শিশুদের সাবু খাওয়ার উপকারিতা
শিশুদের সাবু খাওয়ার উপকারিতা এই বিষয় সম্পর্কে আজকের আর্টিকেলে বিস্তারিত ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব। তাই অবশ্যই আর্টিকেলটির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমাদের সঙ্গেই থাকুন।
এই আর্টিকেলটি পড়লে আপনি আরো অনেক বিষয় জানতে পারবেন যেমন সাবু খেলে কি বাচ্চাদের ঠান্ডা লাগে, শিশুদের জন্য সাবুদানা দিয়ে বিভিন্ন রেসিপি। আর এই বিষয়গুলো জানতে অবশ্যই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
পেজ সূচিপএ
শিশুদের সাবু খাওয়ার উপকারিতা
শিশুদের সাবু খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে অনেক দুগ্ধ দানকারী মা জানতে চাই। কারণ শিশুকে ৬ মাস পূর্ণ হওয়ার পর থেকে পুষ্টিকর সব খাবার দেওয়া প্রয়োজন। আর সাবুদানা পুষ্টিগুণে ভরপুর এবং অনেক স্বাস্থ্যকরী খাবার।
তাছাড়া সাবুদানা শিশুদের শারীরিক উন্নয়নে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সাবুদানা শিশুর শরীরে প্রয়োজনীয় ঘাটতির চাহিদা পূরণ করে শিশুকে সঠিকভাবে বড় হতে সাহায্য করে। তাহলে চলুন জেনে নেই শিশুদের সাবুদানা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে।
- প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহঃ সাবুদানা শিশুর শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করতে খুবই শক্তিশালী একটি খাদ্য। শিশুকে সাবুদানা নিয়মিত খাওয়ালে শিশুর শরীরে দ্রুত এনার্জি বাড়ে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। সাবুদানার মধ্যে রয়েছে ভিটামিন বি, ফোলেট, ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, আয়রন, পটাশিয়াম ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ সব উপাদান। আরে উপাদান গুলো শিশুর শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করতে সক্ষম।
- হাড় মজবুত করেঃ সাবুদানার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম। আর এই ক্যালসিয়াম শিশুর হাড় মজবুত করতে এবং হাড়ের ভিতর বিভিন্ন ধরনের প্রদাহ কমাতে সহায়তা করে। তাই আপনি যদি শিশুকে সাবুদানা খাওয়ান তাহলে শিশুর শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ হয় এবং হাড়ের বিকাশ সঠিকভাবে হয়।
- ওজন বৃদ্ধিঃ সাবুদানা ওজন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। সাবুদানা এবং শর্করা সমৃদ্ধ খাবার হওয়ার জন্য শিশুর শরীরে ভালো চর্বি ও খুব দ্রুত ওজন বৃদ্ধি পায়। তাই আপনার বাচ্চার যদি বয়সের তুলনায় ওজন অনেক বেশি কম হয়ে থাকে তাহলে ওজন বাড়ানোর জন্য প্রতিদিন সাবুদানা খাওয়াতে পারেন। সাবুদানা বাচ্চার ওজন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
- হজম ক্ষমতা বৃদ্ধিঃ সাবুদানা একটি নরম খাবার। তাই বাচ্চা প্রতিদিন সাবুদানা খেলে বাচ্চার হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। প্রতিদিন বাচ্চাকে সঠিক নিয়মে সাবুদানা খাওয়ালে বাচ্চার হজম প্রক্রিয়া উন্নত হওয়ার সাথে সাথে পাচনতন্ত্রের কার্যকারিতা উন্নত হয়। তাই আপনার বাচ্চা যদি হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে চান তাহলে নিয়ম করে সাবুদানা খাওয়াতে পারেন।
- রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া বৃদ্ধি পায়ঃ সাবুদানার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম। তাই আপনি যদি আপনার বাচ্চার শরীরের রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া বৃদ্ধি করতে চান তাহলে সাবুদানা খাওয়াতে পারেন। সাবুদানা শিশুর শরীলের রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া স্বাভাবিক করে শরীরকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।
- শরীরে তাপমাত্রা কমায়ঃ সাবুদানা শিশুর শরীলের তাপমাত্রা কমাতে সহায়তা করে। সাবুদানা শীতল রাখতে সাহায্য করে এবং গরম ও শিশুর শরীর থেকে অস্বস্তি ভাব দূর করে।
- ক্লান্তি ভাব দূর: সাবুদানা শিশুর শরীরের শারীরিক ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে এবং শরীর থেকে ক্লান্তি ভাব দূর করে। শিশুর শরীরের দুর্বলতা দূর করে এবং ভালো ঘুম আসতে সহায়তা করে।
- রক্তস্বল্পতা দূর করেঃ সাবু শিশুর শরীরের রক্তস্বল্পতা দূর করতে সহায়তা করে। সাবুদানার মধ্যে রয়েছে আয়রন আর এই আয়রন শিশুর শরীরের রক্তশূন্যতা দূর করে ভালো রক্ত তৈরি করতে সহায়তা করে।
- পানির ঘাটতি পূরণঃ সাবুদানা শিশুর শরীরে পানির ঘাটতি পূরণ করতে সহায়তা করে। সাবুদানার পানি শিশুর শরীরে হাইড্রেশন ধরে রাখতে সহায়তা করে। এছাড়া আপনার বাচ্চা যদি ডায়রিয়ার মত সমস্যায় ভুগে তাহলে আপনি সাবুদানা খাওয়ালে শরীরে পানির ঘাটতি পূরণ হয়।
- কোষ্ঠকাঠিন্যর সমস্যা দূর হয়ঃ সাবুদানা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে। আপনার শিশু যদি অনেক বেশি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা, হজমের সমস্যা কিংবা কোষ্ঠকাঠিন্যের মত সমস্যা থাকে তাহলে আপনি সাবুদানা দুধ বা পানি দিয়ে খাওয়াতে পারেন। এতে মল নরম হয় এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর হয়।
- শিশুর জন্য নিরাপদ: সাবুদানার মধ্যে কোন ক্ষতিকর উপাদান থাকেনা এবং সাবুদানার মধ্যে এলার্জি সৃষ্টিকারী কোন উপাদান থাকে না। তাই এটি আপনার শিশুর জন্য খুবই নিরাপদ একটি খাবার।
আশা করি শিশুদের সাবু খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। আপনি যদি একজন বাচ্চার মা হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই বাচ্চা ছয় মাস বয়স হবার পর থেকে অল্প অল্প করে সাবুদানা খাওয়ানোর অভ্যাস করুন। সাবুদানা খেলে যেমন আপনার বাচ্চার পেট দীর্ঘক্ষণ পর্যন্ত ভরা থাকবে তেমন সাবুদানার ভেতরে থাকা বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান আপনার বাচ্চার শরীর ভালো রাখতে সহায়তা করবে। আশা করি শিশুদের সাবু খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আমরা আপনাদের বিস্তারিত জানাতে পেরেছি।
সাবুদানা খেলে কি বাচ্চার ঠান্ডা লাগে
সাবুদানা খেলে কি বাচ্চার ঠান্ডা লাগে এমন প্রশ্ন যদি আপনার মনে হয়ে থাকে তাহলে আমরা আপনাকে এই প্রশ্নের একটি সঠিক ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব। সাবুদানা খেলে বাচ্চার শরীর ঠান্ডা থাকে এই ধারণা থেকে অনেক মায়েরাই প্রশ্ন করেন যে সাবুদানা খেলে বাচ্চার ঠান্ডা লাগে কিনা। আবার অনেক মায়ের ধারণা রয়েছে যে বর্ষা কিংবা শীতকালে বাচ্চাকে সাবুদানা খাওয়ালে ঠান্ডা লাগার সম্ভাবনা রয়েছে।
সাবুদানা একটি পুষ্টিকর ও সুস্বাদু খাবার এবং বাচ্চার শরীরের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় একটি খাবার। শুধু বাচ্চারা না সাবুদানা বড়দের জন্যও অনেক বেশি উপকারী একটি খাবার। তবে পুষ্টিবিদরা বলেন যে সাবুদানা খেলে বাচ্চার ঠান্ডা লাগার কোন সম্ভাবনা নেই। সাবুদানার সাথে বাচ্চার ঠান্ডা লাগা কিংবা সর্দি লাগার কোন সম্পর্ক নেই। তবে কিছু কিছু বাচ্চা রয়েছে যাদের সাবুদানা খাওয়ার পরে ঠান্ডা লাগতে পারে।
আরো পড়ুন: বাচ্চাদের ভাতের মাড় খাওয়ার উপকারিতা
যদি সাবুদানায় আপনার বাচ্চার এলার্জি সমস্যা থাকে তাহলে সাবুদানা খাওয়ার পরে আপনার বাচ্চার ঠান্ডা লাগতে পারে অথবা আপনার বাচ্চার যদি আগে থেকে ঠান্ডা লেগে থাকে তাহলে সাবুদানা খাওয়ার পরে সামান্য পরিমাণে ঠান্ডা লাগতে পারে। যদি আপনার বাচ্চার ঠান্ডা লেগে থাকে কিংবা সর্দি, কাশির সমস্যায় ভুগে তাহলে সাবুদানা খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। আশা করি সাবুদানা খেলে কি বাচ্চার ঠান্ডা লাগে এই বিষয়ে আপনার মনে যে প্রশ্ন ছিল সে সম্পর্কে একটি সঠিক ধারণা পেয়েছেন।
সাবু খেলে কি বাচ্চা মোটা হয়
সাবু খেলে কি বাচ্চা মোটা হয় এমন প্রশ্ন অনেক মানুষই করে থাকে। সাবুদানা খেলে বাচ্চা মোটা হয় কিনা এমন কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। সাবুদানা যদি আপনি পরিমাণ মতন বাচ্চাকে খাওয়ান তাহলে কখনোই আপনার বাচ্চার ওজন বৃদ্ধি পাবে না। সাবুদানা পরিমাণ মতন খেলে বাচ্চার ওজন স্বাভাবিক থাকে। যেসব বাচ্চার ওজন কম রয়েছে তারা সাবুদানা খেলে ওজন নিয়ন্ত্রণের ভেতরে চলে আসে।
তাই আপনি যদি আপনার বাচ্চাকে প্রয়োজনমতো সাবুদানা খান তাহলে কখনোই বাচ্চা মোটা হয় না বরং বাচ্চার শরীর স্বাস্থ্য ভালো থাকে এবং বয়সের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ওজন নিয়ন্ত্রণের ভেতরে থাকে। তবে আপনার বাচ্চা যদি অনেক বেশি পাতলা হয়ে থাকে তাহলে সাবুদানার পরিমাণ বাড়াতে পারেন।
আপনি যদি আপনার বাচ্চাকে অতিরিক্ত পরিমাণে সাবুদানা খাওয়ান তাহলে বাচ্চার ওজন বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পুষ্টিবিদরা বলেন অতিরিক্ত পরিমাণে বাচ্চাকে সাবুদানা খাওয়ালে বাচ্চার ওজন বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দ্বিগুণ থাকে। আশা করি বুঝতে পেরেছেন সাবু খাওয়ার ওপরে বাচ্চার মোটা হওয়া কিংবা পাতলা হওয়া নির্ভর করছে ।
শিশুদের সাবু খাওয়ার অপকারিতা
শিশুদের সাবু খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে যদি আপনার জানা না থাকে তাহলে এখন আমরা আপনাকে শিশুদের সাবু খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো। উপরে আমরা শিশুদের সাবু খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। সাবু আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী একটি খাদ্য।
সাবু শুধু বড়দের জন্য না শিশুদের জন্য খুব উপকারী একটি খাদ্য। সাবু শিশুদের জন্য একটি নিরাপদ ও সহজপাচ্য খাদ্য হিসেবে পরিচিত। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সাবু খেলে শিশুদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। সব খাবারের যেমন উপকার রয়েছে তেমন অতিরিক্ত পরিমাণে কোন খাবার খেলে আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের অপকারিতা হয়। সাবু খেলে আমাদের শরীরে খুব কম পরিমাণে অপকারিতা হয়। চলুন তাহলে শিশুদের সাবু খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
- সাবুদানা খেলে আমাদের শরীরের যথেষ্ট পরিমাণে পানির ঘাটতি পূরণ হয় কিন্তু সাবুর মধ্যে কোন ফাইবার নেই। ফলে আপনি যদি শিশুকে অতিরিক্ত পরিমাণে সাবু খাওয়ান তাহলে শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্যর সমস্যা দেখা দেয়।
- সাবু কম ক্যালরিযুক্ত খাবার কিন্তু সাবুর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট রয়েছে। তাই আপনি যদি আপনার বাচ্চাকে প্রতিদিন অতিরিক্ত পরিমাণে সাবু খাওয়ান তাহলে রক্তের শর্করার মাত্রা বাড়ে এবং শিশু দ্রুত ওজন বাড়তে থাকে।
- শিশুকে সাবু খাওয়ানোর সময় অবশ্যই রান্নার বিষয়ে সতর্ক থাকা প্রয়োজন। আপনি যদি সাবু ভালোভাবে সিদ্ধ না করে শিশুকে খাওয়ান তাহলে শিশুর হজমের সমস্যা, পেটব্যথা, পেট ফাঁপা কিংবা বিভিন্ন ধরনের অস্বস্তি হতে পারে।
- সাবুদানার মধ্যে যে পরিমাণ ভিটামিন রয়েছে সে পরিমাণ ভিটামিন দিয়ে শিশুর শরীরের প্রয়োজনীয় সব ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব না। তাই আপনি যদি শুধু সাবুদানা দিয়ে শিশুর শরীরের প্রয়োজনীয় ঘাটতি পূরণ করতে চান তাহলে শিশুর শরীল প্রয়োজনীয় ঘাটতি থেকে বঞ্চিত হবে। কারণ সাবুদানার মধ্যে প্রোটিন, ভিটামিন ও মিনারেলের ঘাটতি রয়েছে। তাই আপনার শিশুর শরীর সঠিকভাবে সুস্থ রাখার জন্য সাবুদানার সাথে অন্যান্য পুষ্টিকর খাবার ও যোগ করা প্রয়োজন।
- শিশু যদি ঠান্ডা লাগার সমস্যা থাকে কিংবা আগে থেকেই ঠান্ডা লেগে থাকে তাহলে সাবুদানা খাওয়ানো উচিত নয়।
সাবুদানা একটি সুষম খাদ্য। তাই আপনি যদি আপনার বাচ্চাকে সাবুদানা খাওয়াতে চান তাহলে অবশ্যই সীমিত পরিমাণে খাওয়ান। অতিরিক্ত পরিমাণে সাবুদানা খাওয়ানো থেকে বিরত থাকুন এবং সাবুদানার সাথে প্রয়োজনীয় সব পুষ্টিকর উপাদান যোগ করুন।
তাছাড়া সাবুদানা বিভিন্ন ধরনের খাবারের সাথে মিশিয়ে খাওয়ালে সাবুদানা থেকে আরও বেশি উপকৃত হবেন। অনেক সময় বাচ্চাদের সাবুদানা খাওয়ার পরে এলার্জির সমস্যা হতে পারে। তাই সাবুদানা খাওয়ার পরে যদি বাচ্চাদের শরীরে চুলকানি, ফুসকুড়ি, কিংবা লালচে ভাব দেখা দেয় তাহলে অবশ্যই সাবুদানা এড়িয়ে চলুন।
আরো পড়ুন: অপরাজিতা ফুলের চায়ের অপকারিতা
এছাড়া বাচ্চাদের সাবুদানা খাওয়ানোর আগে অবশ্যই ভালোভাবে রান্না করুন। আপনি যদি আর্টিকেলের উপরের অংশটুকু পড়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই এতক্ষণে বুঝতে পেরেছেন শিশুদের সাবু খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে। আপনি যদি আপনার বাচ্চাকে উপরের পদ্ধতি গুলো মেনে সাবু খাওয়ান তাহলে সাবু আপনার বাচ্চার জন্য একেবারেই নিরাপদ একটি খাবার।
শিশুকে প্রতিদিন সাবু খাওয়ান যাবে কি
শিশুকে প্রতিদিন সাবু খাওয়ান যাবে কি? শিশুকে আপনি প্রতিদিন সাবু খাওয়াতে পারবেন তবে অবশ্যই শিশুকে প্রতিদিন সাবু খাওয়ানোর আগে একজন ভালো চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরী। সাবুর মধ্যে ভিটামিন, মিনারেল ও প্রোটিন কম পরিমাণে রয়েছে। তাই আপনি যদি শুধু সাবু দিয়ে শিশুর শরীরে প্রয়োজনীয় ভিটামিনের চাহিদা পূরণ করতে চান তাহলে এইটা কখনো সম্ভব না।
শিশুর যখন ছয় মাস বয়স হবে তখন আপনি শিশুর খাদ্য তালিকায় খুব অল্প করে সাবু রাখতে পারেন। প্রতিদিন আপনি শিশুকে সাবু খাওয়াতে পারেন তবে অবশ্যই অতিরিক্ত পরিমাণে না। প্রতিদিন অল্প অল্প করে শিশুকে সাবু দিয়ে শিশুর হজম ক্ষমতা বাড়ানো উচিত। তবে পুষ্টিবিদরা মনে করেন শিশুকে প্রতিদিন সাবু না দিয়ে সপ্তাহে ৩/৪ দিন সাবু খাওয়ানো উচিত।
এতে শিশুর শরীর ভালো থাকবে এবং সাবু থেকে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা কম হবে। তবে আপনার বাচ্চার যদি হজম ক্ষমতা বেশি হয় এবং সাবু খেতে অনেক বেশি পছন্দ করে তাহলে আপনি সপ্তাহের সাত দিনই অল্প পরিমাণে বাচ্চাকে সাবু খাওয়াতে পারেন। তাহলে এখন নিশ্চয় বুঝতে পেরেছেন আপনার শিশুকে প্রতিদিন সাবু খাওয়ানো যাবে কিনা।
শিশুদের জন্য সাবুদানার খিচুড়ি তৈরি রেসিপি
শিশুদের জন্য সাবুদানার খিচুড়ি তৈরির রেসিপি সম্পর্কে আপনার যদি জানা না থাকে তাহলে আমরা আপনাকে আজকে শিশুদের জন্য সাবুদানার খিচুড়ি তৈরির রেসিপি সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো। শিশুদের বাড়ন্ত বয়সের সময় পুষ্টিকর খাবারের সাথে সাথে বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়াও খুব প্রয়োজন। আর সেজন্য প্রতিটি মা শিশুদের বাড়ন্ত বয়সে খাবার নিয়ে অনেক বেশি চিন্তায় থাকেন।
আপনি যদি আপনার বাচ্চার খাবার নিয়ে চিন্তায় থাকেন তাহলে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টির চাহিদা পূরণের জন্য সাবুদানার খিচুড়ি খাওয়াতে পারেন। এছাড়া সাবুদানার খিচুড়ি খেতে অনেক বেশি সুস্বাদু হয় তাই বাচ্চারা খুব বেশি সাবুদানার খিচুড়ি খেতে পছন্দ করে।
আমরা নিচে সাবুদানার খিচুড়ির রেসিপি আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। নিচে সাবুদানার খিচুড়ি রেসিপিগুলো জেনে নিয়ে খুব সহজেই আপনি সাবুদানা দিয়ে আপনার বাচ্চার জন্য মজাদার খিচুড়ি বানিয়ে ফেলতে পারবেন। তাহলে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে শিশুদের জন্য সাবুদানার খিচুড়ি রেসিপি জেনে নেওয়া যাক।
উপকরণ
- ১ কাপ সাবুদানা
- ১টি ছোট সেদ্ধ আলু।
- ১টি ছোট গাজর।
- পরিমাণ মতন জিরা।
- ২টেবিল চামচ তেল।
- ২/৩টি কাঁচা মরিচ
- লবণ পরিমাণ মতন
- ১ চামচ চিনি
প্রস্তুত প্রণালী
- রাতে ঘুমাতে যাবার আগে সাবুদানা গুলো ভালোভাবে ধুয়ে ভিজিয়ে রাখুন।
- চুলায় একটি কড়ই দিয়ে তার ভেতরে তেল দিয়ে গরম করুন।
- তেল গরম হয়ে গেলে তেলের ভেতরে জিরা ও কাঁচা মরিচ দিয়ে ভাজুন।
- তারপর সেদ্ধ করে রাখা আলু মসলার ভেতরে দিন।
- আলু কিছুটা নরম হয়ে গেলে আলোর ভেতরে সাবুদানা গুলো দিয়ে দিন।
- তারপর লবণও চিনি দিয়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন।
- তারপর ঠান্ডা করে বাচ্চাদের খাওয়ানো শুরু করুন।
আপনি যদি সাবুদানার খিচুড়ি খেয়ে একটু বেশি নরম করতে চান তাহলে পরিমাণ মতো পানি যোগ করতে পারেন। আপনার যদি সাবুদানা রেসিপিটি সম্পর্কে জানা হয়ে থাকে তাহলে এখনই ছটফট তৈরি করে ফেলুন আপনার বাচ্চার জন্য সাবুদানার খিচুড়ি।
অতিরিক্ত জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী ও উত্তর
১. ১ বছরের বাচ্চাকে সাবুদানা খাওয়ানো যাবে কি?
আপনি আপনার বাচ্চাকে ছয় মাস বয়সের পর থেকে সাবুদানা খাওয়াতে পারেন। সাবুদানা একটি বাচ্চার জন্য খুবই পুষ্টিকর ও সহজপাচ্য খাবার। তাই বাচ্চার বয়স যখন ছয় মাস তখন থেকেই সাবুদানা দেওয়া উচিত।
২. সাবুদানা কিভাবে খেতে হয়?
সাবুদানা আপনি বিভিন্নভাবে খেতে পারেন। পানিতে ভিজিয়ে, সাবুদানার খিচুড়ি তৈরি করে, সাবুদানার বড়া করে, সাবুদানা বিভিন্ন সবজির সাথে মিশিয়ে, সাবুদানা দুধের সাথে মিশিয়ে কিংবা সাবুদানা দিয়ে ক্ষীর বানিয়ে খেতে পারেন।
৩. শিশুর জ্বর হলে সাবুদানা খাওয়া যাবে কি?
সাবুদানার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন ও ক্যালসিয়াম। আর এই উপাদানগুলো জ্বরের সময় আমাদের পেশির শক্তি জোগাতে সহায়তা করে। তাছাড়া সাবুদানা শরীরকে হাইড্রেট রাখতে সহায়তা করে, শরীরের তাপ কমাতে সহায়তা করে। তাই শিশুর যদি জ্বর হয় তাহলে শরীরের তাপ কমানোর জন্য আপনি সাবুদানা খাওয়াতে পারেন।
৪. সাবুদানা খেলে কি বাচ্চাদের কোষ্ঠকাঠিন্য হয়?
সাবুদানা একটি সহজপাচ্য খাবার। সাবুদানা খেলে বাচ্চাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়, পেটে গ্যাসের সমস্যা দূর হয়, পেট ফাঁপা, ডায়রিয়া, বমি বমি ভাব ইত্যাদি দূর হয়। তাই আপনার বাচ্চা যদি কষ্ট পছন্দ সমস্যায় ভুগে তাহলে নিয়ম করে সাবুদানা খাওয়াতে পারেন।
৫. ৬ মাসের বাচ্চাকে সাবু খাওয়া যাবে কি?
হ্যাঁ, অবশ্যই ছয় মাস পর থেকে আপনি বাচ্চাকে দুধ দিয়ে সাবু , সাবুর খিচুড়ি কিংবা বিভিন্ন ধরনের সবজির সাথে মিশিয়ে সাবু খাওয়াতে পারেন।
লেখকের শেষ কথা - শিশুদের সাবু খাওয়ার উপকারিতা
সাবুদানার মধ্যে অনেক স্বাস্থ্যকরী উপাদান রয়েছে। সাবুদানা বড়দের চাইতে শিশুদের জন্য অনেক বেশি উপকারী একটি খাদ্য। শিশুদের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য এবং শরীরের সঠিক গঠনের জন্য প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় সাবুদানা রাখা জরুরী। আপনি যদি আপনার শিশু স্বাস্থ্য নিয়ে অনেক বেশি সচেতন হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই শিশুকে প্রতিদিন অল্প অল্প করে সাবুদানা খাওয়ানোর অভ্যাস করুন।
প্রথমে অল্প অল্প করে খাওয়ানোর অভ্যাস শুরু করা উচিত। যদি দেখেন যে সাবুদানা খেয়ে শিশুর শরীরের কোন সমস্যা হচ্ছে না তাহলে অবশ্যই সাবুদানার পরিমাণ বাড়ানো প্রয়োজন। আর যদি সাবুদানা খাওয়ার পরে শিশুর শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হয় তাহলে সাবুদানা খাওয়ানো থেকে বিরত থাকা উচিত।
আরো পড়ুন: প্রতিদিন কয়টা আমলকি খাওয়া উচিত
আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি যদি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আমাদের এই আর্টিকেলটি অন্যদের সাথে শেয়ার করুন। আর এই আর্টিকেল সম্পর্কে আপনার যদি কোন মন্তব্য থেকে থাকে তাহলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাবেন। আপনাদের মন্তব্যের অপেক্ষায় রইলাম। আজকে তাহলে এ পর্যন্তই।
বিডি অনলাইন আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url