টক দই খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

টক দই খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও সঠিক তথ্য পাচ্ছেন না। তাহলে আমি বলব এই আর্টিকেলটি শুধুমাত্র আপনার জন্য। চলুন তাহলে টক দই এর উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য আপনাদের জানাই।
টক দই খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
তাছাড়া গর্ভাবস্থায় টক দই খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে যদি আপনি জানতে অনেক বেশি আগ্রহ হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আমাদের আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত খুব মনোযোগ সহকারে পড়ুন তাহলেই গর্ভাবস্থায় টক দইয়ের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
পেজ সূচিপএ

টক দই খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

টক দই খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো। টক দই খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে অনেক তবে টক দই খেলে আমাদের শরীরে কিছু কিছু অপকারিতাও হয়। এখন আমরা টক দই খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানব। 
টকদই আমাদের শরীরের জন্য খুবই পুষ্টিকর একটি খাবার এবং ক্যালসিয়াম, প্রোটিন অন্যান্য স্বাস্থ্যকর পুষ্টি ও প্রাবায়োটিক সমৃদ্ধ। টকদের মধ্যে রয়েছে ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ইত্যাদি উপাদান। তবে অবশ্যই এইটা মনে রাখতে হবে যে অতিরিক্ত পরিমাণে টক দই খেলে আমাদের স্বাস্থ্যের উপরে ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। চলুন তাহলে জেনে নেই টক দই খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে।

টক দই খাওয়ার উপকারিতা

  • টক দই আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি করে, গ্যাসের সমস্যা দূর করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য কমায়।
  • টক দই আমাদের হাড় মজবুত করে এবং দাঁতের মাড়ি শক্ত করতে সহায়তা করে। টক দই হাড়ের ঘনত্ব বাড়ায় এবং অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি কমিয়ে থাকে।
  • টকদই আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং শরীরের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া গুলো ধ্বংস করে।
  • টক দই ওজন নিয়ন্ত্রণের সহায়তা করে। টকদের মধ্যে থাকা কম ক্যালোরি ও প্রোটিন আমাদের পেট দীর্ঘক্ষণ পর্যন্ত ভরা রাখে ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।
  • টক দই আমাদের টক ভালো রাখতে সহায়তা করে। নিয়মিত টক দই খেলে আমাদের ত্বকের ভেতরে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া গুলো খুব সহজে দূর হয়ে যায় এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে।
  • টক দই চুলের গোড়া মজবুত করতে সহায়তা করে। টক দই চুলে প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করে এবং চুলের খুশকি দূর করতে সহায়তা করে।
  • টক দই আমাদের শরীরের খারাপ কোলেস্টোরল কমিয়ে ভালো কোলেস্টেরল বাড়াতে সহায়তা করে।
  • টক দই রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে কারণ টক দই হলো পটাশিয়াম সমৃদ্ধ।

টক দই খাওয়ার অপকারিতা

  • অতিরিক্ত পরিমাণে টক দই খেলে আপনার হজম প্রক্রিয়া নষ্ট হয়ে যায়।
  • অতিরিক্ত পরিমাণে টক দই খেলে পরিপাকতন্ত্র ঠিকমতো কাজ করা বন্ধ করে দেয় এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হয়।
  • অতিরিক্ত পরিমাণে টক দই খেলে পেট ফাঁপা, পেট ব্যথা এমন কি ডায়রিয়াও হতে পারে।
  • যাদের ঠান্ডা জনিত সমস্যা রয়েছে তারা টক দই খেলে ঠান্ডা জনিত সমস্যা বেড়ে যেতে পারে।
  • যাদের শরীরের ল্যাকটোজ সহ্য হয় না তারা যদি টক দই খায় তাহলে সমস্যা সৃষ্টি হয়।

গর্ভাবস্থায় টক দই খাওয়ার উপকারিতা

গর্ভাবস্থায় টক দই খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে প্রতিটি গর্ভবতী মায়েরই জেনে নেওয়া জরুরী কারণ টক দই একটি পুষ্টিকর ও ভিটামিনযুক্ত খাবার। টকদের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম ও খনিজ পদার্থ। আর গর্ভাবস্থায় এই উপাদান গুলো আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত জরুরী।

তাই আপনি যদি গর্ভবতী হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় টক দই রাখুন। টক দই আমাদের শরীলকে ঠান্ডা রাখে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, শরীরের দুর্বলতা দূর করে ও বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর টক্সিন গুলো খুব সহজে শরীর থেকে বের করে দিতে সহায়তা করে। গর্ভকালীন সময় আমাদের শরীরে হজমের সমস্যা হয়।
পেটের ভিতরে গ্যাসের সমস্যা বাড়ে। বিভিন্ন ওষুধ খাওয়ার পরেও গ্যাসের সমস্যা থেকে মুক্তি মিলে না। আর বিভিন্ন ধরনের ওষুধ খেলে আপনার ভ্রুনের অনেক রকম ক্ষতি হতে পারে তাই আপনি যদি এই সমস্যাগুলো থেকে মুক্তি পেতে চান তাহলে অবশ্যই গর্ভাবস্থায় টক দইয়ের উপরে ভরসা করতে পারেন। গর্ভাবস্থায় টক দই খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো।

  • অন্তের স্বাস্থ্য ভালো থাকে।
  • ইমিউন সিস্টেম উন্নত করে।
  • হাড় মজবুত করে এবং দাঁত মজবুত করে।
  • ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখে।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
  • রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়।
  • ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে। যেমন ব্রণের সমস্যা।
  • ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে।
  • শরীরের দুর্বলতা ভাব দূর করে।
  • মানসিক চাপমুক্ত রাখে।
  • হজমের সহায়তা করে।
  • গ্যাসের সমস্যা কমায়।
  • ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ করে।

ওজন কমাতে টক দই খাওয়ার নিয়ম

ওজন কমাতে টক দই খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই তেমন কোন ধারনা নেই। আমরা অনেকেই নিজেদের ওজন নিয়ে খুব বেশি চিন্তায় থাকি। বিভিন্ন ধরনের ক্যালরি মুক্ত খাবার খেয়ে ওজন কমানোর চেষ্টা করি। টক দই তার মধ্যে অন্যতম একটি খাবার। কিন্তু টক দই খাওয়ার পরও ওজন কমছে না। 

কারণ টক দই শুধু খেলে হবে না টক দই খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আপনাকে ভালোভাবে জানতে হবে। টক দই এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে তাই আপনার পেট দীর্ঘক্ষণ পর্যন্ত ভরা থাকে ফলে অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার ইচ্ছে কমে যায় এবং ওজন নিয়ন্ত্রণের ভেতরে চলে আসে। চলুন তাহলে ওজন কমাতে টক দই খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নেই।

টক দই খাওয়ার নিয়ম

  • টক দইয়ের সাথে খেজুর, আখরোট এবং অন্যান্য ড্রাই ফুটস মিশিয়ে খেলে আপনার শরীরে প্রোটিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। আর এই প্রোটিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের শরীরে অতিরিক্ত ফ্যাট ও ক্যালোরি কমাতে সাহায্য করে।
  • ওজন কমানোর জন্য আমরা ওটস খেয়ে থাকি। তাই আপনি যদি ওটস এর সাথে দই মিশিয়ে খান তাহলে ওজন কমাতে আরও বেশি উপকার পাবেন।
  • গ্রানোলার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে। আর ফাইবার আমাদের শরীরের অতিরিক্ত চর্বি কমাতে সহায়তা করে। গ্রানোলার সাথে টক দই মিশিয়ে খেলে খাবারটি যেমন লো-ক্যালোরিযুক্ত হয় তেমন স্বাস্থ্যকর ও হয়। এছাড়া গ্রানোলা একটি সুগার-ফ্রি, লো-ফ্যাট এবং কম চিনিযুক্ত খাবার তাই এই খাবারটি খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী।
  • আপনি ওজন কমানোর জন্য দয়ের সাথে বিভিন্ন ধরনের ফল মিশিয়ে খেতে পারেন। যেমন যে ফলগুলোতে ক্যালরি কম সে ফলগুলো কেটে খুব ভালোভাবে দোরের সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন। ওজন কমানোর জন্য এই খাবারটি একটি আদর্শ খাবার হতে পারে। এছাড়া ফল ওজন কমানোর সাথে সাথে আমাদের স্বাস্থ্য ভালো রাখতেও সমান গুরুত্ব রাখে। আপেল, কলা, পেয়ারা, তরমুজ, ডালিম ইত্যাদি ফলে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, ভিটামিন ও খনিজ থাকে। তাই এই ফলগুলো আপনি ওজন কমানোর জন্য টক দইয়ের সাথে খেতে পারেন।
  • টক দই দিয়ে আপনি রায়তা বানিয়েও খেতে পারেন। পিয়াজ কুচি, কাঁচা মরিচ কুচি, জিরা গুঁড়ো টমেটো কুচি, টেস্টি মসলা এবং একটু বেশি করে টক দই মিশিয়ে রায়তা বানিয়ে নিন। ওজন কমাতে এই খাবারটি অনেক বেশি সাহায্য করবে।
উপরের এই নিয়ম গুলি মেনে আপনি যদি প্রতিদিন টক দই খান তাহলে ধীরে ধীরে আপনার ওজন খুব সহজেই কমে আসবে। ওজন কমানোর জন্য আপনি এইগুলো সকাল বেলা খেতে পারেন। সকালবেলা যদি খালি পেটে এই খাবারগুলো খান তাহলে আপনার ওজন খুব সহজে নিয়ন্ত্রণের ভেতরে চলে আসবে।

টক দই খেলে কি গ্যাস হয়

টক দই খেলে কি গ্যাস হয় এমন প্রশ্ন অনেকেই করে থাকেন। কারন আমাদের মধ্যে বেশিরভাগ মানুষেরই ধারণা রয়েছে যে টক খেলে আমাদের গ্যাসের সমস্যা হয়। টক দই সাধারণভাবে আমাদের গ্যাসের সমস্যা সৃষ্টি করে না বরং টক দই খেলে আমাদের হজম প্রক্রিয়া উন্নত হয়। টক দই এর মধ্যে রয়েছে প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়া। 

আর এই ব্যাকটেরিয়া অন্তের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়তা করে এবং হজম ক্ষমতা বাড়ায়। তবে কিছু কিছু মানুষের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যার জন্য টক দই খেলে পেটে গ্যাস হতে পারে। টক দইয়ের মধ্যে থাকা ল্যাকটোজ আপনার শরীর স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ নাও করতে পারে ফলে গ্যাসের সমস্যা সৃষ্টি হয় এবং বিভিন্ন ধরনের অস্বস্তি হতে পারে। অনেকের ক্ষেত্রে দুধ জাতীয় কোন খাবার খেলে গ্যাসের সমস্যা সৃষ্টি হয়। 

এছাড়া আপনি যদি অতিরিক্ত পরিমাণে টক দই খান তাহলে গ্যাসের সমস্যা দেখা দিতে পারে কিংবা টক দইয়ের সাথে অন্য কোন খাবার খেলে আপনার হজম সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে আপনি যদি সীমিত পরিমানে টক দই খান এবং নিয়ম অনুযায়ী খান তাহলে অবশ্যই টক দই থেকে আপনার গ্যাস হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। নিয়ম অনুযায়ী টক দই খেলে এবং পরিমিত পরিমাণে খেলে টক দই থেকে আপনার গ্যাস হবে না বরং আপনার পেটের বিভিন্ন সমস্যা দূর হবে। তারপরও আপনার যদি টক দই খাওয়ার পরে গ্যাসের সমস্যা সৃষ্টি হয় তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

সচার আচার জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলি ও উত্তর

১. গর্ভাবস্থায় দই ভাত খাওয়া যাবে কি?
হ্যাঁ অবশ্যই, গর্ভাবস্থায় দই ভাত একটি নিরাপদ খাবার। গর্ভাবস্থায় আপনি যদি দই ভাত খান তাহলে শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টির চাহিদা পূরণ হয়।

২. প্রতিদিন কতটুকু টক দই খাওয়া উচিত ?
প্রতিদিন এক কাপ করে টক দই আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ। কারণ এক কাপ দই এ ২৭৫ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম রয়েছে। তাই প্রতিদিন সকালে নাস্তার পরে এক কাপ দই আমাদের জন্য যথেষ্ট।

৩. টক দই খেলে কি কোলেস্টেরল বাড়ে?
টক দই খেলে আমাদের শরীরে উচ্চ রক্তচাপ এবং কোলেস্টেরল তৈরিতে বাধা দেয়। তাই টক দই খেলে আপনার শরীরের কোলেস্টেরল কমবে এবংহার্টের স্বাস্থ্য ভালো থাকবে।

৪. খালি পেটে টক দই খাওয়া যাবে কি?
খালি পেটে টক দই খেলে টক দইয়ের মধ্যে থাকা ল্যাকটিক অ্যাসিড ব্যাকটেরিয়াকে মেরে ফেলে এবং এসিডিটি বাড়িয়ে দেয় তাই খালি পেটে টক দই এড়িয়ে চলাই ভালো।

৫. টক দই কি ক্ষতিকর?
টক দই ক্ষতিকর না। টক দই আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী একটি খাদ্য। টক দই খেলে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় ডায়রিয়া সমস্যা দূর হয় এবং শরীরে বিষাক্ত পদার্থ জমতে পারে না।

রাতে টক দই খেলে কি হয়

রাতে টক দই খেলে কি হয় সে সম্পর্কে এখন আমরা বিস্তারিত আলোচনা করব। টক দই আমাদের শরীরের জন্য খুব উপকারী একটি খাদ্য। এর মধ্যে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ব্যাকটেরিয়া এবং নানান রকম খনিজ পদার্থ রয়েছে। আর এ উপাদান গুলো আমাদের শরীরে প্রবেশ করলে আমাদের শরীর ভালো থাকে। দই আমরা দিনের যেকোনো সময় খেতে পারি কিন্তু বিশেষজ্ঞরা রাতের বেলা দই খাওয়ার ব্যাপারে কিছুটা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। 

রাতের বেলা টক দই খেলে আপনার শরীরে কিছু ক্ষতি হতে পারে কিংবা অস্বস্তি ভাব হতে পারে। প্রাচীন আয়ুর্বেদিক চিকিৎসার মতে রাতের বেলা কখনই খাবার পরে টক দই খাওয়া উচিত নয়। দই আমাদের শরীরের টিস্যুর ভেতরে বিপরীত কার্যক্ষমতা বাড়ায় ফলে টক দই খেলে আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া করে। ফলে আপনি যদি রাতের বেলা টক দই খান তাহলে আপনার শরীরে কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া তৈরি হতে পারে চলুন তাহলে জেনে নেই রাতের বেলা টক দই খেলে কি হয় সে সম্পর্কে।

  • রাতে টক দই খেলে আপনার মুখে ব্রণের সমস্যা হতে পারে।
  • রাতের বেলা টক দই খেলে বমি বমি ভাব হতে পারে। কারণ রাতের বেলা টক দই খেলে আপনার পরিপাকতন্ত্রের উপরে খারাপ প্রভাব পড়ে।
  • রাতের বেলা টক দই খেলে আপনার যদি ঠান্ডা জনিত সমস্যা থাকে তাহলে ঠান্ডার সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। গলা ব্যথা, কিংবা সর্দি কাশির মত সমস্যাও দেখা দেয়। শরীরে অতিরিক্ত কম সৃষ্টি হয়।
  • আপনি যদি রাতের বেলা অতিরিক্ত পরিমাণে দই খান তাহলে স্থুলতার সমস্যা বাড়তে পারে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য সৃষ্টি হয়।
  • যাদের বাতের সমস্যা রয়েছে তাদের অবশ্যই দই থেকে দূরে থাকা উচিত কারণ। টক দই কিংবা মিষ্টি দই যে কোন দই জয়েন্টের ব্যথার সমস্যা বাড়িয়ে দেয়।
আশা করি উপরে আলোচনা থেকে আপনি বুঝতে পেরেছেন রাতে টক দই খেলে কি হয় এবং টক দই খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। দই যদি আপনার অনেক বেশি প্রিয় হয়ে থাকে এবং আপনি যদি দই খেতে পছন্দ করেন তাহলে অবশ্যই রাতে দই এড়িয়ে চলুন এবং দিনের বেলা খাওয়ার অভ্যাস করুন।

টক দই খাওয়ার উপযুক্ত সময়

টক দই খাওয়ার উপযুক্ত সময় সম্পর্কে আপনি যদি জানতে চান তাহলে আমি বলব পুষ্টিবিদরা বলে টক দই খাওয়ার উপযুক্ত সময় হলো সকাল বেলা। আপনি যদি দিনের শুরুতে টক দই খান তাহলে আপনার শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর হয় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি মেলে। দই আমাদের শরীরকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। 

তাই দিনের শুরুতে দই খেলে আমাদের শরীর সারাদিন ঠান্ডা থাকে ও শরীর থেকে ক্লান্তি ভাব দূর হয়। আপনি যদি সকালবেলা দই খেতে না পারেন তাহলে দুপুরের খাবারের পরও দই খেতে পারেন। খাবারের পরে দই খেলেও অনেক ধরনের উপকার পাওয়া যায়। খাবারের পরে দই খেলে আপনার শরীরে হজম প্রক্রিয়া উন্নত হয়। 

ভারী খাবার খুব সহজেই হজম হয় এবং শরীরের ভিতর অস্বস্তি ভাব দূর হয়। তবে খালি পেটে কিংবা রাতের বেলা কখনোই টক দই খাবেন না। খালি পেটে টক দই খেলে আপনার বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে। আপনি যদি দই খেতে চান তাহলে অবশ্যই সকালে খাবারের পরে কিংবা দুপুরের খাবারের পরে খেতে পারেন এতে অনেক বেশি উপকার পাবেন।

সকালে টক দই খাওয়ার উপকারিতা

সকালে টক দই খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই তেমন কোন ধারণা নেই কারণ আমরা দিনের যেকোনো সময় টক দই খেয়ে থাকি। কিন্তু আপনি কি জানেন, দিনের যেকোনো সময় ছাড়া শুধু সকালে টক দই খেলে আপনার শরীরে কি কি উপকার হতে পারে। সকালে খালি পেটে টক দই না খেয়ে যদি আপনি সকালের নাস্তার পরে টক দই খান তাহলে আপনার শরীরে বিভিন্ন ধরনের উপকার হয়। চলুন তাহলে জেনে নেই সকালে টক দই খেলে আপনার শরীরে কি কি উপকার হতে পারে।

  • টক দই খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর হয় ও শরীর থেকে দুর্বলতা ভাব চলে যাই।
  • সকালে টক দই খেলে আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণের ভেতরে থাকে। কারণ টক দইয়ের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন। তাই পেট অনেকক্ষণ পর্যন্ত ভরা থাকে এবং ওজন খুব সহজেই নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।
  • সকালে টক দই খেলে শরীর ঠান্ডা থাকে এবং শরীরের ভেতরের ক্ষতিকর টক্সিন গুলো খুব সহজে বাইরে বের হয়ে যায়।
  • সকালে টক দই খেলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং ত্বককে সারাদিন রোদের পোড়া ভাব থেকে রক্ষা করে।
  • আপনি যদি অনেক বেশি শারীরিক পরিশ্রম করেন তাহলে সকালে টক দই খেতে পারেন। টক দই আপনার শরীরে সারাদিনের এনার্জি আনতে সাহায্য করবে।

লেখকের শেষ কথা । টক দই খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

প্রিয় পাঠক, আশা করি টক দই খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে এতক্ষণে আপনি বিস্তারিত জেনে গেছেন এবং বুঝতে পেরেছেন টক দই আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য কতটা উপকারী। প্রতিদিন টক দই অবশ্যই খাদ্য তালিকায় রাখার চেষ্টা করুন এবং পরিমাণ মতন ও নিয়ম অনুযায়ী খাওয়া শুরু করুন। এছাড়া আপনি টক দই আপনার ত্বকের ওপরেও ব্যবহার করতে পারেন। 
এতে আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়বে ও রোদ পোড়া ভাব দূর হবে। আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইটটি প্রতিনিয়ত ভিজিট করুন। আর এই আর্টিকেল সম্পর্কে আপনার যদি কোন মন্তব্য থেকে থাকে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাবেন। আপনার মন্তব্যের অপেক্ষায় রইলাম আজকে তাহলে এ পর্যন্তই। আর এতক্ষণ আমাদের আর্টিকেলটি খুব মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য আন্তরিকভাবে শুভেচ্ছা।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বিডি অনলাইন আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url