সফেদা ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা

সফেদা ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে আপনি যদি অনেক বেশি আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে আমাদের আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন। তাহলেই বিস্তারিত জেনে যাবেন।
সফেদা ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা
এছাড়া এই আর্টিকেল এর মধ্যে সফেদা ফল পাকানোর নিয়ম, সফেদা ফল কিভাবে খায়, সফেদা পাতার উপকারিতা, সফেদা ফলের খোসার উপকারিতা, সফেদা ফলের দাম সম্পর্কে বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করেছি। তাই আর্টিকেলটির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত খুব মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
পেজ সূচিপএ

সফেদা ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা

সফেদা ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা রয়েছে অনেক। সফেদা ফলের ভিতরে এমন কিছু পুষ্টিগুণ উপাদান রয়েছে যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য বিশেষ উপকারী। ফল খেতে কাঁচা অবস্থায় কস্টা হয়ে থাকে এবং পাকা অবস্থায় খুব মিষ্টি হয়ে থাকে। ছোট থেকে বড় সকলেই সফেদা ফল খেতে ভীষণ পছন্দ করে।
সফেদা ফল দেখতে গোলাকার ও ডিম্বাকৃতির হয়ে থাকে এবং সফেদার বাইরের খোসা হালকা বাদামি কালারের হয়ে থাকে এবং পাকা অবস্থাতেও সফেদা ফলের রঙের কোন পরিবর্তন হয় না। সফেদা ফল প্রায় সব জায়গায় চাষ করা হয় তবে বর্তমানে এটি দক্ষিণ এশিয়ায় বিশেষভাবে চাষ করা হয়। 

সফেদার ভেতরে রয়েছে হালকা কালো রংয়ের বীজ এবং এই বীজটি সামান্য টক টক স্বাদের হয়। সফেদার খোসা কাঁচা এবং পাঁকা কোন অবস্থাতেই খাওয়া যায় না তবে সফেদা পেকে গেলে খোসা ছাড়িয়ে ভেতরের অংশ খাওয়া যায়। তাহলে চলুন সফেদা ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেই।

সফেদা ফলের উপকারিতা

সফেদা ফলের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন যেমন ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স এ ছাড়া আরো রয়েছে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, আয়রন ইত্যাদি উপাদান।

  • শরীরের শক্তি সরবরাহ: সফেদা শরীরের শক্তি সরবরাহের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সফেদার মধ্যে রয়েছে প্রাকৃতিক চিনি। আর এই প্রাকৃতিক চিনি খুব দ্রুত আমাদের শরীরের শক্তি পুনরায় ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করে।
  • হজমের সহায়তা: সফেদার মধ্যে থাকা ফাইবার আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধিতে এবং খুব সহজে যে কোন খাদ্য হজম করতে সহায়তা করে। যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যর সমস্যা রয়েছে তাদের কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে সহায়তা করে।
  • ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে: সফেদা ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখতেও সহায়তা করে। সফেদার মধ্যে রয়েছে ভিটামিন সি আর ভিটামিন এ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। আর এই উপাদান গুলো আমাদের ত্বকের ভেতরে বিভিন্ন ধরনের জীবাণু ধ্বংস করে ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সহায়তা করে।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: সফেদার মধ্যে বিদ্যমান থাকা ভিটামিন সি আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। শরীর থেকে বিভিন্ন ধরনের রোগ নিরাময় করতে খুব দ্রুত কাজ করে।
  • চোখের জন্য ভালো: সফেদার মধ্যে রয়েছে ভিটামিন এ। ভিটামিন এ আমাদের চোখের জন্য বিশেষ উপকারী একটি উপাদান।
  • হাড় মজবুত করে: সফেদার মধ্যে রয়েছে ক্যালসিয়াম ও পটাশিয়াম। আর ক্যালসিয়াম ও পটাশিয়াম আমাদের হাড়ের ভেতরের বিভিন্ন ধরনের প্রদাহ ধ্বংস করে হাড়কে মজবুত করতে সহায়তা করে।
  • ক্যান্সার নিরাময় করে: সফেদার মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান ক্যান্সারের কোষগুলোকে ধ্বংস করে ক্যান্সার নিরাময় করে।
  • ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করে: সফেদার মধ্যে রয়েছে পটাশিয়াম আর এই পটাশিয়াম আমাদের ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণের সহায়তা করে।

সফেদা খাওয়ার অপকারিতা

প্রতিটি খাবারে যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমন কিছু কিছু খাবারের অপকারিতা ও রয়েছে চলুন তাহলে সফেদা খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে জেনে আসি।

  • ওজন: সফেদার মধ্যে রয়েছে প্রাকৃতিক চিনি তাই অতিরিক্ত পরিমাণে সফেদা খেলে আমাদের ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে।
  • ডায়াবেটিস: যারা ডায়াবেটিসের রোগী রয়েছেন তারা সফেদা কম পরিমাণে খাবেন কারণ সফেদার মধ্যে রয়েছে প্রাকৃতিক চিনি তাই অতিরিক্ত পরিমাণে সফেদা খেলে ডায়াবেটিস বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
  • কাঁচা সফেদা: কাঁচা সফেদা পেটের জন্য ক্ষতিকর তাই কোন সমস্যা ছাড়া কাঁচা সফেদা খাবেন না এতে আপনার বমি বমি ভাব পেট ব্যথা ও হজমের ব্যাঘাত ঘটতে পারে।
  • পেটের সমস্যা: সফেদা ফলের ভেতরে রয়েছে ফাইবার তাই অবশ্যই অতিরিক্ত পরিমাণে সফেদা ফল খাওয়া উচিত না। বিশেষ করে যাদের পেটের সমস্যা রয়েছে তারা কখনো অতিরিক্ত পরিমাণে সফেদা ফল খাবেন না।
  • এলার্জির সমস্যা: যাদের এলার্জি সমস্যা রয়েছে তারা অতিরিক্ত পরিমাণে সফেদা খাবেন না। কিংবা আপনার যদি সফেদা খাওয়ার পরে এলার্জি সমস্যা দেখা দেয় তাহলে অবশ্যই সফেদা খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।

গর্ভাবস্থায় সফেদা খাওয়ার উপকারিতা

গর্ভাবস্থায় সফেদা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে প্রতিটি গর্ভবতী মায়ের জানা উচিত। কারণ গর্ভাবস্থায় আমাদের শরীল বিভিন্ন খাবারের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাই খাবার খাবার ব্যাপারে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করে খাবার খেতে হবে। সফেদার মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন এবং পুষ্টিগুণ উপাদান তাই গর্ভাবস্থায় সফেদা একটি নিরাপদ খাবার হিসেবে পুষ্টিবিদরা বলে থাকে। চলুন তাহলে গর্ভ অবস্থায় সফেদা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে আসি।

  • সফেদার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাশিয়াম। তাই গর্ভাবস্থায় সফেদা খেলে আমাদের শরীরে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ থাকে। যাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে এবং গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপ নিয়ে চিন্তিত তারা প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় সফেদা রাখতে পারেন।
  • গর্ভাবস্থায় প্রতিটি গর্ভবতী নারীর শরীরে দুর্বলতা অনুভব করে এবং সকালের দিকে বমি বমি ভাব ও গ্যাসের সমস্যা অনুভব করে। তারা এসব সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন সফেদা খেতে পারেন।
  • সফেদার মধ্যে থাকা ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস গর্ভবতী মায়ের হাড় মজবুত করতে এবং গর্ভের সন্তানের হাড়কে সঠিকভাবে গঠন করতে সহায়তা করে। সফেদার মধ্যে রয়েছে ফাইবার। তাই গর্ভাবস্থায় সফেদা খেলে একজন গর্ভবতী মায়ের পেটের বিভিন্ন সমস্যা দূর হয় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে সহায়তা করে।
  • সফেদা গর্ভাবস্থায় রক্তস্বল্পতা দূর করতে সহায়তা করে। সফেদার মধ্যে রয়েছে আয়রন। আর আয়রন আমাদের শরীরে রক্ত বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
এছাড়া সফেদার মধ্যে এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপাদান রয়েছে যেগুলো আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং শরীরের ভেতরে বিভিন্ন ধরনের জীবাণু ধ্বংস করতে ভূমিকা রাখে। শরীরকে বিভিন্ন সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করে এবং শরীরের ভেতরে জমে থাকা ক্ষতিকর টক্সিন গুলো খুব সহজে বের করে ফেলে। তাই আপনি গর্ভাবস্থায় অবশ্যই পরিমাণ মতন সফেদা ফল রাখার চেষ্টা করুন।

সফেদা ফল পাকানোর নিয়ম

সফেদা ফল পাকানোর নিয়ম খুবই সহজ। খুব সহজে আপনি বাড়িতে ঘরোয়া পদ্ধতিতে ফরমালিন ছাড়াই সফেদা ফল পাকাতে পারেন। সফেদা যদি পুরোপুরি খাবার উপযোগী হয়ে যায় তাহলে কিছু কিছু সফেদা রয়েছে যেগুলো গাছেই পেকে যায়। আর গাছের পাকানো সফেদা খেতে কি যে মজা হয় সেটা আপনি যদি না খান তাহলে বুঝতে পারবেন না। 
সফেদা ফল পাকানোর নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
সফেদা পাকানোর জন্য আপনি গরম কোন জায়গা নির্বাচন করতে পারেন। গরম কোন জায়গায় কাপড় দিয়ে হালকা ভাবে ঢেকে রাখলেই দুই-তিন দিনের ভেতরেই সফেদা পাকা শুরু করে। এছাড়া আপনি সফেদাগুলোকে একটি পলাথিনে ভরে চালের ড্রামের ভিতরে রেখে দিতে পারেন। এতে দুই একদিনের ভেতরে সব সফেদাগুলো পেঁকে যাবে।

সফেদা ফল কিভাবে খায়

সফেদা ফল কিভাবে খায় সে সম্পর্কে অনেকেরই ধারণা নেই। সফেদা ফল একটি পুষ্টিকর খাবার তাই আমরা সকলেই সফেদা ফল খাওয়ার চেষ্টা করব। সফেদা ফল ছোট থেকে বড় সকলের জন্যই উপকারী। কিন্তু অনেকে রয়েছেন যারা সফেদা ফল চিনে না কিংবা কিভাবে খেতে হয় সে সম্পর্কে জানে না। সফেদা ফল সাধারণত আপনি দুই ভাবেই খেতে পারেন। 
সফেদা ফল আপনি খোসা সহকারে খেতে পারেন এতে বেশ উপকার পাবেন। প্রথমে পাকা সফেদা গুলো খুব ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিয়ে খোসা সহকারে ভেতরের বিচি ফেলে খেতে পারেন। এছাড়া সফেদার উপরের খোসা গুলো হাত দিয়ে ছাড়িয়ে ভেতরের অংশটুকু খেতে পারেন তবে অবশ্যই বিচিগুলো ফেলে দিতে হবে।

সফেদা পাতার উপকারিতা

সফেদা পাতার উপকারিতা সম্পর্কে জানলে আপনি অবাক হবেন। সফেদার মত সফেদা পাতার ও বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিগুণ উপাদান রয়েছে। সফেদা পাতা বহু যুগ আগ থেকে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে। চলুন তাহলে সফেদা পাতার কিছু পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানি। সফেদা পাতার মধ্যে থাকা অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি শরীরের বিভিন্ন ধরনের ব্যথা কমাতে, প্রদাহ কমাতে সহায়তা করে। 

সফেদা পাতার মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। আর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে, বিভিন্ন ধরনের আক্রমণ থেকে শরীরকে রক্ষা করতে এবং ত্বকের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করতে সহায়তা করে। সফেদা পাতা লিভার ও কিডনির সমস্যা দূর করতেও ভূমিকা রাখে। লিভার ও কিডনি থেকে বিষাক্ত পদার্থগুলো বের করে দেয় খুব সহজে। 

সফেদা পাতার মধ্যে রয়েছে এমন কিছু উপাদান যেগুলো ক্যান্সারের কোষের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করে। এছাড়া প্রতিদিন সফেদা পাতা খেলে গ্যাস্টিকের সমস্যা, ডায়রিয়ার সমস্যা এবং অন্তের যদি কোন ইনফেকশন থাকে সেই ইনফেকশন দূর করতেও সহায়তা করে। তাই অবশ্যই একজন ভালো চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে আপনি সফেদা পাতা খাওয়া শুরু করুন।

সফেদা ফলের খোসার উপকারিতা

সফেদা ফলের খোসার উপকারিতা সম্পর্কে হয়তো আমরা অনেকেই জানিনা কারণ সফেদা ফলের খোসা আমরা বেশিভাগ সময় ফেলে দেই। খুব কম সংখ্যক মানুষই সফেদা ফলের খোসা বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করে। এছাড়া সবাই সফেদা ফলের ভেতরের অংশ খেয়ে বাইরের খোসা আমরা অপ্রয়োজনীয় ভেবে ফেলে দেই। কিন্তু সফেদা ফলের খোসার মধ্যেও যে গুরুত্বপূর্ণ কিছু ভিটামিন রয়েছে সে সম্পর্কে আমাদের ধারণায় নেই। 
সফেদা ফলের খোসার উপকারিতা


চলুন তাহলে আজকে আমরা জানি সফেদা ফলের খোসার উপকারিতা সম্পর্কে। সফেদা ফলের খোসার মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান। আর এন্টি ইনফ্লেমেটরি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ও ত্বকের মৃত কোষগুলোকে জীবিত করতে সহায়তা করে এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা অনেক গুণ বাড়িয়ে দেয়। সফেদা ফলের খোসার মধ্যে রয়েছে ফাইবার এবং সফেদা ফল একটি আশঁযুক্ত ফল।
তাই প্রতিদিন সফেদা ফলের খোসা খেলে আমাদের পেটের বিভিন্ন সমস্যা দূর হয় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে সহায়তা করে। সফেদা ফলের মধ্যে থাকা ভিটামিন সি আমাদের ত্বকের বিভিন্ন ধরনের প্রদাহ কমাতে সহায়তা করে। সফেদা ফলের খোসার মধ্যে থাকা পটাশিয়াম উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের সহায়ক। এছাড়া যারা ডায়াবেটিসের রোগী রয়েছেন তারা প্রতিদিন সফেদা খেলে রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমিয়ে সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখে। 

আপনি যদি সফেদা খাওয়ার সময় খুব ভালোভাবে সফেদাটি পরিষ্কার করে নিয়ে খোসা সহকারে খেতে পারেন তাহলে সফেদা থেকে পুরোপুরি উপকার পাবেন। তবে অবশ্যই সফেদা খোসার সহকারে খাওয়ার আগে একজন ভালো চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নেওয়া উত্তম।

সচার আচার জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী ও উত্তর

১. সফেদা ফলে কি কি ভিটামিন আছে ?
সফেদা ফলের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন যেমন ভিটামিন এ, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, ভিটামিন সি ছাড়া আরো রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফাইবার, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম ইত্যাদি উপাদান।

২. কাঁচা সফেদা খেলে কি হয় ?
কাঁচা সফেদা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো না। কাঁচা সফেদা খেলে আপনার পেটে ব্যথা, কোষ্ঠকাঠিন্য, বমি বমি ভাব, বুক জ্বালাপোড়া, শ্বাসকষ্টের সমস্যা, গলা ব্যথা, হজমের সমস্যা, এবং কারো কারো ক্ষেত্রে এলার্জি সমস্যা দেখা দিতে পারে।

৩. সফেদা ফলের স্বাদ কেমন ?
কাঁচা অবস্থায় সফেদা ফলের স্বাদ আঠালো, সামান্য তিক্ত ও রুক্ষ স্বাদের হয়ে থাকে। পাকা অবস্থায় সফেদা ফল মধুর মত ঘ্রান ও অতিরিক্ত মিষ্টি স্বাদের হয়ে থাকে।

৪. সফেদা ফল কখন পাকে ?
সফেদা ফল সাধারণত সারা বছরই পাওয়া যায়। সফেদা ফলের বয়স ৬ থেকে ৮ মাস হলেই পাকা শুরু করে।

৫. সফেদা কি মাসে পাকে ?
সফেদা গাছ সাধারণত এপ্রিল থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত ফল দিয়ে থাকে এবং ৭ থেকে ৮ মাসের মধ্যেই সফেদা ফল পাকা শুরু করে। মোট কথা হলো সফেদা গাছ এপ্রিল থেকে আগস্টের মধ্যে ফল দিয়ে থাকে এবং পরের বছর এপ্রিল থেকে আগস্টের মধ্যে সফেদা ফল পাকা শুরু করে।

সফেদা ফলের দাম

সফেদা ফলের দাম সম্পর্কে অনেকেই জানেনা। আজকে আমরা এই আর্টিকেলে আপনাকে সফেদা ফলের দাম সম্পর্কে একটি সঠিক ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব। উপরে এতক্ষণে হয়তো আপনি জেনে গেছেন সফেদা ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য বিশেষ উপকারী একটি ফল তবে এর অপকারিতাও রয়েছে কিছু কিছু। 

আপনি যদি পরিমাণ মতন সফেদা ফল প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখেন তাহলে অবশ্যই অপকারের চাইতে উপকারিতা হবে বেশি। সফেদা ফল প্রায় সারা বছরই পাওয়া যায় এবং এই ফলটির দাম খুবই কম হয়ে থাকে। তাই আপনার যদি সফেদা ফল প্রিয় হয়ে থাকে তাহলে আপনি সফেদা ফল বাজার থেকে খুব সহজে কিনে খেতে পারেন কিংবা বাড়ির আশেপাশে চাষ করে খেতে পারেন। 

বর্তমানে সফেদা ফলের দাম একেক জায়গায় একেক রকম হয়ে থাকে। তবে বিভিন্ন জায়গা থেকে ধারণা নিয়ে আমরা আপনাকে সফেদা ফলের দাম সম্পর্কে একটি ধারণা দিতে চেষ্টা করব। চলুন তাহলে সফেদা ফলের দাম সম্পর্কে জেনে নেই।

  • ভালো মানের সফেদা আপনি বাজারে ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে পেয়ে যাবেন।
  • আর যদি একটু নিম্নমানের নিতে চান তাহলে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে পেয়ে যাবেন।
তবে বাজার থেকে সফেদা কেনার আগে অবশ্যই ভালোভাবে দেখে নেওয়া উচিত কিংবা ভালো দোকানদারের কাছ থেকে নেওয়া উচিত। ভালভাবে দেখে নিতে হবে যে ফরমালিন দেওয়া আছে কিনা। কারণ ফরমালিনযুক্ত ফল আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য মোটেও উপকারী না।

লেখকের শেষ কথা - সফেদা ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা

সফেদা ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা আপনি এতক্ষণে বিস্তারিতভাবে জেনে গেছেন। এবং নিশ্চয়ই এই বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন যে সফেদা ফল খেলে আমাদের শরীরে কি কি উপকার হতে পারে এবং অতিরিক্ত পরিমাণে সফেদা ফল খেলে আমাদের শরীরে কি কি অপকারিতা হতে পারে। সফল একটি পুষ্টিকর খাবার এবং আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য বিশেষ উপকারী একটি খাদ্য। 

তাছাড়া সফেদা ফল মিষ্টি জাতীয় খাবার বলে আমরা সকলেই এটি খেতে খুব পছন্দ করি। বিশেষ করে আমাদের দেশে সফেদা ফল অনেক বেশি চাষ হয় এবং খুব সহজেই পাওয়া যায় বলে আমরা কিনে খেতে পারি কিংবা চাষ করে খেতে পারি। এছাড়া এই ফলটির দাম আমাদের কেনার সাধ্যের মধ্যেই থাকে তাই খুব সহজেই আমাদের খাদ্য তালিকায় রাখতে পারি। 

আপনি যদি আপনার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় খুব কম করে হলেও একটি করে সফেদা ফল খান তাহলে সফেদা ফলের মধ্যে থাকা ভিটামিন গুলো আপনার স্বাস্থ্যের বিভিন্ন ধরনের উপকার নিয়ে আসবে। আমাদের আর্টিকেলটি আপনার যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুবান্ধবদের সাথে শেয়ার করুন এবং আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো দিয়ে রাখুন কারন আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে প্রতিনিয়ত এরকম আর্টিকেল পোস্ট করে থাকি। আর এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বিডি অনলাইন আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url