গুনগুনি পোকা তাড়ানোর ৫টি উপায়
গুনগুনি পোকা তাড়ানোর উপায় সম্পর্কে আপনার যদি জানা না থাকে তাহলে আমাদের এই আর্টিকেল থেকে বিস্তারিতভাবে জেনে নিতে পারবেন।
আমরা এই আর্টিকেলে আপনাকে লাইটের পোকা তাড়ানোর উপায়, ঘর থেকে পোকামাকড় তাড়ানোর দোয়া ইত্যাদি আরো অনেক বিষয় সম্পর্কে জানাবো। তাই আপনি যদি এ বিষয়গুলো জানতে অনেক বেশি আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে পুরো আর্টিকেল জুড়ে আমাদের সঙ্গে থাকুন।
পেজ সূচিপএ
গুনগুনি পোকা তাড়ানোর উপায়
গুনগুনি পোকা তাড়ানোর উপায় সম্পর্কে তারাই জানতে চাই যাদের বাড়িতে গুনগুনি প্রকার উপদ্রব অনেক বেশি। গুনগুলি পোকা সাধারণত মুরগির জীবাণু থেকে উৎপন্ন হয়ে থাকে তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় পচা বা নষ্ট সবজি, বাথরুম বা রান্নাঘর না থাকলে কিংবা বিভিন্ন ধরনের খাবার জুসও চিনি অনেকদিন এক জায়গায় পড়ে থাকলে গুনগুনি প্রকার উপদ্রব সৃষ্টি হয়।
আরো পড়ুনঃ ছেলেরা তেঁতুল খেলে কি হয়
গুন গুনি পোকা খুব বাজে ধরনের একটি পোকা। এই পোকা গুলো মানুষের শরীরে বিভিন্ন ধরনের রোগ জীবাণু ছড়ায়। এছাড়া এই পোকা গুলো মানুষের শরীরে মধ্যে হাটাহাটি করে। মুরগি দীর্ঘদিন ডিমে তা দেওয়ার ফলে এক ধরনের পোকা সৃষ্টি হয় আর এই পোকা গুনগুনি পোকা নামে পরিচিত। গুনগুনি পোকা তাড়ানোর জন্য বিশেষ কিছু ঘরোয়া উপায় রয়েছে। চলুন তাহলে গুনগুনি পোকা তাড়ানোর উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।
- মুরগি মুরগি যেখানে ডিমে তা দেয় সে জায়গায় যদি কোন খড় থাকে তবে সেই খড়গুলো আগুনে পুড়িয়ে ফেলতে হবে।
- যদি কোন বস্তা দেওয়া থাকে বস্তা ধুয়ে রোদে শুকিয়ে নিতে হবে।
- ঘরের চারিদিকে ভেজা কাপড় দিয়ে রাখলে গুনগুনি পোকা পুরো বাড়ি ছড়াতে পারে না।
- বাজারে বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক পাওয়া যায় এগুলো আপনি গুনগুনি পোকা তাড়ানোর জন্য ব্যবহার করতে পারেন।
- এছাড়া বাড়ির ঘর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও জীবাণুমুক্ত রাখা অপরিহার্য।
লাইটের পোকা তাড়ানোর উপায়
লাইটের পোকা তাড়ানোর উপায় সম্পর্কে আমাদের সকলের জানা উচিত কারন প্রায় সকল বাড়িতে আমরা লক্ষ্য করি লাইটের বিভিন্ন ধরনের পোকা বিরক্ত করে। অনেক সময় পোকার কারণে ঘরের লাইট পর্যন্ত জ্বালানো সম্ভব হয় না। বিশেষ করে সন্ধ্যার সময় ছোট ছোট পোকা লাইটের চারিদিকে ঘুরতে থাকে।
এই প্রকার উপদ্রব এতটাই বেশি যে রাতে লাইট জ্বালিয়ে খাবার খাওয়া পর্যন্ত সম্ভব হয় না। আমরা বিভিন্নভাবে লাইটের পোকা তাড়ানোর চেষ্টা করি কিন্তু কোন উপায়ে পোকা তাড়ানো সম্ভব হয় না। আজকে আমরা জানবো লাইটের পোকা তাড়ানোর বিভিন্ন উপায় সম্পর্কে। এই উপায় গুলো ব্যবহার করে আপনি লাইটের পোকা তাড়াতে পারবেন।
- ফলের গন্ধ: লেবু বা কমলার মত সাইট্রাস জাতীয় ফলগুলো পোকামাকড় তাড়াতে খুবই কার্যকর। এই জাতীয় ফলগুলো রস বের করে স্পেরে বোতলে ভরে বাড়িতে স্প্রে করতে পারেন এতে লাইটের পোকা দূর হবে।
- রসুন: রসুনের কয়েকটি কোয়া খুব ভালোভাবে থেঁতো করে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে বোতলের সাহায্যে বাড়িতে স্প্রে করুন।
- ভিনেগার: জন্য ভিনেগার ভালো কাজ করে এছাড়া এটি ব্যবহারে নিরাপদ। স্পেরে বোতলে ভরে আপনি ভিনেগার বাড়ির প্রত্যেকটা জায়গায় স্প্রে করতে পারেন। এটি আপনার পোকা তাড়াতে সাহায্য করবে।
- দারুচিনি: পোকা তাড়ানোর জন্য আপনি দারুচিনিও ব্যবহার করতে পারেন। দারুচিনি ভালো করে থেঁতো করে বাড়ির বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে রাখুন। দারুচিনি তীব্র গন্ধ পোকা এবং পিঁপড়া দূর করতে সাহায্য করে।
- নিম পাতা: পোকা তাড়ানোর জন্য আপনি নিম পাতার স্প্রে ব্যবহার করতে পারেন। নিম পাতাগুলো খুব ভালোভাবে থেঁতো করে পানির সাহায্যে মিশিয়ে স্প্রে করুন।
- সুগন্ধি তেল: পোকা তাড়ানোর জন্য সুগন্ধি তেল খুব কার্যকর। কয়েক ফোটা সুগন্ধি তেল নিয়ে পানির সাথে মিশিয়ে ঘরের মেঝে পরিষ্কার করতে পারেন এতে পোকা আসা অনেকটাই কমে যায়।
- বেকিং সোডা ও লেবুর স্প্রে ব্যবহার: আপনি লাইটের পোকা তাড়ানোর জন্য বেকিং সোডা ও লেবুর স্প্রে একসাথে ব্যবহার করতে পারেন। লেবু থেকে রস বের করে বেকিং সোডা সাথে মিশিয়ে একটি স্প্রে বোতলে ভরে ঘরে স্প্রে করুন। এতে বিভিন্ন জায়গা থেকে পোকা দূর হবে এবং লাইটের পোকাদমন হবে।
- সুগন্ধযুক্ত মোমবাতি: পোকাতানোর জন্য আপনি সুগন্ধযুক্ত মোমবাতিও ব্যবহার করতে পারেন। যেমন ল্যাভেন্ডার, লেমনগ্রাস ইত্যাদি।
- কম আলো ব্যবহার: পোকামাকড় যেহেতু তৃপ্ত আলো পছন্দ করে তাই আপনি কমালো ব্যবহার করতে পারেন। আর এভাবেও লাইটের পোকা দাঁড়ানোর সম্ভব।
ঘর থেকে পোকামাকড় তাড়ানোর দোয়া
ঘর থেকে পোকামাকড় তাড়ানোর দোয়া ব্যবহার করেও পোকামাকড় তাড়ানো সম্ভব। আমরা বিভিন্ন ধরনের দেখে কম বেশি সকলেই ভয় করি। আর এমন কিছু পোকা রয়েছে যেগুলো বিষাক্ত এবং কামড়ালে আমাদের বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি হয় এমন কি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। তাই এসব পোকা থেকে ক্ষতি হওয়ার আগেই সতর্ক থাকার জরুরি।
আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) অন্যান্য অনেক বিষয়ে দোয়া শিখানোর সাথে সাথে আমাদের সাপ, কিংবা বিভিন্ন ধরনের হিংস্র প্রাণী থেকে বাঁচার জন্য দোয়া শিখিয়েছেন। আর আমরা যদি এই দোয়াগুলো দিনে তিনবার পাঠ করি তাহলে বিভিন্ন ধরনের হিংস প্রাণী কিংবা বিভিন্ন ধরনের পোকামাকড় থেকে মহান আল্লাহতালা আমাদের রক্ষা করবেন। তাহলে চলুন ঘর থেকে পোকামাকড়ানোর কিছু দোয়া সম্পর্কে জেনে নেই।
- ঘরের বিভিন্ন কোনায় আয়াতুল কুরসি পড়ে ফু দিন। আয়াতুল কুরসি পরে যেখানে ফু দেওয়া হয় সেখানে আল্লাহর হেফাজত নাযিল হয়।
- সূরা ফালাক এবং সূরা নাস পোকামাকড় থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দোয়া হিসেবে পরিচিত। এই দোয়াগুলো পড়ে যদি আপনি ঘরের তিন কোনায় ফু দেন তাহলে পোকামাকড় ঘরে ঢুকতে পারবে না।
- দোয়াঃ আউজু বিকালি মাতিল্লাহিত তাম্বাতি-মিন-শাররি মা খলাক।
- অর্থঃ আল্লাহর সৃষ্টির যাবতীয় অনিষ্ট থেকে আমি আশ্রয় চাই।
- দোয়াঃ বিসমিল্লাহিল্লাজি লা ইয়াদুররু মা আসমিহি শাইউন ফিল আরদ্বি ওয়ালাফিস সামা-ই ওয়া হুওয়াস সামি'উল আলিম।
- অর্থঃ আমি আল্লাহর নামে শুরু করছি, আল্লাহ সব শোনেন এবং সব জানেন এবং আল্লাহর কোন কিছুই আল্লাহর হুকুম ছাড়া চলেনা।
বাথরুমের পোকা তাড়ানোর উপায়
বাথরুমের পোকা তাড়ানোর উপায় সম্পর্কে এখন আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জানবো।গুনগুনি পোকা তাড়ানোর উপায় সম্পর্কে আপনারা ইতিমধ্যেই জেনেছেন। অনেক সময় আমাদের বাথরুমে বিভিন্ন ধরনের পোকা দেখা যায়। আর বাথরুমে যেতে এমনিতেই আমাদের খুব অস্বস্তি হয় তার ভেতরে যদি বাথরুমে পোকা দেখা যায় তাহলে বিরক্তিটা আরো বেশি বেড়ে যায়। আমি মনে করি সবচাইতে বেশি পরিষ্কার রাখা উচিত বাথরুম।
কারণ বেশিরভাগ জীবাণু আমাদের শরীরে প্রবেশ করে বাথরুম থেকে। তাই আজকে আমরা কয়েকটি সহজ উপায়ের মাধ্যমে কিভাবে বাথরুম পরিষ্কার করা যায় কিংবা বাথরুমের পোকা তাড়ানো যায় সে সম্পর্কে একটি ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব। আপনি যদি এই উপায় গুলো অবলম্বন করেন তাহলে খুব তাড়াতাড়ি বাথরুমের পোকা দমন করতে পারবেন। তাহলে চলুন বাথরুমের পোকা তাড়ানোর উপায় সম্পর্কে জেনে নেই।
- বাথরুমে কখনোই কোন খাবার জিনিস ফেলে রাখবেন না। আমাদের অনেকের ভেতরেই খারাপ অভ্যাস রয়েছে বাথরুমে খাবার খেতে খেতে প্রবেশ করা। এতে আপনার বাথরুমে পোকার উৎপাত বাড়বে।
- বাথরুম সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন। বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করুন। যেন পোকা কোনভাবে বাথরুমে বংশবিস্তার করতে না পারে।
- বাথরুম পরিষ্কার করার সময় অবশ্যই ঘষে ঘষে এবং বাথরুমের দেয়ালে লেগে থাকা ময়লা ও কীটনাশকের সাহায্যে পরিষ্কার করুন।
- বাথরুম ব্যবহার করার পরে অবশ্যই একটু বেশি পানি ব্যবহার করুন। যাতে মল খুব সহজেই নিচে চলে যায়।
- বাথরুমে পর্যাপ্ত পরিমাণে আলো বাতাসের ব্যবস্থা রাখুন। যাতে বাথরুম ব্যবহারের পরে ভেতরে গন্ধ না থাকে বাইরে বের হয়ে যায়।
- বাথরুমের জীবাণু ধ্বংস করার জন্য আপনি বাথরুমের লেবুর খোসা কিংবা তেজপাতা রেখে দিতে পারেন। লেবুর খোসা বাথরুমে সুগন্ধ ছড়াবে এবং তেজপাতা পোকা দমনের জন্য খুবই জনপ্রিয়। এছাড়া বাজারে বিভিন্ন ধরনের পোকা মারার স্প্রে পাওয়া যায় এগুলো ব্যবহার করেও আপনি পোকা সহজেই ধ্বংস করতে পারেন।
- বাথরুমের উপরে অপ্রয়োজনীয় পানি ফেলা বন্ধ করুন। বাথরুমের ওপরে স্যাঁত স্যাঁতে ভাব থাকলে সেখানে পোকা জন্ম নেয়।
- সপ্তাহে তিন দিন অন্তত বাথরুমের ভেতরে গরম পানি ব্যবহার করুন এতে পোকা দমন হবে এবং পোকা ডিম্বাশয় গুলো খুব সহজেই মারা যাবে।
- আর সর্বশেষে একটি কথা বাথরুমের দরজা অবশ্যই সঠিক মাপে বানানোর চেষ্টা করুন। যাতে বাথরুমের দরজার ফাঁক দিয়ে কোন পোকামাকড় প্রবেশ করতে না পারে। যদি বাথরুমের দরজার ফাঁক দিয়ে পোকামাকড় ভেতরে প্রবেশ করে তাহলে আপনি উপরের পদ্ধতি গুলো ব্যবহার করেও কোন লাভ হবে না।
ছারপোকা তাড়ানোর ঘরোয়া উপায় কি
ছারপোকা তাড়ানোর ঘরোয়া উপায় কি সে সম্পর্কে আমাদের সকলেরই জানা উচিত কারণ ছারপোকা একটি আতঙ্ক পোকা হিসেবে পরিচিত। কারণ ছারপোকা একবার বাড়িতে বাসা বাঁধলে এই পোকা বাড়ি থেকে বের করা খুব কঠিন। সাধারণভাবে ছারপোকাকে রক্তচোষা পোকা বলেও অনেকেই চিহ্নিত করে থাকেন।
এই পোকা মানুষের বিছানার, বালিশে কিংবা তোষকের ভেতরে বসবাস করে থাকে এবং খুব সহজে আমাদের রক্ত চুষে নেয়। দিনের বেলা ছারপোকা তেমন সমস্যা সৃষ্টি করে না কিন্তু রাতের বেলা ছারপোকা অতিরিক্ত পরিমাণে বিরক্ত করে। এতে রাতের ঘুম ব্যাহত হয়। তাই অবশ্যই ছারপোকা অতি দ্রুত দমন করা প্রয়োজন। চলুন তাহলে ছারপোকা তাড়ানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জেনে আসি।
- একমুখ পানিতে এক চামচ স্যাভলন ও এক চামচ ডেটল মিশিয়ে বালিশে এবং বিছানার স্প্রে করুন। এতে খুব সহজেই ছারপোকা চলে যাবে।
- একটি শসা ভালো করে বিলিন্ডারে মিশ্রিন করে যেখানে যেখানে ছারপোকার উপদ্রব সেখানে লাগিয়ে দিন। দেখবেন দুই-একদিনের ভেতরে ছারপোকা দমন হয়ে গেছে।
- যদি অতিরিক্ত পরিমাণে ছারপোকা হয়ে থাকে তাহলে গরম পানিতে চাদর এবং বিছানার বিভিন্ন উপকরণ ধুয়ে নিন। এ ছাড়া তোশক তীব্র রোদে শুকাতে দিন। কারণ ছারপোকা তীব্র গরম সহ্য করতে পারে না এবং খুব তাড়াতাড়ি মারা যায়।
- প্রথমেই ছারপোকা দমন করা উচিত। তাই যদি দেখেন ছারপোকা হয়েছে তাহলে অল্পতেই আসবাবপত্র রৌদ্রে শুকাতে দিন।
- এছাড়া ছারপোকা মারার জন্য আসবাবপত্রে কেরোসিনের প্রলেপ দিতে পারেন।
বিছা পোকা তাড়ানোর উপায়
বিছা পোকা তাড়ানোর উপায় সম্পর্কে এখন আমরা জানবো। উপরে আমরা আলোচনা করেছি গুনগুনি পোকা তাড়ানোর উপায় সম্পর্কে। বিছা পোকা বিভিন্ন বিষাক্ত পোকা গুলোর মধ্যে একটি বিষাক্ত পোকা হিসেবে পরিচিত। বিছা পোকা সাধারণত পাট গাছ, পেয়ারা গাছ অথবা সজনে গাছে দেখা যায়। এ ছাড়া আরো অনেক বিভিন্ন ধরনের গাছেও বিছা পোকা দেখা যায়।
বিছা পোকা সাধারণত গাছের কান্ড রেখে পুরো পাতাগুলোকে খেয়ে ফেলে। বিছা পোকা খুবই ক্ষতিকর একটি পোকা এটি গাছের বিভিন্ন কান্ড ও পাতা খেয়ে গাছের বৃদ্ধিতে বাধা দেয়। এছাড়া বিছা পোকা আমাদের ত্বকেরও বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি করে।
বিছা পোকার শরীরের ওপরে যে লোম থাকে সেই লোম গুলো অতিরিক্ত বিষাক্ত হয়। সেই বিষাক্ত লোমগুলো আমাদের শরীর স্পর্শ করলে শরীরের চুলকানি, ফুসকুড়ি, লাল লাল ভাব এমনকি শরীলের ক্ষত হতে পারে। চলুন তাহলে বিছা পোকা তাড়ানোর উপায় সম্পর্কে জেনে নেই।
- প্রথমে খেয়াল রাখতে হবে আপনার বাগানটি যেন পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন এবং আগাছা মুক্ত হয়। কারণ অপরিষ্কার জায়গাতে বিছা পোকার বেশি বিস্তার লাভ করে।
- বিছা পোকা দমনের জন্য বাজারে বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক পাওয়া যায়। এই কীটনাশক গুলো নিয়ে এসে স্প্রে করুন।
- বিছা পোকা যেখানে বাসা বাধে সেখানে বেকিং সোডা পানিতে গুলে ছিটিয়ে দিন।
- বিছা পোকা গাছের কোন নির্দিষ্ট জায়গায় হলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিতে পারেন।
- নিম তেল বিছা পোকা দমনে খুবই কার্যকর। নিম তেল স্প্রে করে আপনি বিছা পোকা খুব সহজেই দমন করতে পারবেন।
- এছাড়া বিছা পোকা দমনের জন্য আপনি সাবান পানি স্প্রে করতে পারেন। এই পদ্ধতি ও বিছা পোকা দমনে উপকারী।
চ্যালা পোকা দূর করার উপায়
চ্যালা পোকা দূর করার উপায় সম্পর্কে এখন আমরা জানবো। চ্যালা পোকা একটি বিষাক্ত পোকা হিসেবে পরিচিত। তেলাপোকা কামড়ালে আমাদের জায়গাটা অনেক বেশি লাল ও ফুলে যায়। অনেক সময় চ্যালা পোকা কামড়ানোর ফলে আমাদের অতিরিক্ত জ্বর, এলার্জি হতে পারে। চ্যালা পোকা দেখলে আমাদের মধ্যে অনেকেরই ভয় হয়। কারণ পোকাটি দেখতে একটু ভয়ঙ্করও হয়ে থাকে।
চ্যালা পোকা বেশিরভাগ সময় বাড়ির বিভিন্ন জায়গায় কিংবা বাগানে দেখা যায়। চ্যানাপোকা অতিরিক্ত অপরিষ্কার ও আর্দ্র পরিবেশ পছন্দ করে।এ ছাড়া চ্যালা পোকা ঘরের বিভিন্ন ধরনের ফাটা জায়গায় বেশি বসবাস করে। তাই চ্যালা পোকা দূর করার জন্য আপনাকে প্রথমে বাড়ির পরিবেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও বাড়ির আশেপাশে ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করতে হবে।
বিশেষ করে নজর রাখতে হবে রান্নাঘর ও খাবারের জায়গা উপরে। কারণ চ্যালা পোকা অপরিষ্কার জায়গা ও যেখানে খাবারদাবার বেশি পড়ে থাকে সেখানে বংশবিস্তার করে থাকে। বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক কীটনাশক ব্যবহার করে আপনি চ্যালা পোকা দূর করতে পারেন কিন্তু ঘরোয়া ভাবে নিম পাতা ও হলুদ গুঁড়া নিয়মিত ব্যবহার করেও চ্যালা পোকা দূর করা যায়।
আপনি যদি নিম পাতা ও হলুদ গুঁড়া নিয়মিত বাড়ির ছাদে কিংবা রান্নাঘরে ব্যবহার করেন তাহলে আস্তে আস্তে চ্যালা পোকা দূর হয়ে যাবে। আর অতিরিক্ত পরিমাণে যদি চ্যালা পোকার উপদ্রব বেড়ে যায় তাহলে অবশ্যই চ্যালা পোকা দমনের জন্য ওষুধ ব্যবহার করতে পারেন।
ঝিঝি পোকা তাড়ানোর উপায়
ঝিঁঝি পোকা তাড়ানোর উপায় সম্পর্কে আমরা এখন জানব। সাধারণত গ্রীষ্মকালে ঝিঝি পোকা বেশি দেখা যায়। ঝিঝি পোকা আমাদের তেমন কোন ক্ষতি করে না তবে অনেক শব্দ করে ডাক দেয়। তবে ঝিঝিপোকা যদি একবার বাড়ির ভেতরে বংশবিস্তার করে তখন কিছুটা ক্ষতি হতে পারে। অতিরিক্ত পরিমাণে ঝিঝি পোকা বাড়িতে থাকলে বাড়ির দেওয়ালের ক্ষতি করে কাপড় নষ্ট করে এবং বিভিন্ন ধরনের কাগজ নষ্ট করে। চলুন তাহলে ঝিঝি পোকা তাড়ানোর উপায় সম্পর্কে জেনে আসি।
- ঝিঁঝিপোকা তাড়ানোর জন্য আপনি চিটাগুড় ব্যবহার করতে পারেন। ঘরের এক কোনাই চিটাগুড় মেশানো পানির বাটি রেখে দিন। দেখবেন ঝিঝি পোকা চিটাগুড়ের গন্ধে পানির বাটিতে এসে পড়েছে।
- একটি কাগজের উপরে কিছু আঠা দিয়ে যে স্থানে ঝিঁঝিঁ পোকার বেশি চলাফেরা সেখানে রেখে দিন। দেখবেন ঝিঁঝি পোকা কিছুক্ষণের ভেতরে কাগজে আটকে গেছে।
- বিভিন্ন ধরনের স্প্রে বাজার থেকে নিয়ে ঘরের ভেতরে স্প্রে করতে পারেন। এতে ঝিঝি পোকা অনেকটাই কমে আসবে।
- ঘরে বিভিন্ন ধরনের আবর্জনা জমতে দেওয়া যাবেনা। ঘর নিয়মিত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে কারণ ময়লা আবর্জনায় ঝিঝি পোকা বংশবিস্তার করে।
- ঘরের ভেতরে কম আলোযুক্ত লাইট ব্যবহার করা উচিত এতে ঝিঝি পোকার উপদ্রব কম হয়।
- ঘরের বিভিন্ন আসবাবপত্র এবং বিছানা ভ্যাকুয়াম ক্লিনার দিয়ে পরিষ্কার করে নেওয়া উচিত।
ঘর থেকে সাপ তাড়ানোর উপায়
ঘর থেকে সাপ তাড়ানোর উপায় সম্পর্কে আমরা প্রায় সবাই জানতে চাই কারণ সাপ খুবই বিষাক্ত একটি প্রাণী। বেশিভাগ সাপই বিষাক্ত হয়ে থাকে। সাপ দেখে ভয় করে না এমন মানুষের সংখ্যা খুবই কম। সাপ দেখে আমরা প্রায় ছোট থেকে বড় সকলেই ভয় পাই। তাই অবশ্যই বাড়ি কিংবা ঘর থেকে সাপ তাড়ানোর উপায় সম্পর্কে সকলের জেনে রাখা উচিত।
অনেক সময় বাড়ির আশেপাশ অপরিষ্কার থাকলে সাপ খুব সহজে বাড়িতে বাসা বাঁধে। শুধু বাড়ির ভেতরে নয় এমনকি আপনার শোবার ঘরেও সাপ বাসা বাঁধতে পারে। তাই অবশ্যই সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। বিশেষ করে বর্ষাকালের সাপের উৎপাত বেশি হয়। শহরাঞ্চলের চাইতে গ্রামাঞ্চলে সাপ বেশি দেখা যায়। তাহলে চলুন ঘর থেকে সাপ তাড়ানোর উপায় সম্পর্কে জেনে আসি।
- সাপ তাড়ানোর জন্য আপনি কার্বলিক এ্যাসিড ব্যবহার করতে পারেন। কার্বলিক এ্যাসিড ঘরে থাকলে সাপ ঘরে আসবে না।
- কার্বলিক এ্যাসিড যদি না থাকে বাড়িতে তাহলে আপনি লাল রংয়ের সাবান সাপ তাড়াতে ব্যবহার করতে পারেন কারণ লাল রংয়ের সাবানের মধ্যে রয়েছে কর্বনিল। ছোট ছোট টুকরা করে লাল সাবান কেটে নিয়ে বাড়ির চারিদিকে ছড়িয়ে দিন এতে সাপ ঘরের ভেতরে কিংবা বাড়িতে প্রবেশ করবে না।
- সালফারের গুড়ো বিষধর সাপের উপদ্রব কমাতে সাহায্য করে। বাড়ির যেসব জায়গায় সাপের আনাগোনা রয়েছে সেসব জায়গায় সালফারের গুঁড়ো ছিটিয়ে দিন। সালফারের গুড়ো সাপের গায়ে জ্বালাপোড়া সৃষ্টি করে ফলে একবার সাপের গায়ে সালফারের গুঁড়ো লেগে গেলে দ্বিতীয়বার আর সেখানে সাপ আসবে না।
- ন্যাপথিন এর গুঁড়ো সাপ তাড়ানোর জন্য ব্যবহার করতে পারেন। ন্যাপথিনের ঝাঁঝালো গন্ধ সাপ সহ্য করতে পারে না।
- সাপ থেকে মুক্তি পেতে আপনি ব্লিচিংপাউডার ব্যবহার করতে পারেন। ব্লিচিং পাউডার বাড়ির চারিপাশে দিয়ে রাখলে শুধু সাপ না অন্যান্য পোকামাকর ও বাড়িতে প্রবেশ করতে পারে না।
- এছাড়া রসুনের কোয়া ভালো করে থেঁতো করে সুস্বাদ তেল মিশিয়ে স্প্রে মেশিনে ভরে আপনি ঘরের চারিদিকে স্প্রে করতে পারেন। রসুনের ঝাঁঝালো গন্ধের সাপ ঘরে প্রবেশ করে না।
সর্বশেষে আমার মনে হয় এত কিছু করার কোন দরকারই নেই যদি আপনি আপনার বাড়ির আশপাশ যথেষ্ট পরিমাণে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখেন। বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে গাছপালা লাগানো উচিত এবং বাড়ির পাশে কোন পুকুর রাখা উচিত না এতে এমনিতেই সাপের উপদ্রব কম হয়। এই ব্যবস্থাগুলো নেয়ার পরও যদি সাপের উপদ্রব্ হয় তাহলে তো উপরের পদ্ধতি গুলো আছেই সেগুলো ব্যবহার করে আপনি খুব সহজেই আপনার ঘর থেকে সাপ দূর করতে পারবেন।
লেখকের শেষ কথা-গুনগুনি পোকা তাড়ানোর উপায়
আমি আশা করি গুনগুনি পোকা তাড়ানোর উপায় এবং লাইটের পোকা তাড়ানোর উপায় সম্পর্কে এতক্ষণে আপনি একটি সঠিক ধারণা পেয়ে গেছেন। আপনার বাড়িতে যদি উপরের এই বিষয়গুলো নিয়ে কোন সমস্যা সৃষ্টি হয় তাহলে আর্টিকেলটি পড়ার পরে আপনি সেই সমস্যা থেকে কিভাবে মুক্তি পেতে পারেন সে সম্পর্কে একটি ভালো ধারণা পেয়ে গেছেন এতক্ষণে।
আরো পড়ুনঃ দৈনিক কত লিটার পানি পান করা উচিত
আপনি যদি আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই বন্ধু-বান্ধবদের সাথে শেয়ার করুন। আর যদি আমাদের আর্টিকেলটি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাবেন আপনার মন্তব্যের অপেক্ষায় রইলাম।
আর এরকম আরো আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো দিয়ে রাখুন। কারণ আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে প্রতিনিয়ত এরকম আর্টিকেল প্রকাশ করে থাকি। এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
বিডি অনলাইন আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url