদার্থগুলো দূর করে এবং ভালো রক্ত তৈরি করতে সহায়তা করে।
- আপাং গাছের রস ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে এবং ত্বকের ভেতরের ব্রণ ও ফুসকুড়ি কমায়।
- আপাং গাছ খেলে হাত পা ফোলা রোগেও আরাম পাওয়া যায়। যাদের হাত-পা ফোলা রোগের সমস্যা রয়েছে তারা আপাং গাছ বেঁটে সমপরিমাণ কালো মেঘ মিশিয়ে ভালোভাবে জ্বাল দিয়ে ফুটিয়ে সেই পানি দিনে দুইবার খেলে হাত পা ফোলা রোগের উপকার পাবে।
- আপাং গাছের রস শরীরের খারাপ কোলেস্টোরল দূর করতে সহায়তা করে এবং ভালো কোলেস্টোরল বাড়াই।
- আপাং গাছের রোগ শরীরের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের সহায়তা করে। আপনি যদি উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভুগেন তাহলে আপাং গাছের রস খেতে পারেন।
- আপাং গাছের রোগ হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে।
- আপাং গাছের শিকড় কোমরে বেঁধে রাখলে বীর্যপাতের সমস্যা দূর হয়। আপনার যদি বীর্য অনেক তরল হয়ে থাকে এবং যৌন মিলনের সমস্যা থাকে তাহলে গাছের শিকড় কোমরে বেঁধে রাখতে পারেন।
- আপাং গাছের শিকড় চুলের গোড়া মজবুত করতেও সহায়তা করে। গোসলের আগে আপাং গাছের শিকড় বেটে চুলের গোড়ায় লাগালে চুল পড়া কমে এবং নতুন চুল গজায়।
- আপাং গাছের পাতার রস বিষাক্ত পোকামাকড়ের কামড় এবং পাগলা কুকুরের কামড়ের বিষ নষ্ট করতে সহায়তা করে।
- আপাং গাছের শিকড় ক্ষুধা বাড়াতে এবং মুখের রুচি বাড়াতে সহায়তা করে। আপাং গাছের শিকড় এবং লবঙ্গ দিয়ে বড়ি বানিয়ে শুকিয়ে রেখে প্রতিদিন খেলে মুখের রুচি বাড়ে এবং ক্ষুধা বাড়ে।
- যাদের দাদ রোগের সমস্যা রয়েছে তারা যদি আপং গাছের শুকনো ডাটা আগুনে পুড়িয়ে ক্ষার তৈরি করে জলপাই তিল তেল দিয়ে মেখে দাদের ওপর ঘষে ঘষে লাগাতে পারে তাহলে কয়েকদিনের ভিতরেই দাদ থেকে আরাম পাওয়া পাবে।
- আপাং গাছের শিকড় কিংবা গাছের পাতার রস ফোঁড়া কমাতে সহায়তা করে। আপং গাছের পাতার রস এবং আতপ চাল একসাথে বেটে ফোড়ার চারিদিকে লাগালে ফোঁড়ার মুখ ফেটে দূষিত জীবানু খুব সহজে বের হয়ে যায়।
- যাদের প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া রয়েছে এবং প্রসাবের ইনফেকশনের সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিত আপং গাছের পাতার রসের সাথে ডাবের পানি মিশিয়ে খেতে পারেন। এতে প্রসাবের ইনফেকশনের সমস্যা দূর হবে এবং প্রসাবের জ্বালাপোড়া কমবে।
- আপং গাছ খোঁসপোচড়া এবং চুলকানিতেও খুব কার্যকরী। নিয়মিত আপং গাছের পাতার রস খেলে খোসপোচড়া ও চুলকানি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
আপাং গাছের অপকারিতা
আপাং গাছ একটি উপকারী গাছ কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে আপা গাছ খেলে আমাদের স্বাস্থ্যের বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি হতে পারে। যেমন আপনি যদি অতিরিক্ত পরিমাণে আপাং গাছ খান তাহলে হজমের সমস্যা, ডায়রিয়া, বমি বমি ভাব, পেট ব্যথা হতে পারে। যাদের আগে থেকে এলার্জির সমস্যা রয়েছে তারা আপাং গাছ খেলে এলার্জির সমস্যা দেখা দিতে পারে।
আরো পড়ুন: পাথরকুচি পাতার ২৪ টি উপকারিতা ও অপকারিতা
অতিরিক্ত পরিমাণে কিংবা দীর্ঘদিন যাবত আপাং গাছ খেলে কিডনি এবং লিভারের ওপরে চাপ পড়তে পারে। আপাং গাছ গর্ভবতী এবং স্তন দানকারী মায়ের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। যাদের নিম্ন রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে তারা যদি অতিরিক্ত পরিমাণে আপাং গাছ খায় তাহলে তাদের জন্য বিপদজনক হতে পারে।
আপাং গাছ আমাদের জন্য উপকারী তবে অপকারিতা দেখেও বিশেষ নজর রাখা জরুরী। আপনি যদি আপাং গাছ খেয়ে উপকৃত হতে চান তাহলে অবশ্যই আগে একজন ভালো চিকিৎসকের পরামর্শ নিন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এবং পরিমাণ মতন আপাং গাছ খাওয়া শুরু করুন। এতে উপকৃত হবেন এবং ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা ও কম থাকবে।
আপাং গাছ কোথায় পাওয়া যায়
আপাং গাছ কোথায় পাওয়া যায় এমন প্রশ্ন অনেকেই করে থাকেন। আপাং গাছ পুরো পৃথিবী জুড়ে বিভিন্ন এলাকায় পাওয়া যায়। আমাদের বাংলাদেশসহ, নেপাল, মিয়ানমার, শ্রীলংকা, ভারত ইত্যাদি বিভিন্ন দেশে আকাং গাছ জন্মে। সাধারণত দুই ধরনের আপাং গাছ দেখতে পাওয়া যায় । একটি আপা গাছের রং লাল এবং আরেকটি সাদা হয়ে থাকে। আপাং গাছের প্রতিটি অঙ্গ পতঙ্গই ওষুধি গুণসম্পন্ন। আপাং গাছ বেশিভাগ বাড়ির আশেপাশে এবং ঝোপ জঙ্গলে দেখতে পাওয়া যায়।
তাছাড়া রাস্তার ধারে আপা গাছ বেশি জন্মে। আপাং গাছের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের ওষুধি গুণাবলী রয়েছে বলে আপাং গাছ গ্রাম অঞ্চলে বহু প্রাচীনকাল থেকে বেশ পরিচিত। গ্রাম অঞ্চলে বিভিন্ন ধরনের সাপে কাটা বিষ প্রতিরোধ করার জন্য আপাং গাছ ব্যবহার করা হয়। আপাং গাছ আদ্র জায়গায় বেশি জন্মে। আপাং গাছ যেহেতু ওষুধি গুণসম্পন্ন একটি গাছ তাই যদি কোথাও দেখে থাকেন তাহলে আপাং গাছ বাড়ির উঠোনে লাগিয়ে উপকৃত হতে পারেন।
তাছাড়া অনেক নার্সারি রয়েছে যেগুলো ওষুধি গাছ সংগ্রহ করে থাকে আপনি সেই নার্সারি গুলো থেকে আপাং গাছ সংগ্রহ করতে পারেন। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের অনলাইনের মাধ্যমে আপান গাছের চারা সংগ্রহ করে বাড়িতে রোপন করতে পারেন। আশা করি উপরোক্ত আলোচনা থেকে আপাং গাছ কোথায় পাওয়া যায় সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। চলুন তাহলে এবার জানি আমাশয় ও কলেরা নিরাময়ে আপাং গাছ কিভাবে খেতে হয় সে সম্পর্কে।
আমাশয় ও কলেরা নিরাময়ে আপাং গাছ কিভাবে খেতে হয়
আমাশয় ও কলেরা নিরাময়ে আপাং গাছ কিভাবে খেতে হয় সে সম্পর্কে অনেকেরই অজানা রয়েছে। আপাং গাছের মধ্যে যেহেতু বিভিন্ন ধরনের গুণাবলী রয়েছে তাই অবশ্যই আপাং গাছ খাবার নিয়ম সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে রাখা জরুরী। আমরা আর্টিকেলের উপরের অংশে আপাং গাছের শিকড় খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।
আরো পড়ুন: কুলেখাড়া পাতার রস কখন খেতে হয়
আপনি যদি আর্টিকেলটি প্রথম থেকে পড়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই এতক্ষণে সে সম্পর্কে জেনে গেছেন। আপাল গাছের পাতার মধ্যে এন্টি ব্যাকটেরিয়াল ও প্রদাহনাশক উপাদান রয়েছে। আর এই উপাদান গুলি আমাদের অন্তের সংক্রমণ দূর করতে সহায়তা করে। যারা আমাশয় ও কলেরায় সমস্যায় ভুগছেন তারা আপাং গাছ খেতে পারেন।
আপাং গাছ বিভিন্ন ধরনের আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়। যাদের পেটের সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিত আপাং গাছ খেলে পেটের সমস্যা দূর হয় এবং হজম প্রক্রিয়া উন্নত হয়। যারা আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা করেন তারা আপাং গাছ দিয়ে নানান ধরনের ওষুধ বানিয়ে আমাশয় ও কলেরা নিরাময় করে থাকেন। চলুন তাহলে জেনে নেই আমাশয় ও কলেরা নিরাময়ে আপাং গাছ কিভাবে খেতে হয় সে সম্পর্কে।
- আমাশয় ও কলেরা নিরাময়ের জন্য আপনি আপান গাছের কাঁচা পাতা ভালোভাবে ধুয়ে চিবিয়ে খেতে পারেন।
- আপাং গাছের পাতা ভালোভাবে ধুয়ে পাটায় কিংবা বিলিন্ডারে পেস্ট তৈরি করে রস বের করে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খেতে পারেন। এতে আমাশয় ও কলেরার সমস্যা দূর হবে। স্বাদ পরিবর্তন করার জন্য মধু মেশাতে পারেন।
- আপাং গাছের পাতা ভালোভাবে ধুয়ে রোদে শুকিয়ে গুড়ো করে প্রতিদিন সকালে চায়ের পরিবর্তে খেতে পারেন। এতে আমাশয় ও কলেরার সমস্যা কমবে।
আমাশয় ও কলেরা নিরাময় আপাং গাছ কিভাবে খেতে হয় সে সম্পর্কে অবশ্যই জানতে পেরেছেন। আপনার যদি আমাশয় ও কলেরা সমস্যা থাকে তাহলে আপাং গাছ খাওয়ার আগে একজন ভালো চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। আপাং গাছ যেহেতু ভেষজ উদ্ভিদ তাই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খাওয়া জরুরী।
তাছাড়া যারা গর্ভবতী এবং দুগ্ধ দানকারী মা রয়েছেন তারা আপাং গাছ চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়ে খাবেন না। আর আপাং গাছ খাওয়ার পরে যদি আপনার কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় তাহলে অবশ্যই আপাং গাছ খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। তাছাড়া যাদের অ্যালার্জির সমস্যা রয়েছে তারা আপাং গাছ খাওয়ার পরে এলার্জি সমস্যা হতে পারে।
লেখকের মন্তব্য - আপাং গাছের শিকড় কোমরে বাধলে কি হয়
প্রিয় পাঠক, যদি আপনি আমাদের আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ে থাকেন তাহলে নিশ্চয়ই এতক্ষণে আপাং গাছের শিকড় কোমর বাধলে কি হয় সে সম্পর্কে জানার পাশাপাশি আপাং গাছ দিয়ে কি কি রোগ নিরাময় করা সম্ভব সে সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে গেছেন। আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধু-বান্ধবদের সাথে আমাদের এই আর্টিকেলটি শেয়ার করুন।
এতে আপনার বন্ধুরাও আপং গাছ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবে এবং আপং গাছ খেয়ে উপকৃত হতে পারবে। এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আর এরকম স্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন ধরনের টিপস পেতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন। আর আমাদের আর্টিকেল সম্পর্কে আপনার যদি কোন মন্তব্য থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে জানাবেন।
বিডি অনলাইন আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url